★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
আহ্‌লে বাইত আহলে বায়তের প্রশংসা ও মর্যাদা আহলে বায়তের বিশেষত্ব আহলে বায়ত সম্পর্কে ভালো বাসার সুফল - Mas'la Masayel Discussions on

আহ্‌লে বাইত আহলে বায়তের প্রশংসা ও মর্যাদা আহলে বায়তের বিশেষত্ব আহলে বায়ত সম্পর্কে ভালো বাসার সুফল

edited February 2016 in Mas'la Masayel
মহান আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
নিশ্চয় আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন হে আহলে বায়ত তোমাদের থেকে যেকোন নাপাকী দূর করতে এবং তোমাদেরকে উত্তমরূপে পাক-পবিত্র করতে।
— সূরা আহযাব, আয়াত নম্বর ৩৩
আয়াতে করীমায় اهل البيت দ্বারা কারা উদ্দেশ্য এ ব্যাপারে তাফসীর কারকদের মধ্যে এখতেলাফ (মতবিরোধ) রয়েছে। ইমাম বাগাভী, ইমাম খাযেন এবং অপরাপর যাদের মধ্যে রাসূলে পাকের সাহাবা আবু সায়ীদ খুদরী, তা’বী মোজাহিদ ও আবু কাতাদাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম প্রমুখ রয়েছেন- তাঁদের মতে اهل البيت দ্বারা اهل العباء তথা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর জুব্বা মোবারকের আহল তথা হযরত আলী, হযরত ফাতেমা, ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুম উদ্দেশ্য।
আরেকটি জামাত (তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস ও ইকরামা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা রয়েছেন)-এর । তাঁদের মতে اهل البيت দ্বারা امهات المومنين অর্থাৎ ঈমানদারদের মা তথা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সহধর্মিনীগণ উদ্দেশ্য। তাঁরা দলীল হিসেবে বলেন যে يا ايها انبى قل لازواجك থেকে انالله لطيفا خبير পর্যন্ত সাতটি আয়াত ধারাবাহিক ভাবে امهات المومنين এর সাথে সম্পর্কযুক্ত। সুতরাং মাঝখানে উপরিউক্ত চার জনের কথা আসতে পারে না।
আর যাঁরা امهات المومنين দ্বারা উপরোক্ত চার জন উদ্দেশ্য করেছেন-তাঁরা তাঁদের জবাবে (যাঁরা اهل البيت দ্বারা امهات المومنين উদ্দেশ্য করেছেন) বলেন এ বাক্যটি মাঝখানে جمله معترضة (এমন বাক্য যাপূর্বাপর বাক্যের সাথে সম্পর্ক রাখেনা) হিসেবে এসেছে। এ ধরনের বাক্য আরবি ভাষার মধ্যে ব্যাপক। তাঁরা আরও বলেন, সহীহ সনদ দ্বারা সাবেত আছে যে, নবীজি সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম আসলেন, তাঁর সাথে হযরত আলী, হযরত ফাতেমা ও হাসনাইন করীমাইন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম আছেন-তিনি তাঁর ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলেন এবং হযরত আলী ও হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমাকে নিজের নিকটবর্তী করে সামনে বসালেন এবং হাসনাইন করীমাইনকে স্বীয় উরূর উপর বসালেন এবং তাঁদের উপর চাদর টেনে দিলেন এবং তেলাওয়াত করলেন
انما يريد الله ليذهب عنكم الرجس اهل البيت ويطهركم تطهيرا
আরেকটি রেওয়াতের মধ্যে আছে তিনি (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) বললেন
হে আল্লাহ্‌ !এরা আমার আহলে বায়ত। তাদের থেকে যে কোন ধরনের নাপাকী দূর করে দিন এবং তাঁদের পরিপূর্ণরূপে পূতঃপবিত্র করুন। তখন উম্মুল মু’মিনিন উম্মে সালমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা চাদরটি তুললেন এতে প্রবেশ করার জন্য। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম তাঁর থেকে ওটা (চাদরটি) টেনে নিলেন-তখন তিনি আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি আপনাদের সাথে এ চাদরে অন্তর্ভূক্ত হতে চাই। তখন রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বললেন - তুমি নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামের সহধর্মিণীগণ থেকে। তাই বেহতরির উপর আছ।
— বরকাতে আলে রাসূল, পৃষ্ঠা ৩৪
সুতরাং আহলে বায়ত দ্বারা কারা উদ্দেশ্য এ ব্যাপারে দুটি দল সাব্যস্ত হল। এবং উভয় দলের জন্য স্বতন্ত্র দলীলও রয়েছে। সেজন্য প্রখ্যাত ওলামায়ে কেরাম বলেছেন, আয়াতে করীমায় اهل البيت দ্বারা امهات المومنين এবং انفوس الخمسة القدسية অর্থাৎ রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামের সহধর্মিণীগণ ও পাক পঞ্জতন উভয়ই উদ্দেশ্য। আর তাঁরা এ কথার দিকে এ জন্যেই গিয়েছেন যে, যেন সমস্ত দলীলের সাথে আমল হয়ে যায়।
তথ্যসূত্র
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী।।

♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥♥
আহলে বায়তের প্রশংসা ও মর্যাদা::::::::
......
হুযূর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম যখন আহলে বায়ত তথা হাসানাইন করীমাইন, হযরত আলী ও হযরতে ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমকে নিয়ে নাসারাদের সাথে মোবাহালার জন্য আসলেন, তখন তাদের বড় পাদ্রী আবদুল মসীহ বললেন-
আমি এমন কতেক চেহারা দেখছি যদি তাঁরা আল্লাহর কাছে কোন পাহাড়কে এর স্থান থেকে সরিয়ে দিতে চান তাহলে তিনি (আল্লাহ্) তা সরিয়ে দেবেন।
— খুতবাতে মুহররম পৃষ্ঠা-২২৮
হযরত যায়েদ বিন আরকাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম মক্কা-মদীনার মাঝখানে খুম্মা নামক স্থানে আমাদের মাঝে বক্তব্য দানকারী হয়ে দাঁড়ালেন প্রথমে তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন এবং উপদেশ ও স্মরণ করিয়ে দিলেন অতঃপর বললেন,সুতরাং এর পর হে মানবমন্ডলী তোমরা শোন, নিশ্চয় আমি এক জন মানব। আমার প্রভুর দূত আমার কাছে আসা নিকটবর্তী। ফলে আমি সাড়া দেব।আর আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি। প্রথমটি আল্লাহর কিতাব এর মধ্যে আয়াত ও নূর রয়েছে। সুতরাং তোমরা আল্লাহর কিতাবকে গ্রহণ কর ও একে আকঁড়ে ধর। অতএব আল্লাহর কিতাবের উপর উৎসাহ প্রদান করলেন এবং এটার ব্যাপারে প্রেরণা দিলেন। এরপর বললেন - দ্বিতীয়টি হল আমার আহলে বায়ত। আমি তোমাদেরকে আমার আহলে বায়তের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, আমি তোমাদেরকেআমার আহলে বায়তের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
— মিশকাতুল মাসাবীহ, পৃষ্ঠা -৫৬৮
হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামকে তাঁর হজের সময় আরফার দিন খুতবা প্রদান করতে দেখলাম। এমতাবস্থায় তিনি তাঁর কছওয়া নামক উটনির উপর। সুতরাং তাঁকে আমি বলতে শুনলাম-অর্থাৎ হে মানবমন্ডলী! আমি তোমাদের মধ্যে যে জিনিস রেখে যাচ্ছি যদি তোমরা তা আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে পথভ্রষ্ট হবে না। একটি আল্লাহর কিতাব। আর অপরটি আমার বংশধর আমার আহলে বায়ত।
— তিরমিযি, মিশকাত পৃষ্ঠা -৫৬৯

তররানী শরীফে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-

কোন বান্দা পূর্ণ ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ আমাকে তাঁর নিজের প্রাণের চেয়ে, আমার আওলাদকে নিজের আওলাদের চেয়ে,আমার আহলে বায়তকে নিজের আহল (পরিবার-পরিজন) থেকে এবং আমার সত্তাকে নিজের সত্তা থেকে অধিক ভালোবাসবে না।
— আশশারফুল মুয়ায়্য়দ, পৃষ্ঠা-৮৯, খুতবাতে মুহররম পৃষ্ঠা -২৩৩
ইমাম আহমদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বর্ণনা করেছেন,

নবীজী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমার হাত ধরলেন এবং বললেন-যে আমাকে ভালোবাসে, এ দু’জনকে ভালোবাসে, তাদের মা এবং তাঁদের বাবাকে ভালোবাসে সে কিয়ামতের দিন আমার সাথে আমার স্তরে হবে।।
— আশরাফুল মুয়ায্যদ, পৃষ্ঠা-৮৬, খুতবাতে মুহররম-২৩৪
হযরত আবু জর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু কা’বা ঘরের দরজা ধরে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি - সাবধান হয়ে যাও যে, আমার আহলে বায়ত তোমাদের জন্যে নূহ আলায়হিস সালামের কিসতির (নৌকা) মতো, যে ব্যক্তি এতে (কিশতিতে) আরোহণকরেছিল সে নাজাত পেয়েছিল। আর যে ব্যক্তি আরোহণকরা হতে বিরত রয়েছিল সে ধ্বংস হয়েছিল।
— মিশকাতুল মাসাবীহ, পৃষ্ঠা-৫৭৩
হযরত ওমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-মুফতি জালালুদ্দীন আহমদ আমজাদী ‘খুতবাতে মুহররম’ কিতাবের মধ্যে বলেন, সহীহ হাদীসের মধ্যে রয়েছে যেমন আহলে সুনানের অনেকে বর্ণনা করেছেন যখন আবু লাহাবের মেয়ে মদীনা মুনাওয়ারায় হিজরত করে আসলেন, তখন কোন কোন লোক বলতে লাগল তোমার হিজরত তোমার কোন কাজে আসবে না। কেননা তুমি জাহান্নামের ইন্ধনের মেয়ে। তখন তিনি (আবু লাহাবের মেয়ে) এটা রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামকে বললেন। তখন তিনি (রাসূলে পাক) অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হলেন এবং মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে ঘোষণা দিলেন লোকদের কী অবস্থা যারা আমার নসব(বংশধর) এবং আমার আত্মীয়-স্বজনদের ব্যাপারে আমাকে কষ্ট দেয়। খবরদার যে আমার নসব ও আমার আত্মীয়-স্বজনকে কষ্ট দিল সে আমাকেই কষ্টদিল। আর যে আমাকে কষ্ট দিল সে আল্লাহকেই কষ্ট দিল।
— বরকাতে আলে রাসূল,পৃষ্ঠা-২৫৭ এবং খুতবাতে মুহররম, পৃষ্ঠা-২৩৫
তথ্যসূত্র
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী।।

♥♥♥♥♥♥♥
আহলে বায়তের বিশেষত্ব::::::
....
অসংখ্য ও অগণিত যা গুণে শেষ করা যাবে না। তবে কতিপয় বিশেষত্ব ফকিহে মিল্লাত মুফতি জালালুদ্দীন আহমদ আমজাদী তাঁর রচিত কিতাব ‘‘খুতবাতে মুহররম’’-এর মধ্যে উলে­খ করেছেন। সেগুলো নিম্নরূপ-
আহলে বায়তের জন্য যাকাত ও ফরজ সদকা হালাল নয়, যদিও তাঁরা নেসাবের মালিক না হন। মুসলিম শরীফে আবদুল মোত্তালিব ইবনে রবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
যাকাতের মাল হল মানুষের গুনাহের ময়লা-কছলা। আর অবশ্যই এটা মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামও আলে মুহাম্মদ তথা বনু হাশেম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম-এর জন্য জায়েয নয়।
— মিশকাত, পৃষ্ঠা-১৬১
আল্লাহ্‌ তা‘আলা তাঁর নবী (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম)কে বলেন-
হে হাবীব! আপনি তাদের (ধনীদের) মাল থেকে যাকাত নিন সে যাকাত দ্বারা তাদেরকে পাপমুক্ত করুন এবং তাদেরকে পাক-পবিত্র করুন।
— পারা-১১,রুকু-২
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হাসান ইবনে আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু যাকাতের একটি খেজুর নিলেন এবং মুখে রাখলেন, তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, ছি! ছি! যেন তিনি (হযরত হাসান) এটা নিক্ষেপ করেন। এরপর তিনি (নবীজী) বললেন, কী তোমার জানা নেই ? যে আমরা যাকাত খাইনা।
— বুখারী, মুসলিম, মিশকাত-১৬১পৃষ্ঠা
হযরত আবু রাফে’ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বনু, মাখযুমের একজন পুরুষকে যাকাতের মাল উশুল করার জন্য নিয়োগ করে প্রেরণ করলেন, তিনি (পুরুষটি) আবু রাফে’ (তথা রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর আযাদকৃত গোলাম) কে বললেন, আপনি আমার সাথে চলুন, যেন আপনিও যাকাত হতে মেহনতের অংশ হিসেবে কিছু পেয়ে যান। তখন হযরত আবু রাফে’ বললেন, ‘না’। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি হুজুরের খেদমতের মধ্যে হাজির হয়ে তাঁর থেকে জেনেনেব না। (এরপর আবু রাফে’ হুযূরের খেদমতে হাজির হয়ে সে লোকের সাথে যাকাতের মাল উশুলের জন্য এজাযত তালাশ করলে হুজুর ঘোষণা দিলেন, অবশ্যই যাকাত আমাদের জন্য হালাল নয়। আর কওম তথা বনু হাশেমের আযাদকৃত গোলাম তাঁদের নিজেদের হুকুমে। (অর্থাৎ আমরা বনু হাশেম ও আমাদের আযাদকৃত গোলামের জন্য যাকাত হালাল নয়।) ।
— মিশকাত, পৃষ্ঠা -১৬১

এ জন্য হানাফি ফিকহের কিতাবে এসেছে যে, বনু হাশেম এমনকি বনু হাশেমের আযাদকৃত গোলামের জন্য যাকাত জায়েয নয়। আর বনু হাশেম দ্বারা উদ্দেশ্য হল-হযরত আলী, হযরত জা’ফর, হযরত আকিল, হযরত আব্বাস ও হযরত হারেস বিন আবদুল মোত্তালিব রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম-এর আওলাদ।
আহলে বায়ত বংশ ও আভিজাত্যের ক্ষেত্রে সকল মানুষের সেরা ও সর্বোচ্চ। [1]
হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, অবশ্যই তিনি নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট আসলেন যেন তিনি (তাঁর নসব কিংবা হাসবের ক্ষেত্রে সমালোচনার) কিছু শুনলেন। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বললেন, আমি কে? অতঃপর তিনি (আব্বাস) উত্তর দিলেন, আপনি আল­াহর রাসূল। তখন তিনি (হুজুর) বললেন, আমি মুহাম্মদ ইবনে আবদুল­াহ্ ইবনে আবদুল মোত্তালিব। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ সমস্ত সৃষ্টিকে পয়দা করলেন, আমাকে তাঁদের সর্ব সেরার মধ্যে করলেন। তারপর তাদেরকে দু’দলে করলেন। আমাকে তাদের উত্তমদের দলে করলেন। অতঃপর তাদেরকে বিভিন্ন গোত্রে করলেন। আমাকে তাদের সেরা গোত্রে করলেন। তারপর তাদের বিভিন্ন ঘরে করলেন। আমাকে তাদের সর্ব সেরা ঘরে করলেন। সুতরাং আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সকলের মধ্যে সর্বোত্তম । আর ঘরের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে (আমার ঘর) সর্ব সেরা ঘর।
— মিশকাত, পৃষ্ঠা-৫১৩
কিয়ামতের দিন সকল আত্মীয়ের সম্পর্ক ও বংশের সম্পর্কবিচ্ছেদ হয়ে যাবে। তবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা’আলাআলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে আত্মীয়ের সম্পর্ক ও বংশের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হবে না। সহীহ রেওয়াতের মধ্যে এসেছে যে, হযরত ওমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে প্রস্তাব দিলেন যে, তিনি (আলী) যেন নিজের কন্যাকে (উম্মে কুলসুমকে) তাঁর (ওমরের রাদ্বি.) কাছে বিয়ে দেন। তখন তিনি (আলী) স্বীয় মেয়ের কম বয়সের ওজর পেশ করলেন। আর বললেন, আমি তাকে আমার ভাই জাফরের ছেলেকে বিয়ে দিতে চাই। তখন হযরত ওমর বারবার অনুরোধ জানালেন। আর মিম্বরের উপর আরোহণ করে নবীজীর হাদীস উলে­খ করলেন-
প্রত্যেক সম্পর্ক,নসবের সম্পর্ক ও বৈবাহিক সম্পর্ক কিয়ামতের দিন বিচ্ছেদ হয়ে যাবে, তবে আমার সাথে সম্পর্ক, আমার বংশের সম্পর্ক ও আমার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছেদ হবে না।
— আশশারফুল মুয়ায়্য়দ-পৃৃষ্ঠা-২২

ফলে হযরত আলী স্বীয় কন্যা উম্মে কুলসুমকে হযরত ওমরের সাথে বিয়ে দেন।
‘আশরাফ’ শব্দটি শুধু আহলে বায়তের জন্য সাহাবা কেরামের যমানায় ব্যবহৃত হত। তারপর এ লকবটি হাসানী ও হোসাইনী সাদাতের জন্য খাস হয়ে গেল। আর এ পরিভাষা অর্থাৎ ‘সৈয়্যদ’ শব্দটি শুধুমাত্র হাসানী ও হোসাইনী সাদাতের জন্য ব্যবহৃত হওয়াটা অনেক দেশের মধ্যে ব্যাপক হয়ে গেল। সুতরাং তারা যেন নিম্নে উদ্ধৃত এ হাদীস হতে উপদেশ গ্রহণ করে যারা নিজেদের নসব ভুল বলে। হাদীসটি নিম্নরূপ-
যে ব্যক্তি স্বীয় পিতা ব্যতীত অপর কারও প্রতি নিজকে নিসবত করে তার উপর আল্লাহ্‌, ফেরেশতাকুল ও সকল মানুষের লানত। (কিয়ামতের দিন)আল্লাহ্‌ তার কোন ফরজও কবুল করবেন না এবং কোন নফলও কবুল করবেন না।।
— ফতোয়ায়ে রেজভিয়া, ৫ম খন্ড, ৬৬৭পৃষ্ঠা
আহলে বায়তের কেউ আমল না করলেও তাঁদেরকে তা’জীম করা কর্তব্য। হিন্দুস্থানের মুফতিয়ে আজম আল­ামা মোস্তাফা রেজা খান রাহমাতুল­াহি আলায়হি বলেছেন-
সৈয়্যদ থেকে যতক্ষন পর্যন্ত কুফর প্রকাশ না পায় তাঁকে তা’জীম ও সম্মান করা মানুষের উপর ওয়াজিব।
কেননা তাঁকে ক্ষমা করা হবে এবং আল্লাহ্‌ তাঁর গুনাহ্ মাফ করে দেবেন-যদিও মৃত্যুরপূর্বে তিনি তাওবা করেন। কেননা আল্লাহ্‌ তা’আলা তাদের শানে বলেছেন-
انم يريد الله ليذهب عنكم الر جس اهل البيت ويتطهرا

নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা নিজের পুত পবিত্রতা রক্ষা করেছেন। ফলে আল্লাহ্‌ তাঁকে এবং তাঁর আওলাদকে জাহান্নামের জন্য হারাম করে দিয়েছেন।
— আশশরাফুল মুয়ায়্য়দ, পৃষ্ঠা-৪৫
আহলে বায়ত যদিও হযরত ফাতেমা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহার আওলাদ কিন্তু তাঁদেরকে আওলাদে রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) বলা হয়। যেমন ইমাম তবরানী বর্ণনা করেছেন যে, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
আল্লাহ্‌ আয্যা ও জাল্লাহ প্রত্যেক নবীর আওলাদ তাঁর পৃষ্ঠে করেছেন এবংনিশ্চয় আল্লাহ্‌ তা’আলা আমার আওলাদ হযরত আলী ইবনে আবু তালেবের পৃষ্ঠে করেছেন।
— আশশারাফু মুয়ায়্য়দ, পৃষ্ঠা-৪৮
আহলে বায়ত দুনিয়াবাসীর জন্য নিরাপত্তার মাধ্যম। যেমন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
আকাশের তারকাসমূহ আকাশের অধীবাসীদের জন্য নিরাপত্তার মাধ্যম। আর আমার আহলে বায়ত দুনিয়াবাসীর জন্য নিরাপত্তার উসিলা। এবং অপর রেওয়ায়তে আছে আমার উম্মতের নিরাপত্তার মাধ্যম।
— আশশারফুল মুয়ায়য়দ, পৃষ্ঠা-৪৬
আহলে বায়ত সর্বপ্রথম বেহেশতে প্রবেশ করবেন। যেমন ইমাম ছালভী হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে রেওয়ায়েত করেছেন যে, নিশ্চয় তিনি (আলী) বলেন,
আমি নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট মানুষের হিংসার অভিযোগ করলাম। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন- তুমি কী একথায় খুশী হবে যে, নিশ্চয় নিশ্চয় তুমি চারজনের চতুর্থজন হবে। যেহেতু অবশ্যই আমি প্রথমে জান্নাতে প্রবেশ করব। এরপর তুমি, এরপর হাসানাইন করীমাইন। আর আমার পুতঃপবিত্র সহধর্মিনীগণ আমার ডানে ও বামে থাকবেন। আর আমার আওলাদগণ আমার সহধর্মিণীদের পেছনে থাকবেন।
— বরকাতে আলে রাসূল
যে ব্যক্তি আহলে বায়তে রাসূল রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুম-এর প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম কিয়ামতের দিন তাকে এ অনুগ্রহের বিনিময় দান করবেন। যেমন নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
যে ব্যক্তি উসিলা চায় এবং চায় যে তার কোন খেদমত আমার নিকট কবুল হোক যার বদৌলতে আমি তার জন্য কিয়ামত দিবসে সুপারিশ করব। তাহলে তার জন্য আবশ্যক আমার আহলে বায়তের খেদমত করা এবং তাদেরকে খুশি করা।
আল­ামা ছবান বলেন,
আহলে বায়তকে ভালোবাসা আখেরাতে চেহারা উজ্বল ও নূরানী হওয়া এবং দুনিয়াতে হায়াত বৃদ্ধি হওয়ার উসিলা।
যেমন صواعق محرقة নামক কিতাবে আছে, নিশ্চয় নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
যে ব্যক্তি তার হায়াত দীর্ঘ হওয়া চায় এবং তার আশা আল্লাহ্‌ কবুল করা চায় তার জন্য আবশ্যক আমার আহলে বায়তকে ভালোবাসা এবং তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা। আর আমার পর যে তাঁদের প্রতি সদ্ব্যবহার করবে না তারহায়াত কমে যাবে এবং সে কিয়ামত দিবসে আমার কাছে চেহরা মলিন অবস্থায় আসবে।
— ছওয়ায়েকে মুহরেকা, পৃষ্ঠা ১০৭
তথ্যসূত্র
Jump up ↑ খুতবাতে মুহররম পৃষ্ঠা -২৪৩
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী।।
♥♥♥♥♥♥♥
আহলে বায়ত সম্পর্কে সলফ ও খলফের আকাবেরদের অভিমত;::::::::
.....
এ উম্মতের আকাবেরদের সরদার সায়্যিদুনা আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর আত্মীয়ের খেদমত করা আমার আত্মীয়ের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার চেয়ে উত্তম।
— আশশারফুল মুয়ায়য়দ, পৃষ্ঠা-৭৮
যখন কোন লোক ইমাম শাফেয়ী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে রাফেজী বলল-এ জন্যেযে তিনি আহলে বায়তের বড় প্রেমিক। তখন তিনি উত্তর দিয়ে ছিলেন-
যদি আলে রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর মহব্বতেরই নাম রাফেজী হয়। তাহলে জ্বীন ও ইনসান যেন সাক্ষী হয়ে যায় যে, এ অর্থে নিশ্চয় আমি রাফেজী।
ইমাম শাফেয়ী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি আক্বিদত ও জযবায়ে মহব্বতের মধ্যে আহলে বায়ত কে খেতাব করে বলেন-
হে রাসূলুল্লাহ্‌! (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) এর আহলে বায়ত, আপনাদের মহব্বত আল্লাহ্‌ তা’আলার পক্ষ থেকে ফরজ। এ হুকুম তিনি ক্বোরআনে পাকে নাযিল করেছেন। আর সে আয়াত হল-
হে মাহবুব!আপনি বলে দিন এর (তাবলিগে দ্বীন) উপর তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাইনা তবে (আমার) নিকটতমদের মুহব্বত চাই।
— পারা-২৫, রুকু-৩
আলে রাসূলে সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর আজমত ও বুযর্গী প্রকাশ করে ইমাম শাফেয়ী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি আরও বলেন-
হে আলে রাসূল! আপনাদের জন্য এ মহান গৌরব যথেষ্ট যে, যে ব্যক্তি আপনাদের উপর দরূদ শরীফ পড়ে না, তার নামায হয় না।

রাসূলে পাকের জলীলুল কদর সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ্‌ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন-আলে রাসূল (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম) -
এর একদিনের মহব্বত এক বছরের ইবাদতের চেয়ে উত্তম।
[1]
তথ্যসূত্র
Jump up ↑ আশশারফুল মুয়ায়্য়দ, পৃষ্ঠা-৮৭
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী।।
আহলে বায়তের মহব্বতের সুফল::::
....
قل لا اسئاكم عليه اجرا الا الموة في القربى -আয়াতের তাফসীরে আল্লামা ইমাম রাযী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি তাফসীরে কাশ্শাফ হতে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেছেন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন-
অর্থাৎ-যে ব্যক্তি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধরকে মুহব্বত করে মৃত্যু বরণ করলেন-তিনি শাহাদাতের মৃত্যু পেলেন।
অর্থাৎ-সাবধান হয়ে যাও! যে ব্যক্তি আহলে বায়তের মহব্বত করে মৃত্যু বরণ করলেন, তার সমস্ত গুনাহ্ মাফ করে দেওয়া হল।
খবরদার, যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করে করে মৃত্যু বরণ করতে পারলেন, তিনি পূর্ণ ঈমানদার অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলেন।
শুন,যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মুহব্বত করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলেন তিনি তায়েব অর্থাৎ-তাঁর তাওবা কবুল হওয়া অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলেন।
শুন যে, যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করা অবস্থায় মুত্যু বরণ করলেন, তাকে মালাকুল মওত (আজরাঈল আলায়হিস সালাম) বেহেশতের শুভ সংবাদ দান করেন। তার পর মুনকার ও নকীর নামক ফেরেশতা কবরে বেহেশতের শুভ সংবাদ দান করবেন।
সতর্ক হও! যেব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করা অবস্থায় মৃত্যু বরণ করে তাকে এমন ইজ্জতের সাথে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হবে-যেভাবে কনেকে বরের ঘরের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
হে দুনিয়াবাসী শোন, যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করে করে মৃত্যু বরণ করে তার কবরে জান্নাতের দিকে দুটি দরজা খুলে দেওয়া হয়।
হুশিয়ার! যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করে মৃত্যু বরণ করতে পারেন-আল্লাহ্‌ তার কবরকে ফেরেশতাদের জেয়ারতগাহ্ বানিয়ে দেন।
সাবধান হও! যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে মহব্বত করা আবস্থায় মৃত্যু বরণ করলেন-তিনি আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বিদার উপর মৃত্যু বরণ করলেন।
তথ্যসূত্র
তাফসীরে কবির, আল্লামা ফখরুদ্দিন রাযী رحمة الله عليه
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী।।
♥♥♥♥♥
আহলে বায়তের প্রতি দুশমনির কুফল:::::
....
রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেন, সাবধান হও! যে ব্যক্তি আহলে বায়তের প্রতি দুশমনি রেখে মারা যায় সে কিয়ামত দিবসে হাজির হবে এমতাবস্থায় তার দু'চোখের মাঝখানে আল্লাহ্‌র রহমত হতে নৈরাশ লেখা থাকবে।
তিনি (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম )আরও বলেন, সতর্ক হও,যে ব্যক্তি আহলে বায়তের প্রতি শত্রুতা রেখে মারা যায়, সে কাফের হয়ে মারা যায়।
তিনি (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম)আরও বলেন, সাবধান হও, যে ব্যক্তি আহলে বায়তকে ঘৃণা করে মারা যায়, সে জান্নাতের ঘ্রাণ পাবে না।
— তাফসীরে কবির, পৃষ্ঠা -৩৯০
ইমাম তবরানী ও ইমাম হাকেম রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা হযরত আবদুল্লাহ্‌ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুমা হতে বর্ণনা করেছেন যে, অবশ্যই নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লামবলেন যে, যদি কোন পুরুষ কা’বা শরীফের রুকন ওয়া মকামে ইব্রাহীমের মাঝখানে আরোহণ করে নামায পড়ে এবং রোযা রাখে তার পর সে মারা যায় এমতাবস্থায় সে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম-এর আহলে বায়তের প্রতি দুশমনি পোষণ করে, তাহলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
— আশশারফুল মুয়ায়্‌য়দ, পৃষ্ঠা-৯৮
তথ্যসূত্র
তাফসীরে কবির, আল্লামা ফখরুদ্দিন রাযী رحمة الله عليه
মাসিক তরজুমান, মহররম, ১৪৩৫ হিজরী, লেখক- সহাকারী অধ্যাপক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া, চট্টগ্রাম।

ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻚ ﻳﺎﺳﻴﺪﻱ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ
সম্মানীত নববী পরিবার
হযরত আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিরোধিতাকারীরা জাহান্নামী।
বিখ্যাত ছাহাবী হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
لوان رجلا صعد بين الركن والمقام فصلى وصام ثم مات وهو مبغض لاهل بيت النبى صلى الله عليه وسلم دخل النار.
অর্থ: “যদি কোনো ব্যক্তি বাইতুল্লাহ শরীফ উনার হাজরে আসওয়াদ ও মাক্বামে ইবরাহীম উনার মধ্যে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করে এবং রোযাও রাখে, কিন্তু সে হযরত আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষভাব রেখে মৃত্যুবরণ করে, নিশ্চয়ই সে জাহান্নামে যাবে।” নাউযুবিল্লাহ! (খছায়েছুল কুবরা)
অপর এক পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من مات على بغض ال محمد صلى الله عليه وسلم لم يشم راحة الجنة
অর্থ: “যারা হযরত আহলে বাইত শরীফ ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষভাব রেখে মৃত্যুবরণ করবে, তারা পবিত্র জান্নাত উনার সুঘ্রাণ পর্যন্ত পাবে না।” নাউযুবিল্লাহ! (তাফসীরে রূহুল বয়ান)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
من ابغض اهل البيت فهو منافق.
অর্থ: “হযরত আহলে বাইত ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি যে ব্যক্তি বিদ্বেষভাব রাখবে, সে মুনাফিক।” নাউযুবিল্লাহ!
উল্লেখ্য, বর্তমানে ওহাবী, নজদী, সালাফী, খারিজী, মওদুদী, জামাতী, তাবলীগী, দেওবন্দী এরা সবাই হযরত আহলে বাইত আলাইহিমুস সালাম ও আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণকারী দল। এদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত।

\m/ Like & Share :-bd Bellow Text for This Post নিচের বক্সের লেখাটি শেয়ার করেন এটা এই পোস্টের লিঙ্ক
আহ্‌লে বাইত আহলে বায়তের প্রশংসা ও মর্যাদা আহলে বায়তের বিশেষত্ব আহলে বায়ত সম্পর্কে ভালো বাসার সুফল http://yanabi.in/u/1b
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|