★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী জিন্দা নবী - Ja-al-haq Discussions on

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী জিন্দা নবী

edited February 2016 in Ja-al-haq

সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদা হল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন্‌ নাবিয়্যীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “যারা আল্লাহ পাক-এর রাস্তায় শহীদ হয়েছেন তোমরা তাদেরকে মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত। অথচ তোমরা তা উপলব্ধি করতে পারছো না।” (সূরা বাক্বারা/১৫৪)
আর ওলীআল্লাহগণের শানেও বলা হয়েছে, “ওলীআল্লাহগণ মৃত্যুবরণ করেন না। বরং তারা অস্থায়ী জগৎ থেকে স্থায়ী জগতের দিকে প্রত্যাবর্তন করেন।”(মিরকাত ৩য় খণ্ড, ২৪১ পৃষ্ঠা)। এছাড়া সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণও স্বীয় রওযা মুবারকে জীবিত রয়েছেন। যেমন কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, “নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত মুসা আলাইহিস্‌ সালামকে উনার রওজা মুবারকে নামাযরত অবস্থায় দাঁড়ানো দেখেছেন। অনুরূপভাবে হযরত ইব্রাহিম আলাইহিস্‌ সালামকে দেখেছেন।” (মিরকাত ৩ জিলদ ২৪১ পৃষ্ঠা)
এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ রয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ স্বীয় রওযা শরীফ-এ জীবিত থাকেন। উনারা রওযা শরীফ-এ নামাযও আদায় করেন।” (তারিখে ইস্পাহান ২/৮৩, ফয়জুল ক্বাদীর ৩/১৮৪, আবু ইয়ালা, দায়লামী শরীফ/৪০৪)
শুধু তাই নয়, বরং সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণই স্বীয় রওযা শরীফ-এ অবস্থান করে আল্লাহ পাক-এর ইবাদত-বন্দিগীতে মশগুল রয়েছেন এবং রিযিকও পাচ্ছেন। যেমন হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত আছে, “আল্লাহ পাক-এর নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ স্বীয় রওজা মুবারকে জীবিত রয়েছেন এবং উনারা খাদ্যও খেয়ে থাকেন।” (ইবনে মাযাহ, মিশকাত, মিরকাত/৩খণ্ড, ২৪১)। অন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, হযরত আউস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক যমীনের জন্য নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণের শরীর মুবারককে ভক্ষণ করা (নষ্ট করা) হারাম করে দিয়েছেন।” (আহমদ, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ, ইবনু হিব্বান, মুস্তাদরাকে হাকিম, কানযুল উম্মাল, মিরকাত)
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার রওযা মুবারকের নিকট এসে আমার প্রতি দুরূদ শরীফ পাঠ করে আমি অবশ্যই তার দুরূদ শরীফ শুনতে পাই।” (বায়হাক্বী, মিশকাত/৮৭) অন্য হাদীছ শরীফ-এ এসেছে আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “হে আমার ছাহাবীগণ! হে আমার উম্মতগণ!! তোমারা আমার প্রতি প্রত্যেক সোমবার ও শুক্রবার দুরূদ শরীফ পাঠ করো। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের সেই দুরূদ শরীফ বিনা মধ্যস্থতায় শুনতে পাই।” উক্ত হাদীছ শরীফ-এর ব্যাখ্যায় কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমি হাক্বীক্বীভাবে বিনা মধ্যস্থতায় তা শুনতে পাই।” (মিরকাত ২য় খণ্ড, ৩৪৭ পৃষ্ঠা)। কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, “নিশ্চয়ই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রওযা মুবারকে জীবিত অবস্থায় আছেন। (মিরকাত/২/২২৩).

হায়াতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হওয়ার কারণেই উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বিবাহ করা হারাম

=======================================
“তাফসীরে মাযহারী” উনার ৭ম খণ্ডের ৩৭৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اى ذنبا عظيما قلت وجاز ان يكون ذلك لاجل ان النبى صلى الله عليه وسلم حى فى قبره ولذلك لـم يورث ولـم يتئم ازواجه عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من صلى على عند قبرى سمعته ومن صلى على نائبا ابلغته 
অর্থ : “(হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনাদেরকে বিবাহ করা বড় গুনাহ। আমি বলি : নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে বিবাহ করা হারাম এজন্যই যে, যেহেতু তিনি উনার রওযা শরীফ উনার মধ্যে জীবিত আছেন, তিনি হায়াতুন নবী। সে কারণে উনার সম্পত্তির কোন ওয়ারিছ নেই এবং উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালামগণও বিধবা নন।” 
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “যে ব্যক্তি আমার রওযা শরীফ উনার নিকটে এসে ছলাত ও সালাম দিবে আমি তা সরাসরি শুনি। আর যে আমার নিকট দূরদেশ থেকে ছলাত ও সালাম পাঠাবে তা আমার কাছে পৌঁছে দেয়া হয়।” (বাইহাক্বী ফী শুয়াবিল ঈমান)

হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই মহান আল্লাহ পাক উনার থেকে উনাদেরকে নিয়ামত প্রদান

খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
ومن يقنت منكن لله ورسوله وتعمل صالـحا نؤتها اجرها مرتين واعتدنا لـها رزقا كريما.
অর্থ : “আপনাদের মধ্যে যে কেউ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি অনুগত হবেন ও সৎকার্য করবেন উনাকে আমি পুরস্কার দিবো দুইবার এবং উনার জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি সম্মানজনক রিযিক।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩১)
“তাফসীরে মাযহারী” উনার ৭ম খ-ের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, দ্বিগুণ পুরস্কারের অর্থ হচ্ছে- 
প্রথমত : উনারা দ্বিগুণ পুরস্কার লাভ করবেন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের ইতায়াত বা আনুগত্যতার জন্য।
দ্বিতীয়ত : হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি-রেযামন্দী মুবারক অর্জনের জন্য। উনার উপর সন্তুষ্ট হয়ে উত্তম জীবনযাপনের জন্য। 
হযরত মুক্বাতিল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উনাদের প্রতিটি পুণ্যের প্রতিদান দেয়া হবে দশগুণ করে। এটা হচ্ছে আম বদলা। আর খাছ বদলা হচ্ছে অসংখ্য, অগণিত। কারণ দাতা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন অসীম আর উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন উনার কুদরত মুবারক উনার অধীন। সুবহানাল্লাহ!
“তাফসীরে মাযহারী” উনার ৭ম খ-ের ৩৩৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে- 
اى جليل القدر وهو الجنة زيادة على اجرها قلت وذالك لانهن يرزقن بمتابعة النبى صلى الله عليه وسلم مايرزق النبى صلى الله عليه وسلم.
অর্থ : “(নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া আলাইহিন্নাস সালামগণ) উনাদেরকে সম্মানজনক রিযিক প্রদান করা হবে। তা হচ্ছে জান্নাত। যা সবচেয়ে বড় প্রতিদান। আমি বলি : উনারা উত্তম রিযিক পাবেন হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া হওয়ার কারণেই। তাই হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য যে রিযিক, উনাদের জন্যও সে রিযিক ধার্য হবে।” সুবহানাল্লাহ! (তাফসীরে ইবনে কাছীর, কুরতুবী, আহকামুল কুরআন, খাযিন, বাগবী, মাদারিক ইত্যাদি তাফসীরগুলোতে আরও বিশদভাবে আলোচনা রয়েছে।)
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, তাফসীর শরীফ ইত্যাদি কিতাব উনাদের উপরোক্ত আলোচনা থেকে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে- 
(১) আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া হওয়ার কারণেই হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মর্যাদা অন্যান্য সকল নারীর উপরে। সুবহানাল্লাহ!
(২) হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা যেমন ইহকালে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া; তদ্রুপ বেহেশতেও উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া হিসেবেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ!
(৩) হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা আহলে বাইত শরীফ উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
(৪) অন্যান্য মানুষের থেকে উনাদের আমলের প্রতিদান দ্বিগুণ-বহুগুণে প্রদান করা হবে। সুবহানাল্লাহ!
(৫) পৃথিবী সৃষ্টির পূর্বে-পরে, যে কোন কালে যাঁরাই অনেক মর্যাদাশালী হয়েছেন; তাঁরাই আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই মর্যাদাময় হয়েছেন। এর উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি, রেযামন্দী মুবারক অর্জনের মূল মাধ্যম হচ্ছে ছোহবত মুবারক। এজন্য হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনারা ওলীআল্লাহ উনাদের ছোহবত অর্জন করাকে ফরযে আইন ফতওয়া দিয়েছেন। 
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে উনার এবং উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম এবং সমস্ত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি যথাযথ সম্মান-মর্যাদা, তা’যীম-তাকরীম ও সুধারণা রাখার তাওফীক দান করুন। (আমীন)


উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা এটাই প্রমাণিত হলো যে, ওলীআল্লাহগণসহ শুহাদায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিগণ এবং সমস্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্‌ সালামগণ স্বীয় মাযার শরীফ বা রওযা শরীফ-এ জীবিত রয়েছেন। আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব, নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, নূরে মুজাস্‌সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ তিনি হায়াতুন নবী। কিয়ামত পর্যন্ত তথা অনন্ত কাল পর্যন্ত উম্মতের অবস্থা তিনি পর্যবেক্ষণ করবেন।
Share & Like
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হায়াতুন নবী জিন্দা নবী http://yanabi.in/u/14

Comments

  • edited February 2016
    ওহাবীরা যে সমস্ত দলীল দেন এর বিপক্ষে তার খন্ডনঃ

    আমি প্রথমত বাচ্চাদের সাথে কথা বলে ওহেতুক মনে করি আর দ্বীতিয়ত তাদের সাথে যারা মুর্খদের মত আচরন করে , তৃতীয়ত যারা হিংসামুলক প্রশ্ন করে ৪র্থত যারা কোন ফায়সালা নিতে পারে না নিজের বিবেক দিক দিয়ে । আর যারা কিছু জানতে চায় ও বুঝতে চেষ্টা করে ও বোঝার পর কোন বিষয় একটা চুরান্ত ফায়সালা নিতে পারে তাদের সাথে কথা বলা উত্ত্ম মনে করি।  আর বাকি যারা আছে তাদের কে বলব এমন কারো হাতে আমার এই লেখা যদি যায় সে যেন না পড়ে । 

    আপনার প্রথম কালাম পাকের আয়াত ;- 
    قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا (110
    বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র ইলাহ। অতএব, যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সাক্ষাত কামনা করে, সে যেন, সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং তার পালনকর্তার এবাদতে কাউকে শরীক না করে।


    এখন আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে এই আয়াত কে নিয়ে আশা করছি তার জবাব দিবেন ;
    - قُلْ إِنَّمَا أَنَا بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ

    এই খানে (বাশার) শব্দের অর্থ কি  ? 
    বলবেন মানুষ । 
    মিছলুকুম শব্দের অর্থ কি ? 
    বলবেন মত । 

    উত্তর কি দাড়াল মানুষের মত । 

    মানুষের মত হওয়া আর মানুষ হওয়া কি এক ? 
    যদি তাই হয় যে মানুষের মত হওয়া ও মানুষ হওয়া একই কথা তে হলে হযরত জীব্রাইল عليه السلام দাহিয়া কালবীর রুপ  নিয়ে আসতেন নবী পাকের কাছে তখন কি তিনি মানুষ হয়ে যান ? না কি ফেরেস্থা থেকে যান ? জবাব দিবেন ।  
    এটা আমার প্রশ্ন থাকল ।

    আর/-  সুরা মরিয়ম দেখুন একবার ;- 
      فَاتَّخَذَتْ مِن دُونِهِمْ حِجَابًا فَأَرْسَلْنَا إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا  
    অতঃপর তাদের থেকে নিজেকে আড়াল করার জন্যে সে পর্দা করলো। অতঃপর আমি তার কাছে আমার রূহ প্রেরণ করলাম, সে তার নিকট পুর্ণ মানবাকৃতিতে আত্নপ্রকাশ করল।
    আয়াত নং ১৭ 

    এই খানে কোন রুহ এর কথা বলে হয়েছে  فَتَمَثَّلَ لَهَا।     
    আর এই কথার অর্থ কি ? বলবেন কি ? মিছলুকুম বা শব্দের অর্থ হচ্ছে মত বা আকৃতি। আমি প্রথমে এই কথা বলেছি । আর (فَتَمَثَّلَ لَهَا) একই অর্থে বেবহৃত 
    হয়েছে  যে আকৃতি হত দিক দিয়ে মানুষের মতই।  

    আর ওনেক হাদীস আছে তাতে নবী পাক বলেছেন যে তোমাদের মাঝে আমার মত কে আছ ? আমি তোমাদের মত নই । আমি হাদীসের দিকে যেতে চাচ্ছি না আজ। কারন আমাকে বলা হয়েছে আপনি হাদীস কে ও মান্য করেন না । তাই ফায়সালা কোরান থেকে হোক । 

      قَالَتْ إِنِّي أَعُوذُ بِالرَّحْمَن مِنكَ إِن كُنتَ تَقِيًّا (18
    মারইয়াম বললঃ আমি তোমা থেকে দয়াময়ের আশ্রয় প্রার্থনা করি যদি তুমি আল্লাহভীরু হও।  
    ."  
     
      قَالَ إِنَّمَا أَنَا رَسُولُ رَبِّكِ لِأَهَبَ لَكِ غُلَامًا زَكِيًّا (19
    সে বললঃ আমি তো শুধু তোমার পালনকর্তা প্রেরিত, যাতে তোমাকে এক পবিত্র পুত্র দান করে যাব।  
    এই খানে হযরত জীব্রাইল মানুষের রুপ নিয়ে এসেছিলেন। আর তাই মা মরিয়ম ভয় পেয়ে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করেছেন । 

    এই খানে জীব্রাইল عليه السلام যদি মানুষের কুপ নিয়ে আসতে পারেন  নূর হয়ে তা হলে জিনি আল্লাহর প্রথম সৃষ্টি  ও সৃষ্ঠির  শুরু থেকে তিনি নবীই ছিলেন তিনি কি  পারেন না ? নূর হয়ে মানুষের মত আসতে ? জবাব দিন 

    ২য় :- উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলতে বলেছেন যে আপনি বলে দিন যে আমি মানুষের মতই ।     
    এই খানে তোমাদের মতই কথা টা কোথায় থেকে আসলো ? 

    আর এই কথা টা আল্লাহ তায়ালা নবী পাক  কে বলতে বলেছেন যে আপনি বলে দিন , আমি আল্লাহ বলছি না , আপনি বলেদিন যে আপনি মানুষের মতই। আমি আল্লাহ বলবোনা  যে আপনি মানুষ । 

    আর আল্লাহ কি তোমাদের কে বলতে বলেছেন এই আয়াতে যে (হে মানুষ সকল , তোমরা বল যে হে নবী আপনি আমাদের মতই মানুষ ) 

    যদি আল্লাহ সাধারন মানুষ বা কাউকেই বলতে বলে নাই যে হে বান্দা রা তোমরা বল হে নবী আপনি আমাদের মতই মানুষ তা হলে কেন বলেন আপনারা ? 
    জবাব দিন ।  

    কোরানের কোন আয়াতে নবী পাক কে মানুষ বলতে বলা হয়েছে ? 
    আর আল্লাহ তায়ালা কোন আয়াতে বলেছে যে হে নবী আপনি আর ১০ জনের মত মানুষ ? 
    বা কোরানের যে কোন এক খানে যদি সম্বোধন করে থাকে আল্লাহ নবী পাক কে মানুষ বলেছেন তো আমার সামনে পেষ করুন । 
    বরং নবী পাক কে ডাকত আল্লাহ ( ইয়া বশিরু, ইয়া মুবাশ্বেরু  বলে । মানুষ বলে কোথায় ডেকেছে ? 
    হা এটা সত্য যে আবু জাহেলের  চোখে নবী পাক কে মানুষ দেখাত, আবু লাহাব নবী পাক কে মানুষ দেখত । 

    কিন্তু আবু বক্কর , ওমর উসমান আলী رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه প্রমুখ সাহাবীগনের চোখে নবী পাক কে নবীই দেখাত। কখন ও তাহারা নবী পাক কে মানুষ ও মনে করেন নাই কখন ও মাটি ও মনে করেন নাই । 

    আরো একটা কথা । এই একটা আয়াত কে নিয়ে আপনারা লুংগি উপরে করে নাচতে থাকেন নবী পাক কে মানুষ বানানোর অপচেষ্টায়। 
    হযরত আদম عليه السلام দোয়া করেছিলেন যে ( রাব্বানা যালামনা আনফুসানা ওয়া ইল্লাম তাগফিরলানা ওয়া তারহামনা লানা কূনান্না মিনাল খাসেরীন। 
    অর্থঃ “হে আমার প্রভু! আমরা আমাদের নফসের উপর যুলুম করেছি, তুমি যদি আমাদের ক্ষমা না কর, আমাদের প্রতি করুণা না কর তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাব।” 
    (সূরা আ‘রাফ- ২৩)

    আশা করি জানা আছে আপনার । 

    এই দোয়ার মাঝে তিনি নিজে বলেছেন হে আমার প্রতিপালক আমি জুলুম করেছি আমার নফসের উপর । একবার বল তো দেখি যে আদম عليه السلام গোনাহগার ছিল , তিনি নিজের উপর জুলুম ও করেছেন , আর সাক্ষী তার কোরান পাক । 
    এর পর দেখি আমি তোমার ইমান এর কত জোর । 
    জানি বলতে পারবেন না।  

    যদি হযরত আদমعليه السلام কে বলতে না পারেন এই কথা যে তিনি নিজে  শিকার করার পর ও , তা হলে আমাদের নবী পাক কে কেন মানুষ বলা হয় ? যখন আল্লাহ বলতে বলেছেন তখন তিনি বলেছেন যে আমি মানুষের মতই , তিনি বলেন নাই আমি ও মানুষ।  

    এমন কোন আয়াত থাকলে দেখান আমারে । 
    না কি শুধু দুষমনি ? 


    এই আয়াতে শরীক বা শেরেক বা পালনকর্তার কথা বলা হয়েছে । রব শব্দের অর্থ কিন্তু পালন কর্তা । 

    আর যদি একটু চোখ তুলে দেখেন তো শিরক এ শিরক ভরে গেছে দেখতে পাবেন এমন কি আল্লাহর কোরানের মাঝে ও শিরক পেয়ে যাবেন আপনি। কারন আল্লাহ তায়ালা কোরানে পিতা ও মাতা দের কে ও রব বরেলেছেন। যদি বিস্বাস না হয় তো (রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বাইয়ানিস সগিরা) এই আয়াতের তাফসীর দেখে নিবেন।  এমনে পোষ্ট ওনেক লম্বা হবে। তাই সংক্ষিপ্ত করলাম। 

    আপনি আয়াত দিয়েছেন যে :- 
    كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ (26
    ভূপৃষ্টের সবকিছুই ধ্বংসশীল।


      وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ (27
    একমাত্র আপনার মহিমায় ও মহানুভব পালনকর্তার সত্তা ছাড়া।
    । 
    এক বাক্য কবুল করলাম 
    তবে আপনি নিজে তৈরি থাকুন  এই আয়াত কে কবুল করার জন্য । 


    আপনার দেয়া দলিল ;-

      وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ الْخُلْدَ أَفَإِن مِّتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ (34
    আপনার পূর্বেও কোন মানুষকে আমি অনন্ত জীবন দান করিনি। সুতরাং আপনার মৃত্যু হলে তারা কি চিরঞ্জীব হবে?

    বাচ্চা হলেই এমন আয়াত ব্যবহার করা যায়  রাসুলুল্লাহ ﷺ কে মৃত প্রমান করার জন্য 

    আচ্ছা আল্লাহ তায়ালা নিজে কোরান পাক এ শহিদ দের কে মৃত বলতে মানা করেছেন দেখুন;- 
      وَلاَ تَقُولُواْ لِمَنْ يُقْتَلُ فِي سَبيلِ اللّهِ أَمْوَاتٌ بَلْ أَحْيَاء وَلَكِن لاَّ تَشْعُرُونَ 4
    আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না। বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।

    (বাকারা) ১৫৪ 

    সাধারন মিত্তু ও শহীদি মিত্তুর   মধ্য পার্থক্য কি ? একটু বলবেন কি ? শহিদ রা কি মিত্তুর স্বাদ গ্রহন করেন নাই ? আর যদি মিত্তুর স্বাদ গ্রহন করে থাকেন   তা হলে আল্লাহ তায়ালা কেন তাদের কে মৃত বলতে মানা করেছেন ? জবাব দিন । 

    যে খানে আল্লাহ তায়ালা শহীদ দের কে কোরান পাক এ মৃত বলতে মানা করলেন , কারন শহিদ দের ইজ্জত ওনেক ওনেক বেশি । এটা একটা ইজ্জত , যার জন্য মৃত বলতে মানা করেছেন। বরং জীবিত বলছে বলেছেন । আর এটা ও বলেছেন যে আমরা বুঝতে পারি না । সেই খানে সকল নবী ও ফেরেশতা কুলের সকলের  সরদার ও সব চেয়ে ইজ্জত ওয়ালা নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ কে মৃত বলা কি করে সম্ভব হয় ? 
    নবীর ইজ্জতের চেয়ে কি শহিদ দের ইজ্জত ওনেক বেশি  হয়ে গেল ? 
    জবাব দিন । 

    আর যদি নবীর ইজ্জত শহিদের ইজ্জতের চেয়ে বেশি হয় তো কি ভাবে হল ? তার উত্তর দিন । 

    আপনার দেয়া আর এক আয়াত দলিল হিসেবে ;- 
    كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ (35
    প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।



    উপরে লেখা উত্তর ও প্রশ্ন গুলো যথেষ্ট মনে করছি এই আয়াতের জন্য । 

    এর পর তিনি যে আজ পর্যন্ত একজন জীবন্ত লোকের মত আমাদের পর্যবেক্ষনকারী হয়ে আছেন তার কিছু দলিল কোরান থেকে :- 
    ১)  يَاايُّهَاا لنَّبِىُّ اِنَّا اَرْسَلْنكَ شَاهِدًا وَّمُبَشِّرًا وَّنَذِيْرًا وَّدَاعِيًا اِلَى اللهِ بِاِذْنِه وَسِرَاجًا مُّنِيْرَا
     
    [আল্লাহ তাআলা প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে সম্বোধন করে এরশাদ করেছেন, ওহে অদৃশ্য বিষয়াদির সংবাদদাতা! নিশ্চয় আমি আপনাকে প্রেরন করেছি, হাযির-নাযির, সুসংবাদদাতা হিসাবে এবং ভয় প্রদর্শনকারী করেছি আল্লাহর নির্দেশানুশারে তার দিকে আহবানকারী এবং উজ্জল প্রদীপ হিসেবে]
    আয়াতে উল্লেখিত- شاهد (শাহীদ) শব্দের অর্থে সাক্ষীও হতে পারে এবং হাযির-নাযির ও হতে পারে। সাক্ষী অর্থে সাহিদ শব্দটি এজন্য ব্যবহৃত হয়েছে সে ঘটনা স্থলেই উপস্থিত ছিল। হুযূর আলাইহিস সালামকে শাহিদ হয়তো এ জন্যই বলা হয়েছে, তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম )দুনিয়াতে এসে অদৃশ্য জগতের সাক্ষ্য দিচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরুপে। প্রত্যক্ষদর্শী যদি না হন, তাহলে প্রিয় নবী (সাল্লাল্লাহ আলাইহে ওয়াসাল্লাম) কে শাক্ষীরুপে প্রেরণের কোন অর্থই  হয়না। কেননা সমস্ত নবীগন (আলাইহিস সালাম) তো সাক্ষী ছিলেন। অথবা তাকে এ জন্যই শাহিদ বলা হয়েছে যে, কিয়ামতের দিন তিনি (সাল্লাল্লাহ আলাইহিস সালাম) সম্তত নবীগনের অনূকুলে প্রত্যক্ষদর্শীরুপে সাক্ষ্য প্রধান করবেন। এ সক্ষ্য না দেখে প্রদান করা যায় না।
     এর পর 
    (২)  وَكَذَالِكَ جَعَلْنَاكُمْاُمَّةًوَّ وَّسَطًا لِّتَكُوْنُوْا شُهْدْاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُوْنَ الرَّسُوْلُ عَلَيْكُمْ شَهِيْدًا
     
    [এবং কথা হলো এই যে আমি (আল্লাহর তা’আলা) তোমাদেরকে (উম্মতে মুহাম্মাদী ) সমস্ত উম্মত গনের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দান করেছি ,যাতে তোমরা  অন্যান্য লোকদের  ব্যাপারে সাক্ষ্য প্রদান করতে পার এবং এ রসুল (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম ) তোমাদের জন্য  পর্যবেক্ষনকারী ও সাক্ষীরুপে প্রতিভাত হন ।

    তিনি যদি আমাদের বিষয় অবগত না হল তে হলে কাল কিয়ামতের দিনে কি ভাবে সাক্ষি হবেন আমাদের ? বরম তিনি জীবিত ও আমাদের কে দেখছেন উত্তম ভাবে। তাই তিনি সাক্ষী হবেন কিয়ামতের দিনে আমাদের বিষয় ।

    (৩) فَكَيْفَ اِذَا جِئْنَا مِنْ كُلِّ اُمَّةٍ بِشَهِيْدٍ وَجِئْنَا بِكَ عَلَى هؤُلَاءِ شَهِيْدًا
     
    [তখন কি অবস্তা হবে ,যখন আমি  (আল্লাহ তা’আল্লা) প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন করে সাক্ষী  উপস্থিত করব ,এবং হে মাহবুব ! আপনাকে সে সমস্ত সাক্ষীদের প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরুপে আনয়ন করব।

    আমাদের নবী শুধু উম্ম্ত এ মোহাম্ম্দি এর সাক্ষী দিবেন না বরং সরল নবী ও রাসুল গনের উম্ম্ত দের ও সাক্ষী দিবেন।  তো তিনি যদি মরে কবরে পড়ে থাকেন তো কিয়ামতের দিনে কি ভাবে সাক্ষী দিবেন ? 

    (৪)   لَقَدْجَاَءَ كُمْ رَسُوْلٌ مِّنْ اَنْفُسِكُمْ عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ
    [নিশ্চয় তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে সে রসূলই এসেছেন, যাঁর কাছে তোমাদের কষ্টে নিপতিত হওয়ার ব্যাপারটি  বেদনাদায়ক ।
    এ আয়াত থেকে তিন রকমে হুযর আলাইহিস সালাম এর হাযির -নাযির হওয়ার বিষয়টি প্রমানিত হয়। প্রথমত جَاءَكُمْ আয়াতাংশে কিয়ামত পর্যন্ত  সময়ের মুসলমানদেরকে সম্মোধন করা হয়েছে, তোমাদের সকলের কাছে হুযুর আলাইহিস সালাম তশরীফ এনেছেন। এতে বোঝা যায় যে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রত্যেক মুসলমানদের কাছেই আছেন। মুসলমানতো পৃথিবীর সব জায়গায় আছে, তাই হুযুর আলাইহিস সালামও প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান আছে। দ্বিতীয়ত: আয়াতে বলা হয়েছে- مِنْ اَنْفُسِكُمْ  (তোমাদের আত্মাসমূহের মধ্যে থেকে অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে তার (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) আগমন যেন শরীরের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার হওয়া বা শরীরের শিরা-উপশিরা, এমনকি প্রতিটি কেশাগ্রেও বিদ্যমান; যা প্রত্যেক কিছুর ব্যাপারে সজাগ ও সংবেদনশীল। তদ্রূপ হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক মুসলমানের প্রতিটি কাজকর্ম সম্পর্কে অবগত।
    চোখ সমূহের মধ্যে তিনি বিরাজমান, তবে দৃষ্ঠির মত অদৃশ্য। দিলের মধ্যে এমনভাবেই  বিদ্যমান আছেন। যেমনি ভাবে শরীরের মধ্যে প্রান বিচরন করে। তিনি অপূর্ব এক শানে বিকশিত। আমার মধ্যে রয়েছেন অথচ  আমার দৃষ্টির আড়ালে।

    যদি আয়াতের অর্থ কেবল এটাই হতো-তিনি তোমাদের মধ্যেকার একজন মানুষ, তহলে مِنْكُمْ বলায় যতেষ্ট ছিল। مِنْ اَنْفُسِكُمْ কেন বলা হল?তৃতীয়তঃ আয়াতে আরও বলা হয়েছে عَزِيْزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ অর্থাৎ- যা তোমাদেরকে বিপন্ন করে, তা তাঁর কাছে পীড়াদায়ক। এতে বোঝা গেল  যে,আমাদের সুখ-দুঃখ সম্পকেও হুযুর পুরনুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) প্রতি নিয়ত অবগত। এজন্যই তো আমাদের দুঃখ-কষ্টের ফলশ্রূতিতে তাঁর পবিত্র হৃদয়ে কষ্ট অনুভব হয়। যদি আমাদের খবর ও না থাকে। তবে তার কষ্ট অনুভব হয় কিভাবে? শেষের এ আয়াতাংশটিও আসলে পূর্বোল্লিখিত مِنْ اَنْفُسِكُمْ এরই তাৎপর্য-বিশ্লেষন করে। শরীরে কোন  অঙ্গে ব্যথা বেদনা হলে ,তা আকা মওলা (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম )এর কাছে পিড়াদায়ক ঠেকে।

    (৫)   ۳۹وَلَوْ اَنَّهُمْ اِذْظَّلَمُوْ اَنْفُسَهُمْ جَاَءُوْاكَ فَأسْتَغْفَرُوْا اللهَ وَاسْتَغْفَرَلَهُمُالرَّسُوْالُ لَوَجَدُوا اللهَ تَوَّابًا رَّحِيْمًا
    [এবং যখন ওরা নিজেদের আত্মার প্রতি অবিচার করে, তখন তারা যদি আপনার সমীপে উপস্তিত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষামা প্রার্থনা করে আর আপনি ও তাদের জন্য সুপারিশ করেন, তাহলে নিশ্চয় আল্লাহকে তওবা কবুলকারী, করুণাময় হিসেবে পাবে।]
    এ আয়াত থেকে বোঝা গেল যে, পাপীদের মাগফিরাত বা ক্ষমাপ্রাপ্তির একমাত্র পথ হচ্ছে হুযুর আলাইহিস সালামের মহান দরবারে উপস্থিত হয়ে তাঁর শাফাআত প্রার্থনা করা এবং হুযুর মেহেরবানী করে তাদের জন্য শাফাআত করা। এর অর্থ এ নয় যে, আমাদেরকে মাগফিরাতের জন্য পবিত্র মদীনাতে উপস্থিত হতে হবে। কেননা তাহলে আমাদের মত দরিদ্র বিদেশী পাপীদের ক্ষমাপ্রাপ্তির কি উপায় হবে? ধনাঢ্য ব্যক্তিগনও তো জীবনে একবার কি দু বার সে মহান দরবারে যাবার সামর্থ রাখে। অথচ দিনরাত পাপ পঙ্কিলতায় নিমজ্জিত রয়েছেন। তাই এতে মানুষের সাধ্যাতীত কষ্ঠ হবে। কাজেই আয়াতের মূল বক্তব্য হচ্ছে-তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহিস ওয়াসাল্লাম) তোমাদের কাছেই বিদ্যমান আছেন। তোমরা বরং তার নিকট থেকে দুরে অবস্থান করছো। তোমরা হাযির হয়ে যাও, তিনি তোমাদের প্রতি সুপ্রসন্ন হবেন।
    পরম বন্ধু আমার নিজের চেয়েও কাছে বিদ্যমান। এটাই বিস্ময়কর যে আমি তার নিকট থেকে দুরে রয়েছি।
    এতে বোঝা যায় যে, হুযুর আলাইহিস সালাম সর্বত্র বিদ্যমান।

    এই আয়াত মোতাবেক একজন মরা মানুষ কি ভাবে সুপারিশ করবে ? কারন যারা কবর বানী তারা তো তোমাদের কথা মোতাবেক আমাদের দিকে চেয়ে থাকে দোয়ার জন্য। তাদের তো কোন কিছুই করার ক্ষমতা থাকে না।  তাই না কি ? তা হলে সুপারিশ করবে কে ? 

    (৬)  وَمَا اَرْسَلْنكَ اِلَّارَ حْمَةً لِّلْعَا لَمِيْنَ
     
    [আমি আপনাকে সমগ্র বিশ্বের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি। অন্যত্র বলা হয়েছে-
    وَرَحْمَتِىْ وَسِعَتْ كُلَّشَيْئٍ
    অর্থাৎ  আমার রহমত প্রত্যেক কিছুকেই পরিবেষ্টন করে আছে। বোঝা গেল যে, তিনি (সাল্লাল্লাহু আল্লাইহে ওয়াসাল্লাম) বিশ্ব চরাচরের জন্য রহমত স্বরূপ এবং রহমত সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে আছে। সুতরাং সমগ্র বিশ্বকে পরিবেষ্টন করে রয়েছেন হুযুর আলাইহিস সালাম। স্বরন রাখা দরকার যে, মহা প্রভু আল্লাহর শান হচ্ছে তিনি’ রাব্বুল আলামিন’ (বিশ্বব্রহহ্মন্ডের প্রতিপালক) আর প্রিয় হাবীবের শান হচ্ছে তিনি’ রাহমাতুল্লিল আলামিন’ (বিশ্বব্রক্ষান্ডের প্রতি রহমত স্বরূপ)। স্পষ্টই প্রতীয়মান হল যে, আল্লাহ যার প্রতিপালক, হুযুর আলাইহিস সালাম হচ্ছেন তার প্রতি রহমত স্বরূপ।

    (৭) مَاكَانَ اللهُ لِيُعَذِّ بَهُمْ وَاَنْتَ فِيْهِمْ
    [হে মাহবুব! এটা   আল্লাহর অভিপ্রেত নয়  যে আপনি তাদের মধ্যে থাকাকালে  আল্লাহ তাদের কে শাস্তি প্রদান করবেন।]
    অথাৎ খোদার মর্মন্তুদ  শাস্তি তারা পাচ্ছে না- এজন্য যে আপনি তাদের  মধ্যে রয়েছেন আর সাধারন ও সর্বব্যাপী আযাব তো কিয়ামত র্পযন্ত কোন জায়গায় হবে না। এ থেকে জানা যায় যে হুযুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম  কিয়ামত পর্যন্ত প্রত্যেক জায়গায় বিদ্যমান থাকবেন। এ সম্পর্কে সুপ্রসিদ্ধ ‘তাফসীরে রূহুল বয়ানে বলা হয়েছে, হুযুর আলাইহিস সালাম প্রত্যেক পুণ্যত্মা ও প্রত্যেক পাপীর সাথে বিদ্যামান আছেন। এর বিশদ বিবরণ এ অধ্যায়ের তৃতীয় পরিচ্ছেদে দেয়া হবে। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন-
    وَاعْلَمُوْا اَنَّ فِيْكُمْ رَسُوْلُ اللهِ
    [তোমরা জেনে রেখ, তোমাদের মধ্যে রসুলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বিরাজমান)। এখানে সমস্ত সাহাবায়ে কিরামকে সম্বোধন করা হয়েছে অথচ তারা বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বসবাস করতেন সুতরাং স্পষ্টই বোঝা যায় যে হুজুর আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সব জায়গায় ও তাদের কাছে আছেন।

    এই সকল কিছুই অতি সুক্ষ্ন বিষয়। বার বার পড়ার অনুরোধ করতেছি ও বোঝার চেষ্টা করুন। 

    আশা করি হেদায়াত প্রাপ্ত হবেন। 
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|