★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা - Ja-al-haq Discussions on

ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা

ফতোয়া প্রদানে সতর্কতা অবলম্বনঃ ইসলামে ফেকাহ শাস্ত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের দৈনন্দিন জীবনের অধিকাংশ আমল ফেকাহশাস্ত্রের সাথে সম্পৃক্ত। মানুষের জন্ম থেকে কবরে কাফন সহ যাবতীয় আমল ফিকহ শাস্ত্রের উপর নির্ভর করে। ঈবাদত ছাড়াও লেন-দেন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি এক কথায় একজন মুসলমানের জীবনের সর্বক্ষেত্রে ফিকহশাস্ত্রের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। ফিকহ শাস্ত্রের বিষয়গুলো এমন যে, এ ব্যাপারে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন ব্যতীত কোন মতামত দেয়া নিতান্তই বোকামী। আর যাঁরা এ বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য অর্জন করেছেন, তাঁদেরক্ষেত্রেও দেখা যায়, এ বিষয়ে কোন মতামত দিতে গেলে খুবই সতর্কতা অবলম্বন করেছেন। রাসূল কারিম সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ﻣﻦ ﻗﺎﻝ ﻋﻠﻲ ﻣﺎ ﻟﻢ ﺃﻗﻞ ﻓﻠﻴﺘﺒﻮﺃ ﺑﻴﺘﺎً ﻓﻲ ﺟﻬﻨﻢ ، ﻭﻣﻦ ﺃُﻓﺘﻰ ﺑﻐﻴﺮ ﻋﻠﻢ ﻛﺎﻥ ﺇﺛﻤﻪ ﻋﻠﻰ ﻣﻦ ﺃﻓﺘﺎﻩ ، ﻭﻣﻦ ﺃﺷﺎﺭ ﻋﻠﻰ ﺃﺧﻴﻪ ﺑﺄﻣﺮ ﻳﻌﻠﻢ ﺍﻟﺮﺷﺪ ﻓﻲ ﻏﻴﺮﻩ ﻓﻘﺪ ﺧﺎﻧﻪ “যে ব্যক্তি এমন কথা বলল, যা আমি বলিনি, তবে সে জাহান্নামে নিজের জন্য একটি ঘর তৈরি করল। আর যাকে ইলম ব্যতীত ফতোয়া প্রদান করা হল, এর গোনাহ ফতোয়া প্রদান কারীর উপর বর্তাবে। আর যে ব্যক্তি তার ভাইকে এমন বিষয়ে পরামর্শ দিল যার বিপরীত বিষয়ের মাঝে সে কল্যাণ দেখছে, তবে সে তার সাথে প্রতারণা করল” গ্রন্থ সূত্র : _ মুসনাদে আহমাদ, ১৪/৩৮৪পৃ., হাদিস ৮৭৭৬; _ আবু দাউদ, আস সূনান, ৩/৩২১ পৃ., হাদিস ৩৬৫৭, _ ইমাম ইবনুল বার, জামিউল বায়ানুল ইলমি ওয়া ফাদ্বলিহি, ২/৮৬০পৃ., হাদিস ১৬২৫। _ বাইহাকী শরীফ। হাযরাত আহমাদ ইবনে ইউসূফ রুবায়ী সান’আনি রাহমাতুল্লাহি আলাইহ. বলেন, ‘হাদিসটি আবু দাউদ ও আহমাদ ইবনে হাম্বাল সংকলণ করেছেন, আর এ সনদের সমস্ত রাবী সিকাহ্ বা বিশ্বস্ত’। গ্রন্থ সূত্র : _ সান’আনি, ফাতহুল গাফ্ফার, ৪/২০৫৬পৃ., হাদিস ৫৯৮৪। আলবানী সূনানে আবু দাউদের তাহকিকে সনদটি হাসান বলে অভিহিত করেছেন। গ্রন্থ সূত্র : _ আলবানি, সহিহুল সূনানে আবু দাউদ, হাদিস ৩৬৫৭। আল্লামা ইবনূল কাইয়্যূম আরেকটি হাদিস সংকলণ করেছেন, “রসূলে কারিম সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ইলম ব্যতীত মানুষকে ফাতওয়া দিল তার উপর আসমান ও যমীনের সমস্ত ফিরিশ্তাদের লা’নাত বা অভিশাপ”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ৪/১৬৭পৃ.। বিখ্যাত তাবেয়ী ইবনে আবী লাইলা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন, ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻟﻴﻠﻰ ﻗﺎﻝ : ﺃﺩﺭﻛﺖ ﻓﻲ ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﺴﺠﺪ ‏( ﻣﺴﺠﺪ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ‏) ﻣﺎﺋﺔ ﻭﻋﺸﺮﻳﻦ ﻣﻦ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻣﺎ ﻣﻨﻬﻢ ﺍﺣﺪ ﻳﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺣﺪﻳﺚ ﺃﻭ ﻓﺘﻴﺎ ﺇﻻّ ﻭﺩّ ﺍﻥ ﺃﺧﺎﻩ ﻛﻔﺎﻩ ﺫﻟﻚ . ﻭﻓﻲ ﻟﻔﻆ ﺁﺧﺮ : ﻛﺎﻧﺖ ﺍﻟﻤﺴﺎﻟﺔ ﺗﻌﺮﺽ ﻋﻠﻰ ﺃﺣﺪﻫﻢ ﻓﻴﺮﺩﻫﺎ ﺇﻟﻰ ﺍﻵﺧﺮ، ﻭﻳﺮﺩﻫﺎ ﺍﻵﺧﺮ ﺣﺘﻰ ﺗﺮﺟﻊ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺬﻱ ﺳﺄﻝ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻭﻝ ﻣﺮﺓ . “তাবেয়ী আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি এই মসজিদে (মসজিদে নববীতে) একশ বিশ (১২০) জন সাহাবীর সাথে সাক্ষাৎ করেছি। তাদের কাউকে যখন কোন হাদীস বা ফতোয়া জিজ্ঞেস করা হত, প্রত্যেকেই পছন্দ করতেন, তাঁর আরেকভাই এর উত্তর প্রদানে যথেষ্ঠ”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম ইবনে আসাকির, তারিখে দামেস্ক, ৩৬/৮৬পৃ.। _ ইমাম ইবনে সা’দ, আত তাবাকাতুল ক্বুবরা, ৬/১৬৬পৃ.। তিনি অন্য বর্ণনায় ইমাম ইবনে সা’দ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি. (ওফাত ২০৭হি.) বর্ণনা করেন; সেখানে তিনিও অন্য বাক্যে তাই সংকলণ করেছেন। এ তাবিয়ী আব্দুর রহমান ইবনে আবী লাইলা রহ. থেকে আরও একাধিক সূত্রের বর্ণনা রয়েছে। গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম ইবনে সা’দ, আত তাবাকাতুল ক্বুবরা, ৬/১৬৬-১৬৭পৃ.। তিনি অন্য বর্ণনায় বলেছেন, “তাবিয়ী ইবনে লায়লা রহ. বলেন, আমি ১২০ জন আনসারী সাহাবীদের সাক্ষাত লাভ করেছি, তাঁদের নিকট যখন মাসআলা পেশ করা হত, তখন সে আরেকজনের কাছে সেটা পাঠাত, অতঃপর তিনি আরেকজনকে জিজ্ঞেস করতে বলতেন, এভাবে অবশেষে প্রথমে যার নিকট প্রশ্ন করা হয়েছিল, তার নিকট ফিরে আসত”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ৪/১৬৮পৃ.। “হযরত আবু বকর রা. এবং হযরত উমর রা. কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে অন্যান্য সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করতেন এবং এ সম্পর্কে রাসূলে কারিম সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এর পক্ষ থেকে কোন নির্দেশনা আছে কি না সেগুলো জিজ্ঞেস করতেন”। গ্রন্থ সূত্র : _ আল-ইনসাফ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি), পৃষ্ঠা-১৮। [দুনিয়া বিখ্যাত ফকিহ্ তাবিয়ী ইবন আবি লায়লা রহ. সম্পর্কে : তিনি কত বড় ফকিহ্ ছিলেন সে সম্পর্কে ইমাম যাহাবী রহ. তাঁর বিখ্যাত কিতাব ‘তারিখুল ইসলাম’-এ উল্লেখ করেন, “ইমাম আহমাদ ইবন ইউনুস রহ. বলেন, তাবিয়ী আব্দুর রহমান ইবন আবী লাইলা রহ. দুনিয়ার মধ্যে সবচে’ বড় ফকিহ্ ছিলেন”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম যাহাবী রহ., তারিখুল ইসলাম, ৩/৯৬৭পৃ.।] হযরত উমর (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) কোন সমস্যার মুখোমুখি হলে, বদরী সাহাবীদেরকে একত্র করে তাদের সাথে পরামর্শ করে সমাধান দিতেন। তাই বলে কতিপয় অপরিণামদর্শী ব্যক্তিদের মত সকল ধরনের প্রশ্ন আসলে কোন চিন্তা-ভাবনা এবং সময় না নিয়েই ফাতওয়া প্রদান করতেন না। যেমনটি জাকির নায়কের ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে। লোকটি প্রথম প্রথম তাকে ফিকহি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলতেন যে, এগুলো আমার আয়ত্তের বাইরে। যখন তিনি প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেলেন তখন সিরত্বল মুস্তাকিমে অধিষ্ঠিত ‘আহলুস সূন্নাহ’-র বিপরীতে নিজের দল তথাকথিত আহলে হাদিস শব্দধারীদেরকে বেগবান করার জন্য সকল বিষয়ে ফাতওয়া দিতে শুরু করলেন, আর পথভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত হলেন। মুফাস্সিরকূল শিরোমণী বিখ্যাত মুজতাহিদ ফকিহ্ সাহাবী হাযরাত আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস রা. বলেছেন, ﺇﻥ ﻛﻞ ﻣﻦ ﺃﻓﺘﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻓﻲ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻳﺴﺄﻟﻮﻧﻪ ﻋﻨﻪ ﻟﻤﺠﻨﻮﻥ” “যে ব্যক্তি মানুষের সকল প্রশ্নের উত্তর দেয় এবং সকল বিষয়ে ফতোয়া প্রদান করে সে অবশ্যই পাগল”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ১/২৮পৃ., এবং ২/১২৭পৃ.। এটি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) থেকেও বর্ণিত আছে। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম বলেছেন, ﺍﻟﺠﺮﺃﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻔﺘﻴﺎ ﺗﻜﻮﻥ ﻣﻦ ﻗﻠﺔ ﺍﻟﻌﻠﻢ ﻭﻣﻦ ﻏﺰﺍﺭﺗﻪ ﻭﺳﻌﺘﻪ ﻓﺈﺫﺍ ﻗﻞ ﻋﻠﻤﻪ ﺃﻓﺘﻰ ﻋﻦ ﻛﻞ ﻣﺎ ﻳﺴﺄﻝ ﻋﻨﻪ ﺑﻐﻴﺮ ﻋﻠﻢ “ফতোয়া প্রদান করতে উদ্যত হওয়াটা কম ইলমের কারণেও হতে পারে আবার অধিক ইলমের কারণেও হতে পারে। অতএব যখন কারও ইলম কম থাকে, তখন তাকে যে বিষয়েই প্রশ্ন করা হয়, না জেনে সে সকল বিষয়ে সমাধান দেয়”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ১/২৮পৃ.। তাবেয়ী মুহাম্মাদ বিন সিরিন (رحمة الله عليه) বলেন- ﻷﻥ ﻳﻤﻮﺕ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺟﺎﻫﻼً ﺧﻴﺮ ﻟﻪ ﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﻘﻮﻝ ﺑﻼ ﻋﻠﻢ “অজ্ঞতাবশতঃ কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য মূর্খ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়”। গ্রন্থ সূত্র : _ আদাবুশ শরইয়্যাহ, আল্লামা ইবনু মুফলিহ্ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি), খ.২, পৃষ্ঠা-৬৫। এ বিষয়ে তাঁর আরেকটি বক্তব্য রয়েছে, তিনি বলেন, “কোন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে সে না জেনে অজ্ঞতাবশতঃ কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য মূর্খ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করা শ্রেয়; অথবা তার বলে দেয়া উচিৎ হবে আমি এ বিষয়ে জানি না”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইবনূল কাইয়্যূম আয যাওজী, ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ২/১২৭পৃ.। বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা ইবনে ওহাব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ﻭﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻭﻫﺐ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﻣﺎﻟﻜﺎً ﻳﻘﻮﻝ : ﻭﺫﻛﺮ ﻗﻮﻝ ﺍﻟﻘﺎﺳﻢ : ﻷﻥ ﻳﻌﻴﺶ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﺟﺎﻫﻼً ﺧﻴﺮ ﻟﻪ ﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﻘﻮﻝ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﺎﻻ ﻳﻌﻠﻢ ، ﻓﻘﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ : ﻫﺬﺍ ﻛﻼﻡ ﺛﻘﻴﻞ ﺛﻢ ﺫﻛﺮ ﻣﺎﻟﻚ ﺃﺑﺎ ﺑﻜﺮ ﺍﻟﺼﺪﻳﻖ ﻭﻣﺎ ﺧﺼﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ ﻣﻦ ﺍﻟﻔﻀﻞ ﻭﺁﺗﺎﻩ ﺇﻳﺎﻩ ﻗﺎﻝ ﻣﺎﻟﻚ : ﻳﻘﻮﻝ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺰﻣﺎﻥ : ﻻ ﻳﺪﺭﻱ ﻭﻻ ﻳﻘﻮﻝ ﻫﺬﺍ ﻻ ﺃﺩﺭﻱ ﻗﺎﻝ : ﻭﺳﻤﻌﺖ ﻣﺎﻟﻚ ﺑﻦ ﺃﻧﺲ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻳﻘﻮﻝ : ﻣﻦ ﻓﻘﻪ ﺍﻟﻌﺎﻟﻢ ﺃﻥ ﻳﻘﻮﻝ ﻻ ﺃﻋﻠﻢ ﻓﺈﻧﻪ ﻋﺴﻰ ﺃﻥ ﻳﻬﻴﺄ ﻟﻪ ﺍﻟﺨﻴﺮ “অর্থাৎ আমি ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) কে বলতে শুনেছি, তিনি বিখ্যাত তাবিয়ী ও আওলাদে রাসূল (সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) ইমাম কাসেম (رحمة الله عليه) এর উক্তি উল্লেখ করেছেন- “আল্লাহর ব্যাপারে অজ্ঞতাবশতঃ কোন কথা বলার চেয়ে কোন ব্যক্তির জন্য অজ্ঞ-মূর্খ থাকাটা অধিক শ্রেয়; অথবা তার বলা উচিৎ হবে আমি এ বুষয়ে জানি না।” গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম ইবন আসাকির (ওফাত-৫১৭হি.), তারিখে দামেস্ক, ৪৯/১৭৬পৃ., দারুল ফিকর ইলমিয়্যাহ্, বৈরুত লেবানন, প্রকাশ ১৪১৫ হি.। _ ইমাম ইবন আবি ইয়ালা (ওফাত-৫২৬হি., তাবাকাতুল হানাবালাত, ১/৭০পৃ., দারুল মা’আরিফ, বৈরুত লেবানন। উপরোক্ত কথা উল্লেখ করে ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) বলেন, এটি অনেক ভারী কথা। অতঃপর তিনি হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাদ্বীয়াল্লাহু আনহু) এর ফযিলত ও বৈশিষ্ট্য এবং বিশেষভাবে তাঁকে যে ইলম ও মর্যাদা দান করা হয়েছে, সেটি আলোচনা করলেন। অতঃপর বললেন, “হযরত আবু বকর সিদ্দিক(رضى الله عنه) এর সময়ে তিনি বলতেন যে, “আমি জানি না”। কিন্তু বর্তমানে এরা কেউ বলে না যে, আমি জানি না।” ইবনে ওহাব (رحمة الله عليه) বলেন, আমি ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) কে বলতে শুনেছি, “বুদ্ধিমান আলেমের কর্তব্য হল সে যেন বলে দেয় যে, “আমি জানি না”। কেননা এর দ্বারা হয়ত তার জন্য উত্তম কোন বিষয়ের ব্যবস্থা করা হবে”। গ্রন্থ সূত্র : _ ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম, ২/১২৮পৃ.। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (رحمة الله عليه) বলেন- ﻣﻦ ﺃﻓﺘﻰ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﺄﻫﻞ ﻟﻠﻔﺘﻮﻯ ﻓﻬﻮ ﺁﺛﻢ ﻋﺎﺹ ﻭﻣﻦ ﺃﻗﺮﻩ ﻣﻦ ﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﻋﻠﻰ ﺫﻟﻚ ﻓﻬﻮ ﺁﺛﻢ ﺃﻳﻀﺎً . “যে ব্যক্তি মানুষকে ফতোয়া দেয়ার যোগ্য নায় হয়েও ফতোয়া প্রদান করল, সে গোনাহগার ও আল্লাহর অবাধ্য। এবং শাসকদের যারা তাকে তার এ কর্মের সমর্থন করবে তারাও গোনাহগার হবে”। গ্রন্থ সূত্র : _ ই’লামুল মুয়াক্বিয়ীন, আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা-১৬৬। হযরত আবু ইসহাক (رحمة الله عليه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “ ﻛﻨﺖ ﺃﺭﻯ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺰﻣﺎﻥ ﻭﺇﻧﻪ ﻟﻴﺪﺧﻞ ﻳﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻲﺀ ﻓﻴﺪﻓﻌﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻦ ﻣﺠﻠﺲ ﺇﻟﻰ ﻣﺠﻠﺲ ﺣﺘﻰ ﻳﺪﻓﻊ ﺇﻟﻰ ﻣﺠﻠﺲ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﻤﺴﻴﺐ ﻛﺮﺍﻫﻴﺔ ﻟﻠﻔﺘﻴﺎ ” ““আমি সেই যুগে দেখেছি, যখন এক ব্যক্

Comments

  • হযরত আবু ইসহাক (رحمة الله عليه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “ ﻛﻨﺖ ﺃﺭﻯ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺍﻟﺰﻣﺎﻥ ﻭﺇﻧﻪ ﻟﻴﺪﺧﻞ ﻳﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻲﺀ ﻓﻴﺪﻓﻌﻪ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﻋﻦ ﻣﺠﻠﺲ ﺇﻟﻰ ﻣﺠﻠﺲ ﺣﺘﻰ ﻳﺪﻓﻊ ﺇﻟﻰ ﻣﺠﻠﺲ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺍﻟﻤﺴﻴﺐ ﻛﺮﺍﻫﻴﺔ ﻟﻠﻔﺘﻴﺎ ” ““আমি সেই যুগে দেখেছি, যখন এক ব্যক্তি কোন একটা বিষয়ে কাউকে জিজ্ঞেস করতো, তখন একজন আরেকজনের নিকট প্রেরণ করত। অবশেষে লোকটি সাইদ ইবনুল মুসাইয়্যিব (رحمة الله عليه) এর মজলিশে এসে উপনীত হতো। ফতোয়া প্রদানে তাদের অপছন্দ থাকায় মানুষ তখন এটা করত”। গ্রন্থ সূত্র : _ ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইবনুল কাইয়্যুম, ১/২৮পৃ.। হযরত ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, ﻭﻋﻦ ﻣﺎﻟﻚ : ﻗﺎﻝ ﺃﺧﺒﺮﻧﻲ ﺭﺟﻞ ﺃﻧﻪ ﺩﺧﻞ ﻋﻠﻰ ﺭﺑﻴﻌﺔ ﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺮﺣﻤﻦ ﻓﻮﺟﺪﻩ ﻳﺒﻜﻲ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ : ﻣﺎ ﻳﺒﻜﻴﻚ ﻭﺍﺭﺗﺎﻉ ﻟﺒﻜﺎﺋﻪ ﻓﻘﺎﻝ ﻟﻪ : ﺃﻣﺼﻴﺒﺔ ﺩﺧﻠﺖ ﻋﻠﻴﻚ ؟ ﻓﻘﺎﻝ : ﻻ ﻭﻟﻜﻦ ﺃﺳﺘﻔﺘﻲ ﻣﻦ ﻻ ﻋﻠﻢ ﻟﻪ ، ﻭﻇﻬﺮ ﻓﻲ ﺍﻹﺳﻼﻡ ﺃﻣﺮ ﻋﻈﻴﻢ ﻗﺎﻝ ﺭﺑﻴﻌﺔ : ﻭﺑﻌﺾ ﻣﻦ ﻳﻔﺘﻲ ﻫﻬﻨﺎ ﺃﺣﻖ ﺑﺎﻟﺴﺠﻦ ﻣﻦ ﺍﻟﺴﺮﺍﻕ “আমাকে জনৈক ব্যক্তি সংবাদ দিয়েছে যে, সে হযরত রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান (رحمة الله عليه) এর নিকট গিয়ে দেখল যে, তিনি ক্রন্দন করছেন। সে তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, কি কারণে ক্রন্দন করছেন? আপনার উপর কি কোন মুসীবত আপতিত হয়েছে? রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান উত্তর দিলেন, আমি অযোগ্য লোকের নিকট ফতোয়া জিজ্ঞেস করেছি। “ইসলামের মাঝে মারাত্মক একটি জিনিসের আবির্ভাব হয়েছে। তিনি বলেন- বর্তমানে যারা ফতোয়া দেয়, তাদের কেউ কেউ চোরদের চেয়েও বেশি জেলে আবদ্ধ থাকার যোগ্য”। গ্রন্থ সূত্র : _ ই’লামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইবনুল কাইয়্যুম, ১/১৫৯পৃ.। _ আহমাদ বিন হামদান হারানী, সিফাতুল ফাতওয়া, পৃ. ১১। রবিয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান মদীনার বিখ্যাত ফকীহ ছিলেন। এবং হাফেযে হাদীস ছিলেন। তাঁর নিকট থেকে ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) ফিকহ শিখেছেন। তিনি ১৩৬ হি: সনে মৃত্যু বরণ করেছেন। ইসলামের দ্বিতীয় শতকে যদি তিনি একথা বলে থাকেন, তবে আমাদের সময়ের জাকির নায়েকের মত অপরিণামদর্শী অজ্ঞ-মূর্খদের যুগে কী বলা হবে? এপ্রসঙ্গে আহমাদ বিন হামদান হারানী رحمة الله عليه. [মৃত্যু-৬৯৫ হিঃ] লিখেছেন- ﻓﻜﻴﻒ ﻟﻮ ﺭﺃﻯ ﺭﺑﻴﻌﺔ ﺯﻣﺎﻧﻨﺎ ﻫﺬﺍ ﻭﺇﻗﺪﺍﻡ ﻣﻦ ﻻ ﻋﻠﻢ ﻋﻨﺪﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻔﺘﻴﺎ ﻣﻊ ﻗﻠﺔ ﺧﺒﺮﺗﻪ ﻭﺳﻮﺀ ﺳﻴﺮﺗﻪ ﻭﺷﺆﻡ ﺳﺮﻳﺮﺗﻪ ﻭﺇﻧﻤﺎ ﻗﺼﺪﻩ ﺍﻟﺴﻤﻌﺔ ﻭﺍﻟﺮﻳﺎﺀ ﻭﻣﻤﺎﺛﻠﺔ ﺍﻟﻔﻀﻼﺀ ﻭﺍﻟﻨﺒﻼﺀ ﻭﺍﻟﻤﺸﻬﻮﺭﻳﻦ ﺍﻟﻤﺴﺘﻮﺭﻳﻦ ﻭﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺮﺍﺳﺨﻴﻦ ﻭﺍﻟﻤﺘﺒﺤﺮﻳﻦ ﺍﻟﺴﺎﺑﻘﻴﻦ ﻭﻣﻊ ﻫﺬﺍ ﻓﻬﻢ ﻳﻨﻬﻮﻥ ﻓﻼ ﻳﻨﺘﻬﻮﻥ ﻭﻳﻨﺒﻬﻮﻥ ﻓﻼ ﻳﻨﺘﺒﻬﻮﻥ ﻗﺪ ﺃﻣﻠﻲ ﻟﻬﻢ ﺑﺎﻧﻌﻜﺎﻑ ﺍﻟﺠﻬﺎﻝ ﻋﻠﻴﻬﻢ ﻭﺗﺮﻛﻮﺍ ﻣﺎ ﻟﻬﻢ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﻭﻣﺎ ﻋﻠﻴﻬﻢ ، ﻓﻤﻦ ﺃﻗﺪﻡ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﻟﻴﺲ ﻟﻪ ﺃﻫﻼً ﻣﻦ ﻓﺘﻴﺎ ﺃﻭ ﻗﻀﺎﺀ ﺃﻭ ﺗﺪﺭﻳﺲ ﺃﺛﻢ ، ﻓﺈﻥ ﺃﻛﺜﺮ ﻣﻨﻪ ﻭﺃﺻﺮ ﻭﺍﺳﺘﻤﺮ ﻓﺴﻖ ﻭﻟﻢ ﻳﺤﻞ ﻗﺒﻮﻝ ﻗﻮﻟﻪ ﻭﻻ ﻓﺘﻴﺎﻩ ﻭﻻ ﻗﻀﺎﺅﻩ ﻫﺬﺍ ﺣﻜﻢ ﺩﻳﻦ ﺍﻹﺳﻼﻡ ، “যদি রবীয়া ইবনে আবু আব্দুর রহমান আমাদের এ সময়টি দেখতেন? তিনি যদি বর্তমান সময়ের অজ্ঞ লোকদের ফতোয়া প্রদানের অবস্থা প্রত্যক্ষ করতেন? নিজেদের অযোগ্যতা-অনভিজ্ঞতা, নিকৃষ্ট চারিত্রিক অবস্থা, অভ্যন্তরীণ কলুষতা, লৌকিকতা ও প্রশংসা-প্রিয়তা এবং পূর্ববর্তী গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কেরামের পথ থেকে বিচ্যুত থাকা সত্ত্বেও তাদের নিকট অজ্ঞ লোকদের ভিড় তাদেরকে জরাগ্রস্ত করেছে, ফলে তারা তাদের গ্রহণীয়-বর্জণীয় সকল বিষয় পরিত্যাগ করেছে; অথচ তাদেরকে নিষেধ করা সত্ত্বেও তারা নিবৃত্ত হয় না, তাদেরকে সতর্ক করা সত্ত্বেও তারা সতর্ক হয় না। সুতরাং কেউ ফতোয়া, বিচার কিংবা পাঠদানের যোগ্য না হয়েও যদি সে কাজে অগ্রসর হয়, তবে সে গোনাহগার হবে। এধরণের বিষয় যদি তার নিকট থেকে বারংবার প্রকাশ পেতে থাকে অথবা সে যদি এর উপর অটল থাকে, তবে সে ফাসেক হয়ে যাবে। এধরণের ব্যক্তির কোন কথা, ফতোয়া এবং কোন ফয়সালা গ্রহণ করা জায়েয নয়। এটি ইসলামের শাশ্বত বিধান।” গ্রন্থ সূত্র : _ আহমাদ বিন হামদান হারানী রহ, সিফাতুল ফাতাওয়া, পৃষ্ঠা-১১-১২। আহমাদ ইবনে হামদান হারানী رحمة الله عليه. মৃত্যুবরণ করেছেন-৬৯৫ হি: সনে। অর্থাৎ এখন থেকে সাত শ’ বছর পূর্বে তিনি একথাগুলো বলেছেন। সুতরাং বর্তমান যুগের যে কী করুণ অবস্থা তা সহজেই অনুমেয়। তাবেয়ী মুহাম্মাদ ইবনে সিরিন (رحمة الله عليه) বলেন, “ ﻗﺎﻝ ﺣﺬﻳﻔﺔ : ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻔﺘﻲ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺃﺣﺪ ﺛﻼﺛﺔ ﺭﺟﻞ ﻳﻌﻠﻢ ﻧﺎﺳﺦ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﻭﻣﻨﺴﻮﺧﻪ ﻭﺃﻣﻴﺮ ﻻ ﻳﺠﺪ ﺑﺪﺍ ﻭﺃﺣﻤﻖ ﻣﺘﻜﻠﻒ ” ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﺳﻴﺮﻳﻦ : ﻓﺄﻧﺎ ﻟﺴﺖ ﺃﺣﺪ ﻫﺬﻳﻦ ﻭﺃﺭﺟﻮ ﺃﻥ ﻻ ﺃﻛﻮﻥ ﺃﺣﻤﻖ ﻣﺘﻜﻠﻔﺎ ”. বিখ্যাত সাহাবী হযরত হুযাইফা (رضى الله عنه) বলেন, মানুষকে ফতোয়া প্রদান করে তিন ব্যক্তির কোন এক ব্যক্তি- ১. কুরআনের নাসেখ-মানসুখ সম্পর্কে অবগত ব্যক্তি। ২. ফতোয়া প্রদানে বাধ্য আমীর বা শাসক। ৩. অথবা নিরেট মূর্খ লোক। মুহাম্মদ ইবনে সিরিন (رحمة الله عليه) বলেন, আমি প্রথম দু’শ্রেণীর অন্তর্ভূক্ত নই। সুতরাং আমি তৃতীয় ব্যক্তি হতে চাই না। গ্রন্থ সূত্র : _ ইলামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইমাম ইবনূল কাইয়্যূম, ১/২৮পৃ.। পূর্ববর্তী বুযুর্গদের স্বভাব ছিল, যখন তাদেরকে কোন ফতোয়া জিজ্ঞেস করা হতো, তারা যদি এর সুস্পষ্ট উত্তর জানতেন, তখন তা বলে দিতেন। কিন্তু যদি এ বিষয়ে কোন উত্তর জানা না থাকত, সাথে সাথে বলে দিতেন, আমি জানি না। আর যদি একই প্রশ্নের বিভিন্ন উত্তরের সম্ভাবনা থাকত, তখন তারা বলতেন, এটি আমার নিকট পছন্দনীয়। আমার নিকট এটি ভাল মনে হয়। যেমন ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি ফতোয়া প্রদান করলে অনেক সময় বলতেন, ﺇﻥ ﻧﻈﻦُّ ﺇﻻَّ ﻇﻨَّﺎً ﻭﻣﺎ ﻧﺤﻦ ﺑﻤﺴﺘﻴﻘﻨﻴﻦ “আমি শুধু ধারণাই রাখি, এ ব্যাপারে সুনিশ্চিত নই”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইলামুল মুয়াক্কীয়ীন, ইমাম ইবনূল কাইয়্যূম, ১/৩৫পৃ.। হযরত আলী (رضى الله عنه) বলেন, ﻭﺍﺑﺮﺩﻫﺎ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﺒﺪ ﺇﺫﺍ ﺳﺌﻞ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﻋﻤَّﺎ ﻻ ﻳﻌﻠﻢ ، ﺃﻥ ﻳﻘﻮﻝ : ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻋﻠﻢ ‏[ ﺗﻌﻈﻴﻢ ﺍﻟﻔﺘﻴﺎ ﻻﺑﻦ ﺍﻟﺠﻮﺯﻱ /৮১ “আমার নিকট অধিক প্রশান্তিকর হল, তোমাদের নিকট কেউ যদি কোন প্রশ্ন করে, আর তোমরা সে সম্পর্কে না জেনে থাকো, তবে বলে দিবে, “আল্লাহই ভাল জানেন”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম ইবন আয যওজী, তা’যিমুল ফাতওয়া, ১/৮৩পৃ., হাদিস ২৩। প্রখ্যাত তাবিয়ী ও আওলাদে রাসূল (সল্লাল্লহু ‘আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম) ইমাম ইবনে কাসেম রহ. বলেন, ইমাম মালেক (رحمة الله عليه)-কে বলতে শুনেছি, ইমাম মালেক রহ. বলেন, ﺇﻧﻲ ﻷﻓﻜﺮ ﻓﻲ ﻣﺴﺄﻟﺔ ﻣﻨﺬ ﺑﻀﻊ ﻋﺸﺮﺓ ﺳﻨﺔ ، ﻓﻤﺎ ﺍﺗَّﻔﻖ ﻟﻲ ﻓﻴﻬﺎ ﺭﺃﻱ ﺇﻟﻰ ﺍﻵﻥ “আমি প্রায় দশ বছর যাবৎ একটি মাসআলা নিয়ে চিন্তা করছি, এখনও পর্যন্ত উক্ত মাসআলায় সমাধানে আসতে পারিনি”। গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম কাযি আয়াজ রহ., তারতিবুল মাদারেক, ১/১৭৮পৃ.। তিনি আরও বলেন, ﺭﺑﻤﺎ ﻭﺭﺩﺕ ﻋﻠﻲ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻓﺄﻓﻜﺮ ﻓﻴﻬﺎ ﻟﻴﺎﻟﻲ “অনেক সময় আমার নিকট মাসআলা পেশ করা হয়, আমি রাতের পর রাত সেগুলো নিয়ে গবেষণা করি।” গ্রন্থ সূত্র : _ ইমাম কাযি আয়াজ রহ., তারতিবুল মাদারেক, ১/১৭৮পৃ.। এই হল, আমাদের পূর্ববর্তীদের অবস্থা। এটিকে বর্তমান অবস্থার সাথে একটু তুলনা করুন। টি.ভি, রেডিও, পত্র-পত্রিকা এবং বিভিন্ন টকশোতে অবাধে ফতোয়ার ছড়াছড়ি। প্রত্যেকের নিজের মত মতো ফতোয়া দিচ্ছে। যার যা মনে চাচ্ছে, শরীয়তের বিষয়ে অবলীলায় তা বলে দিচ্ছে। শরীয়ত যেন লা-ওয়ারিস সম্পদ! আল্লামা ইবনে আবিদীন শামী (رحمة الله عليه) উত্তম কথা বলেছেন- ﻻ ﺗَﺤْﺴَﺐِ ﺍﻟﻔِﻘﻪ ﺗَﻤْﺮﺍً ﺃﻧْﺖَ ﺁﻛِﻠُﻪ *** ﻟَﻦْ ﺗَﺒْﻠُﻎِ ﺍﻟﻔِﻘْﻪَ ﺣَﺘَّﻰ ﺗَﻠْﻌَﻖَ ﺍﻟﺼَﺒْﺮَﺍ “ফিকহ শাস্ত্রকে তুমি একটি খেজুর মনে করো না যে, তা মুখে পুরে খেয়ে ফেলবে। তুমি কখনও ফিকহ অর্জন করতে পারবে না, যতক্ষণ না তুমি ধৈর্য্য ধারণ ও অধ্যবসায় গ্রহণ করবে।” তিনি বলেছেন- ﺇﺫ ﻟﻮ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﻔﻘﻪ ﻳﺤﺼﻞ ﺑﻤﺠﺮﺩ ﺍﻟﻘﺪﺭﺓ ﻋﻠﻰ ﻣﺮﺍﺟﻌﺔ ﺍﻟﻤﺴﺄﻟﺔ ﻣﻦ ﻣﻈﺎﻧﻬﺎ ﻟﻜﺎﻥ ﺃﺳﻬﻞ ﺷﻲﺀ ﻭﻟﻤﺎ ﺍﺣﺘﺎﺝ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺘﻔﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺃﺳﺘﺎﺫ ﻣﺎﻫﺮ ﻭﻓﻜﺮ ﺛﺎﻗﺐ ﺑﺎﻫﺮ . ﻟَﻮ ﻛَﺎﻥَ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟﻌِﻠﻢُ ﻳُﺪﺭﻙُ ﺑﺎﻟﻤُﻨﻰ ﻣَﺎ ﻛُﻨْﺖَ ﺗُﺒﺼِﺮُ ﻓﻲ ﺍﻟﺒَﺮِﻳِّﺔِ ﺟَﺎﻫِﻼ “কেননা কিতাব দেখে মাসআলা প্রদানের যোগ্যতার নাম যদি ফিকহ হত, তবে এটি সর্বাধিক সহজ বিষয় হত এবং এর জন্য কোন দক্ষ, অভিজ্ঞ এবং গভীর পাণ্ডিত্যের অধিকারী উস্তাদের সংস্পর্শের প্রয়োজন হত না।” “এই ইলম যদি এমনিতেই অর্জিত হত, তবে তুমি পৃথিবীতে কোন অজ্ঞ লোক দেখতে পেতে না।” হযরত উকবা ইবনে মুসলিম (رحمة الله عليه) বলেন- ﻭﻋﻦ ﻋﻘﺒﺔ ﺑﻦ ﻣﺴﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﺻﺤﺒﺖ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺃﺭﺑﻌﺔ ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ﺷﻬﺮﺍً ﻓﻜﺜﻴﺮﺍً ﻣﺎ ﻛﺎﻥ ﻳﺴﺄﻝ ﻓﻴﻘﻮﻝ : ﻻ ﺃﺩﺭﻱ ، ﺛﻢ ﻳﻠﺘﻔﺖ ﺇﻟﻲ ﻓﻴﻘﻮﻝ : ﺗﺪﺭﻱ ﻣﺎ ﻳﺮﻳﺪ ﻫﺆﻻﺀ ؟ ﻳﺮﻳﺪﻭﻥ ﺃﻥ ﻳﺠﻌﻠﻮﺍ ﻇﻬﻮﺭﻧﺎ ﺟﺴﺮﺍً ﻟﻬﻢ ﺇﻟﻰ ﺟﻬﻨﻢ “আমি ৩৪ বছর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (رضى الله عنه) সংস্পর্শে থেকেছি। তাকে যে প্রশ্ন করা হত, তার অধিকাংশ ক্ষেত্রে তিনি বলতেন-“লা আদরি” (আমি জানি না)। অতঃপর তিনি আমাকে লক্ষ্য করে বলতেন- “এরা আমাদের পিঠকে জাহান্নামের সেতু বানাতে চায়”। গ্রন্থ সূত্র : _ জামেউ বয়ানিল ইলমি ও ফাযলিহি, আল্লামা ইবনু আব্দিল বার (رحمة الله عليه), খ.২, পৃষ্ঠা-৮৪১। প্রখ্যাত ফকিহ্ সাহাবী ইবন উমর রা. কি অপরিণামদর্শী ‘জাকির নায়েক’ হতেও কম জ্ঞানী ছিলেন! তাবেয়ী হযরত আতা رحمة الله عليه( বলেন- ﺃﺩﺭﻛﺖ ﺃﻗﻮﺍﻣﺎً ﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﺃﺣﺪﻫﻢ ﻟﻴﺴﺄﻝ ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻲﺀ ﻓﻴﺘﻜﻠﻢ ﻭﺇﻧﻪ ﻟﻴﺮﻋﺪ “আমি এমন সম্প্রদায়কে দেখেছি, যাদের নিকট কোন বিষয় জিজ্ঞেস করা হলে, তারা সে বিষয়ে কোন কথা বলতে গিয়ে কাঁপতেন”। [কোন ধরণের ত্রুটি হওয়ার ভয়ে কাঁপতেন] গ্রন্থ সূত্র : _ মুয়াফাকাত, আল্লামা শাতবী (رحمة الله عليه, খ.৪, পৃষ্ঠা-২৮৬। বিখ্যাত ইমাম ও হাদিস বিশারদদের ইমাম হযরত সুফিয়ান সাউরী (رحمة الله عليه বলেন- ﺃﺩﺭﻛﺖ ﺍﻟﻔﻘﻬﺎﺀ ﻭﻫﻢ ﻳﻜﺮﻫﻮﻥ ﺃﻥ ﻳﺠﻴﺒﻮﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﺴﺎﺋﻞ ﻭﺍﻟﻔﺘﻴﺎ ﺣﺘﻰ ﻻ ﻳﺠﺪﻭﺍ ﺑﺪﺍً ﻣﻦ ﺃﻥ ﻳﻔﺘﻮﺍ ﻭﻗﺎﻝ : ﺃﻋﻠﻢ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺑﺎﻟﻔﺘﻴﺎ ﺃﺳﻜﺘﻬﻢ ﻋﻨﻬﺎ ﻭﺃﺟﻬﻠﻬﻢ ﺑﻬﺎ ﺃﻧﻄﻘﻬﻢ “আমি এমন ফকীহদেরকে পেয়েছি যারা মাসআলা ও ফতোয়া প্রদান করতে অপছন্দ করতেন। নিতান্ত নিরূপায় হলে তারা ফতোয়া প্রদান করতেন। ফতোয়ার ক্ষেত্রে সর্বাধিক জ্ঞাত সেই ব্যক্তি, যে চুপ থাকে, আর এক্ষেত্রে যে অধিক কথা বলে, সে হল চরম মূর্খ”। গ্রন্থ সূত্র : _ আল-আদাবুশ শরইয়্যাহ, আল্লামা ইবনে মুফলিহ (رحمة الله عليه), খ.২, পৃষ্ঠা-৬৬। _ আজরী বাগদাদী (৩৬০হি.), আখলাকুল উলামা, ১/১০২পৃ.। হযরত আব্দুল মালিক বিন আবি সুলাইমান (رحمة الله عليه) বলেন- ﺳﺌﻞ ﺳﻌﻴﺪ ﺑﻦ ﺟﺒﻴﺮ ﻋﻦ ﺷﻲﺀ ﻓﻘﺎ
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|