★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
ইলমে গায়েব জানতেন না মর্মে আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা ও বাতিল দের মুখের উপর লানৎ পড়া জবাব - Mas'la Masayel Discussions on

ইলমে গায়েব জানতেন না মর্মে আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা ও বাতিল দের মুখের উপর লানৎ পড়া জবাব

edited April 2016 in Mas'la Masayel
ফেসবুকে সম্প্রতি বেশ কিছু ফেসবুক মুফতির আগমণ ঘটেছে। এরা হয় জামাত-শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত, নয় তো আহলে হাদিস আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত। এদের কাজই হল প্রতিষ্ঠিত আক্বীদার বিপক্ষে কথা বলা। এমন সব আয়াত এরা উল্লেখ করবে যেগুলো অবতীর্ণ হয়েছিল আরবের কাফের আর মুশরিকদের উদ্দেশ্য করে। ফলে সাধারণ মুসলমান ওইসব আয়াত শুনেই ঘাবড়ে যায়। এই দলের লোকগুলো এধরণের বেশ কিছু আয়াত নিজেদের কাছে জমা করে রাখে। আবার কিছু আয়াতের ফটো বানিয়ে অহরহ যেখানে সেখানে পোস্ট করছে। আপনি যে ব্যাপারেই পোস্ট করেন না কেন, এরা কপি পেস্ট করে ডজন খানেক আয়াত দেবে যেগুলোর বেশির ভাগই আপনার পোস্টের সাথে খাপ খায়না। উপরন্ত, ওইসব আয়াতগুলো মুশরিক-কাফেরদের উদ্দেশ্যে নাজিল হয়েছে। ইলমে গায়েব কেবল আমাদের নবী ﷺ কেই দেয়া হয়নি। এ জ্ঞান আল্লাহ পাক তাঁর প্রিয় বান্দা হযরত খিজির عليه السلام কেও দিয়েছিলেন (সুরা কাহফ ৬৫)। তিনি অন্যান্য রাসুল যেমন হযরত নুহ عليه السلام, হযরত ইয়াকুব عليه السلام, হযরত ইউসুফ عليه السلام, হযরত ঈসা عليه السلام সহ অনেক নবী-রাসুল عليه السلام কেই দিয়েছেন। আমি সেদিকে আলোচনা নিতে চাই না। অন্য পোস্টে ইনশা আল্লাহ তা ব্যক্ত করা হবে। নিচে, আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে ইলমে গায়েব নিয়ে এমনই কিছু আয়াতের বিশ্লেষণ করছি যেগুলো এরা সচরাচর উল্লেখ করে সাধারণ মুসলমানকে বিভ্রান্ত করে থাকে। এগুলো আপনাদের কাছে জমা করে রাখুন। যাতে কোন গোমরাহ ব্যক্তি কপি পেস্ট করে আপনার ঈমান আর আক্বীদাকে দুর্বল করতে আসলেই আপনি এগুলো তার দিকে ছুড়ে মারতে পারেন। শয়তান যেমন আজান শুনলে পালিয়ে যায়, এরাও দেখবেন, জবাব দিতে অক্ষম হয়ে পালিয়ে যাবে কিংবা প্রসংগ পালটিয়ে আপনাকে অন্য বিষয়ে ওয়াসওাসা দেবে। তাদের বহু উল্লেখিত আয়াতসমূহ হলো নিম্নরূপঃ ১। [“তাঁর কাছেই অদৃশ্য জগতের চাবি রয়েছে। এ গুলো তিনি ব্যতীত কেউ জানে না। স্থলে ও জলে যা আছে , তিনিই জানেন। কোন পাতা ঝরে না ; কিন্তূ তিনি তা জানেন। কোন শস্য কণা মৃত্তিকার অন্ধকার অংশে পতিত হয় না এবং কোন আর্দ্র ও শুস্ক দ্রব্য পতিত হয় না ; কিন্তূ তা সব প্রকাশ্য গ্রন্থে রয়েছে”। (আনআম , ৬: ৫৯)] উপরোক্ত আয়াতটি সুরা আনাম থেকে নেয়া। আর এই সুরাটি মাক্কী সুরা এবং মি'রাজের পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে। ফলে এখানে যে অদৃশ্যের চাবির কথা বলা হয়েছে, সে অদৃশ্য চাবি আল্লাহ পাক নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে দিয়েছেন। এর প্রমাণ নিচের আয়াতগুলো সহ ৯০ টিরও বেশি সহীহ হাদিস। "তিনি অদৃশ্যের জ্ঞানী। পরন্ত তিনি অদৃশ্য বিষয় কারও কাছে প্রকাশ করেন না। তাঁর মনোনীত রসূল ব্যতীত।" (সুরা জিন ২৬ ও ২৭) অর্থাৎ তিনি গায়াবের জ্ঞান তাঁর মনোনীত রাসুলদের নিকট প্রকাশ করেন। আর মহানবী ﷺ অবশ্যই তাঁর মনোনীত রাসুল। "তখন আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি যা প্রত্যাদেশ করবার, তা প্রত্যাদেশ করলেন।" (সুরা নাজমের ১০) এটি মি'রাজের রাতের ঘটনা। আল্লাহ পাক তাঁর রাসুল ﷺ কে যা জ্ঞান দেবার তা দিলেন। কিন্তু কি দিলেন তা এখানে বলা হয়নি। "তিনি অদৃশ্য বিষয় বলতে কৃপনতা করেন না।" (সুরা তাকভিরের ২৪) আমি এ আয়াতগুলোর তাফসীরের দিকে গেলাম না। কেননা তাহলে এই পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে। যার যার প্রয়োজন, আয়াতগুলোর তাফসীর দেখে নিন। তাহলে আর গোমরাহ হতে হবে না। আর অদৃশ্য জগতের চাবির বিষয়ে দেখুন হাদিস কী বলেঃ "হযরত ওক্ববাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তাআলা আনহু বলেছেন, হুযুর (সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেন— নিশ্চয় আমাকে পৃথিবীর সমস্ত ধন-ভান্ডারের চাবিগুচ্ছ দেওয়া হয়েছে।" {বোখারী শরীফ ৮ খণ্ড, ৭৬ অধ্যায়, ৪৩৪ নং হাদিস) ২। “তিনিই সঠিকভাবে নভোমন্ডল সৃষ্টি করেছেন। যেদিন তিনি বলবেন: হয়ে যা, অত:পর হয়ে যাবে। তাঁর কথা সত্য। যেদিন শিঙ্গায় ফুৎকার করা হবে , সেদিন তাঁরই আধিপত্য হবে। তিনি অদৃশ্য বিষয়ে এবং প্রত্যক্ষ বিষয়ে জ্ঞাত। তিনিই প্রজ্ঞাময়, সর্বজ্ঞ”। (আনআম , ৬: ৭৩) উক্ত আয়াত নবীজী ﷺ এর ইলমে গায়েবের বিরুদ্ধে যায় না। ফলে এর জবাব দেবারও কিছু নেই। ৩। “আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই , কিন্তূ যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম , ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য” । (আরাফ , ৭: ১৮৮) এই সুরাটি অর্থাৎ সুরা আ'রাফও মক্কী সুরা। ফলে উপরোক্ত আয়াতে রাসুল ﷺ গায়েবের কথা জানেন না বলে যে ঘোষণা এসেছে তা কেবলই মি'রাজের পূর্বের কথা। আমি যে তিনটি সুরা উল্লেখ করেছি, সে সুরার উল্লেখিত আয়াতসমূহের মাধ্যমে এই আয়াতের কার্যকারিতা রহিত হয়ে গেছে। কেননা তাঁকে গায়েবের জ্ঞান দেয়া হয়েছিল। ফলে কিয়ামত পর্যন্ত কি কি ঘটবে তিনি সব বলে দিয়েছেন। নিচে দেখুন এ সংক্রান্ত সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমসহ অন্যান্য সহীহ হাদিস গ্রন্থের হাদিস।

৪। “তারপর তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে সেই গোপন ও আগোপন বিষয়ে অবগত সত্তার নিকট। তিনিই তোমাদের বাতলে দেবেন যা তোমরা করছিলে”। (তাওবা , ৯: ৯৪) ﷺ নবীজী এর ইলমে গায়েবের বিরুদ্ধে যায় না। ফলে এর জবাব দেবারও কিছু নেই। ৫। “আর তুমি (হে নবী) বলে দাও, তোমরা আমল করে যাও, তার পরবর্তীতে আল্লাহ দেখবেন তোমাদের কাজ এবং দেখবেন রসূল ও মুসলমানগণ। তাছাড়া তোমরা শীঘ্রই প্রত্যাবর্তিত হবে তাঁর সান্নিধ্যে যিনি গোপন ও প্রকাশ্য বিষয়ে অবগত। তারপর তিনি জানিয়ে দেবেন তোমাদেরকে যা করতে”। (তাওবা , ৯: ১০৫) এ আয়াতটিতে মূলত রাসুল ﷺ এবং মুমিন বান্দাগণ অর্থাৎ আল্লাহর ওলীগণ মানুষের আমল দেখবেন সে ব্যাপার ব্যক্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ রাসুল ﷺ যে হাজির ও নাযির এ আয়াতটি তার প্রমাণ। যারা গোমরাহ হয়েছে তারা এ আয়াত পড়বে কিন্তু এর মর্ম বুঝবে না। এখানে স্থান- কাল বিবেচনায় নেয়া হয়নি। অর্থাৎ কিয়ামত পর্যন্ত বান্দাগণ যত আমল করবে, তা সব রাসুল এবং ﷺ নেকবান্দাগণ দেখতে থাকবেন। সোবহানআল্লাহ! ৬। “তারা বলে, তাঁর কাছে তাঁর পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে কোন নির্দেশ এল না কেন ? বলে দাও গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন। আমি ও তোমাদের সাথে অপেক্ষায় রইলাম”। (ইউনুছ , ১০: ২০) সুরা ইউনুসও মক্কী সুরা। উপরন্ত আল্লাহ ব্যতিত আর কেউ গায়েবের সংবাদ জানেন না এমন কোন ইঙ্গিত নেই। "গায়েবের কথা আল্লাহই জানেন" তো অবশ্যই। কিন্তু সুরা জিনে যেমনটি বলা হয়েছে, তিনি (আল্লাহ) চাইলে তাঁর মনোনীত রাসুলদের গায়েবের জ্ঞান দান করেন। সুতরাং, এই আয়াতটিও আলোচ্য বক্তব্যের বিপক্ষে যায়না। ৭। “আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না যে, আমি গায়বী খবরও জানি; একথাও বলি না যে, আমি একজন ফেরেশতা ; আর তোমাদের দৃষ্টিতে যারা লাঞ্চিত আল্লাহ্ তাদের কোন কল্যাণ দান করবেন না। তাদের মনের কথা আল্লাহ্ ভাল করেই জানেন। সুতরাং এমন কথা বললে আমি অন্যায় কারী হব”। (হুদ , ১১: ৩১) সুরা হুদও মক্কী সুরা এবং তিনি ﷺ যে গায়েব জানেন না বলেছেন, তা মি'রাজের পূর্বের ঘটনা। ফলে সুরা জিন সহ আমার উল্লেখিত ৩ সুরার মাধ্যমে এসবগুলো আয়াতের না-সূচক বক্তব্য রহিত হয়ে গিয়েছে। আর দেখুন সহীহ হাদিস কী বলেঃ হযরত আমর ইবনে আখতাব (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) হতে বর্নিত , তিনি বলেন , আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) একদিন আমাদেরকে নিয়ে ফজরের নামাজ পড়লেন । অতঃপর মিম্বরে আরোহন করলেন এবং আমাদের উদ্দেশে দীর্ঘ বক্তব্য প্রদান করলেন; এমন কি যোহরের নামায পড়ালেন। অতঃপর আবারো আরোহন করলেন মিম্বরে, আর বক্তব্য দেওয়া শুরু করলেন, এমন কি আসরের নামাযের সময় উপস্থিত হল। অতঃপর মিম্বরে হতে নেমে আসরও পড়লেন। পুনরায় মিম্বরে আরোহন করে বক্তব্য দিতে দিতে এ সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল। সে দিন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা) অতীতে যা কিছু এবং ভবিষ্যতে যা কিছু হবে সকল বিষয়ে আমাদেরকে সংবাদ দিয়েছেন। আমাদের মধ্যে যাঁদের স্মরণশক্তি অধিক তাঁরা সেসব (অদৃশ্য) সংবাদ বেশী মনে রাখতে পেরেছেন । (সুত্র : বুখারী শরীফ হাদিস নম্বর ৬২৩০ কিতাবুল কদর , মুসলিম শরিফ হাদিস নম্বর ২৮৯১ কিতাবুল ফিতান , তিরমিযী শরীফ হাদিস নম্বর ২১৯১ কিতাবুল ফিতান , আবু দাউদ শরীফ হাদিস নম্বর ৪২৮ কিতাবুল ফিতান , মিসকাতুল মাসাবিহ : কিটাবুল ফিতান ৪৬১ পৃষ্ঠা ) বিঃ দ্রঃ - রাসুলে করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ইলমে গায়েব আছে মর্মে আমার কাছে ৯০টির মতো হাদিস রয়েছে। আর সবগুলো হাদিসই আলহামদুলিল্লাহ্‌ সহীহ। কাজেই স্পষ্ট আয়াত এবং সহীহ হাদিস থাকার পরও যারা নবীজী ﷺ এর ইলমে গায়েবকে অস্বীকার করে তারা নিতান্তই অভাগা এবং রাসুল ﷺ এর নবুয়ত অস্বীকারকারী। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের ওয়াসওয়াসা থেকে রক্ষা করুণ! !আমীন


মানুন আর নাই মানুন কবরে এক দিন জেতে হবে সেই দিনই বুজবেন হক কি????

:-bd Share
ইলমে গায়েব জানতেন না মর্মে আয়াতগুলোর ব্যাখ্যা ও বাতিল দের মুখের উপর লানৎ পড়া জবাব http://yanabi.in/u/12
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|