★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
কেয়াম কি?ইহা কই প্রকার ও কি কি??এর দলিল কি? - Ja-al-haq Discussions on

কেয়াম কি?ইহা কই প্রকার ও কি কি??এর দলিল কি?

edited February 2016 in Ja-al-haq
ক্বিয়াম

কিয়াম আরবী শব্দ । যার অর্থ সোজা হয়ে দাঁড়ানো । যেন হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌছতে না পারে । প্রচলিত অর্থে রাসূলে আকরাম ﷺ এর বেলাদাত তথা জন্মদিবস স্মরনে আলোচনা সভা, সেমিনার, সেম্পেজিয়াম, জন্মের আগমনী বার্তার অলৌকিক ঘটনাবলী বর্ননাকালে মীলাদ মাহফিলের কোন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে বলবে-
ইয়া নবী সালাম আলাইকা + ইয়া রাসূল সালাম আলাইকা
ইয়া হাবীব সালাম আলাইকা + সালাওয়াতুল্লাহি আলাইকা

বলে কবিতা হামদ-নাত, দরুদ ও সালাম সমবেত কন্ঠে পাঠ করাকে মীলাদের কিয়াম বলা হয় । এ সম্পর্কে আল্লামা ইবনে আবেদীন رحمة الله عليه “ফাতোয়ায়ে শামী”তে লিখেন-
নিশ্চয়ই কিয়াম সেজদায় যাওয়ার জন্য অবনত হওয়ার একমাত্র অসীলা । সিজদা হলো মূল । কেননা কিয়াম ব্যতিত সেজদা ইবাদত হিসেবে গন্য নয় । যেমনঃ সিজদায়ে তেলাওয়াত উহা আদায়ের জন্য কিয়াম প্রয়োজন হয় না । শুধুমাত্র কিয়াম ইবাদতের পর্যায়ভূক্ত করা হয় নি । এমন কি আল্লাহ ছাড়া কাউকে সিজদা করলে কাফির বলা যাবে, কিন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য কিয়াম করলে কাফির বলা যাবে না ।
— ফতোয়ায়ে শামী ২য় খন্ড ১৩২ পৃঃ

আমরা কিয়ামের পরিচয় থেকে বুঝতে পারলাম যে, কিয়াম আলাদা কোন ইবাদত নয় যা অন্যের জন্য করলে কাফির হয়ে যায় ।
কিয়ামের প্রকারভেদ
মীলাদ শরীফের কিয়ামের দলিল পর্যালোচনার আগে কিয়ামের প্রকার জানা একান্ত প্রয়োজন মনে করছি । ইসলামি শরীয়াতে স্থান, কাল ও পাত্রভেদে কিয়াম বিভিন্ন প্রকার হতে পারে । যেমন-
১) ফরজঃ
যেমন- নামাযের ফরয সমূহের মধ্যে কিয়াম করা ফরয ।
২) হারামঃ
যেমন- আরব অনারব ক্ষমতাশীল রাজা বাদশাগণের সম্মানার্থে মূর্তির মত ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে কিয়াম করা ।
৩) সুন্নাতঃ
যেমন- যমযমের পানি পান করার সময়, সিজদায়ে তেলাওয়াতের সময়, অযুর অবশিষ্ট পানি দাঁড়িয়ে পান করা ও কবর যিয়ারতের সময় ।
৪) মাকরুহঃ
যেমন- পার্থিব লালসায় বিনা কারনে দুনিয়াদারী লোকের সম্মানে দাঁড়ানো মাকরুহ ।
৫) মুবাহ্‌ বা বৈধ কিয়ামঃ
যেমন- দুনিয়াবী প্রয়োজনে দাঁড়ানো মুবাহ্‌ । যেমন দাঁড়িয়ে দালান নির্মান করা । দাঁড়িয়ে অন্যান্য দুনিয়াবী কাজ কর্ম সম্পাদন করা ।
৬) মুস্তাহাবঃ
যেমন- শুভ সংবাদ শুনার পর দাঁড়িয়ে যাওয়া ।
৭) কিয়ামুল মুহাব্বাতঃ
যেমন- অভ্যর্থনা ও শুভেচ্ছা জ্ঞাপনের জন্য কোন সম্মানীত ব্যক্তি, ধর্মীয় নেতা, পীর মাশায়েখ ও কোন অতিথির অভ্যর্থনার জন্য দাঁড়ানো ।

৮) কিয়ামে যিকিরঃ
যেমন- দাঁড়ানোর বিভিন্ন প্রকার হতে কিয়াম এক প্রকার যিকির । যেমন- শিক্ষাদানের জন্য শিক্ষকের দাঁড়ানো, খুৎবার জন্য দাঁড়ানো । আর আল্লাহ পাকের হাবীব নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর স্মরণও আল্লাহর স্মরণের অন্তর্ভূক্ত । রাসূলের যিকিরই আল্লাহর যিকির । [1]
৯) কিয়ামে ফারহাতঃ
যেমন- মক্কা বিজয়ের সময় ইকরামা ইবনে আবূ জাহেলের জন্য মহানবী ﷺ এর বসা থেকে আনন্দ চিত্তে দাঁড়িয়ে যাওয়া ।[2]
হযরত জাফর বিন আবু তালেব رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه যখন হাবশা থেকে মদীনা শরীফে হুজুর ﷺ এর দরবারে হাজির হলেন । তাকে দেখে নবীজি ﷺ বললেন, জানিনা আজ আমি জাফরকে পেয়ে আনন্দিত নাকি খায়বর বিজয় করে আনন্দিত । অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে জাফর رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه এর সাথে মোয়ানাকা করলেন এবং তাঁর কপালে চুমু খেলেন ।
১০) কিয়ামুল ইস্তিকবালঃ
যেমন- মানবতার সম্মানে দাঁড়ানো, জানাযার লাশ দেখে দাঁড়ানো শ্রদ্ধাবোধের কারণে হয় । এ সম্পর্কে নবীজী ﷺ থেকে অসঙ্খ্য হাদীস বর্নিত আছে-
রাসূল ﷺ ইরশাদ করেন, যখন তোমরা কোন জানাযা দেখতে তাঁর সম্মানার্থে তোমরা দাঁড়িয়ে যাও । যতক্ষণ যা সে তোমাদের অতিক্রম করে ।
— বুখারী শরীফ ৬৩০৬; নাসায়ী শরীফ ২১২৫, বায়হাকী শরীফ ৬৬৬০, ইবনে হিব্বান ৩০৫১
১১) কিয়াম লিত্‌তাযীমঃ
যেমন- সাহাবায়ে কেরাম নবীর সম্মানার্থে দাঁড়াতেন, নবী ﷺ তাঁর দুধ বাবার জন্য দাঁড়িয়ে যেতেন । আমরা দেখলাম কিয়াম বিভিন্ন ধরনের হতে পারে । মীলাদ শরীফের কিয়াম সে প্রকারেরই অন্তর্ভূক্ত ।
তথ্যসূত্র
Jump up ↑ জাযবুল কুলুব ইলা দিয়ারিল মাহবুব - ১৪ পৃঃ
Jump up ↑ আবূ দাউদ হাশিয়া ৬ঃ ৭০৮ পৃঃ
শরীয়ার কষ্টিপাথরে মীলাদ ও কিয়াম (লেখকঃ মুহাম্মদ ওসমান গনি সালেহী)
...
.......
.....


হাদিসের আলোকে ক্বিয়াম 1
হযরত আবূ সা‘ঈদ খুদরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বর্ণনা করেন, মদীনার একটি ইহুদী সম্প্রদায় বনূ ক্বোরাইযা হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে চুক্তি ভঙ্গ করে খন্দকের যুদ্ধের সময় মদীনা আক্রমন করার অপরাধে মুসলিম বাহিনী কর্তৃক অবরুদ্ধ হয়েছিলো। তারা আত্মসমর্পণের উদ্দেশ্যে যখন হযরত সা’দ ইবনে মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর বিচার মেনে নিতে রাজী হলো, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত সা’দকে আনার জন্য লোক পাঠালেন। হযরত সা’দ ইবনে মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটবর্তী স্থানে তাঁবুতে ছিলেন। হযরত সা’দ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু গাধার পিঠে আরোহণ করে আসলেন। যখন তিনি মসজিদের নিকটবর্তী হলেন, তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মসজিদে উপস্থিত মদীনাবাসী আনসারের উদ্দেশ্যে বললেন-‘‘তোমরা তোমাদের সর্দারের সম্মানে দাঁড়িয়ে যাও।’’
— বুখারী ও মুসলিম এবং মিশকাত বাবুল ক্বিয়াম, পৃষ্ঠা-৪০৩
বর্ণিত হাদীসে নিম্নলিখিত বিষয়াদি লক্ষণীয়
১. ইহুদী সম্প্রদায় বনূ ক্বোরাযাহ্ ৪র্থ কিংবা ৫ম হিজরীতে খন্দক্বের যুদ্ধের সময় হুযূরের সাথে কৃত পূর্বচুক্তি ভঙ্গ করে মুসলমানদের অনুপস্থিতিতে মদীনা মুনাওয়ারা আক্রমণ করে বসে; কিন্তু হুযূরের ফুফু হযরত সফিয়্যাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার অসম সাহসিকতায় কয়েকজন ইহুদী নিহত হয়ে তাদের মৃতদেহ প্রাচীরের বাহিরে নিক্ষিপ্ত হলে বনূ ক্বোরাইযাহ্ পলায়ন করে।

২. খন্দকের যুদ্ধ শেষে হুযূরে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম অবিলম্বে মদীনার উপকণ্ঠে অবস্থিত বনূ ক্বোরাইযার দূর্গ ঘেরাও করেন। দীর্ঘ ২৫ দিনের অবরোধের পর নিরুপায় হয়ে তারা আত্মসমর্পণে রাজী হয়; কিন্তু বিচারকার্যের জন্য তারা নবী করীমকে না মেনে তাদেরই এককালীন আত্মীয় মদীনা মুনাওয়ারার গোত্রের সর্দার হযরত সা’দ ইবনে মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুকে বিচারক করার দাবী জানায়। হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এতে রাজী হন। ওই বিচারে তাদের যুদ্ধক্ষম ৭০০ পুরুষকে হত্যা করা হয় এবং নারী ও শিশুদেরকে দাস-দাসীতে পরিণত করা হয় আর তাদের ধন-সম্পদ সরকারী ‘বাইতুল মাল’-এ জমা করা হয়।
৩. মসজিদে নবভীতে বিচারকার্য অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়। অতঃপর হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হযরত সা’দের কাছে সংবাদ পাঠান।
৪. অসুস্থ সা’দ ইবনে মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু তাঁবু হতে গাধার পিঠে আরোহণ করে হুযূরের খিদমতে উপস্থিত হন। তাঁর অবস্থান ছিলো মসজিদে নবভী শরীফের অতি নিকটে। তিনি খন্দকের যুদ্ধে আহত হয়েছিলেন। তাই গাধার পিঠে করে আসলেন। [1]
৫. যখন হযরত সা’দ ইবনে মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু মসজিদে নবভীর কাছাকাছি পৌঁছলেন, তখন তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা ও তাঁকে সভাস্থলে অভ্যর্থনা জানিয়ে নিয়ে আসার জন্য মদীনাবাসী আনসারকে হুযূর করীম নির্দেশ দিলেন এবং বললেন,
তোমরা আনসারীগণ তোমাদের সর্দারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে দাঁড়াও এবং তাঁকে অবতরণ করতে সহযোগিতা করো।

\m/ Like & Share :-bd Bellow Text for This Post নিচের বক্সের লেখাটি শেয়ার করেন এটা এই পোস্টের লিঙ্ক
কেয়াম কি?ইহা কই প্রকার ও কি কি??এর দলিল কি? http://yanabi.in/u/1c
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|