★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
কবরের পাশে কোরআন তেলাওয়াত এর দলিল সকল কে পড়ার সুজগ করে দিন। - Mas'la Masayel Discussions on

কবরের পাশে কোরআন তেলাওয়াত এর দলিল সকল কে পড়ার সুজগ করে দিন।

edited February 2016 in Mas'la Masayel
ﺍﻟﺼﻼﺓ ﺍﻟﺴﻼﻡ ﻋﻠﻴﻚ ﻳﺎﺳﻴﺪﻱ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﷺ . . এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে, ‘হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না! হে আমাদের রব্ব, নিশ্চয় আপনি অতি দয়ার্দ্র, দয়াময়। — আল-কুরআন, ৫৯:১০ তাফসীরে ইবনে কাসীরে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখা হয়: (এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে) এই আয়াতের মানে তারা যে বক্তব্য দেয়; (হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না) অর্থাৎ, কোনো রাগ বা ঈর্ষা; (আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না) সত্যি, এটি একটি উত্তম পন্থা যে ইমাম মালেক (رحمة الله عليه) এই সম্মানিত আয়াতটি দেখিয়েই ঘোষণা করেছেন যে সাহাবা-এ-কেরাম (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه)-এর প্রতি অভিসম্পাত দানকারী রাফেযী (শিয়া)-রা এই রহমত-বরকতের শরীকদার হওয়া থেকে বঞ্চিত। কারণ আল্লাহ এখানে যে সৎগুণের কথা উল্লেখ করেছেন তা তাদের নেই, যেমনটি এরশাদ হয়েছে (হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না! হে আমাদের রব্ব, নিশ্চয় আপনি অতি দয়ার্দ্র, দয়াময়)। ইবনে হাতিম লিপিবদ্ধ করেন যে হযরত মা আয়েশা (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه) বলেন, ’তাদেরকে যখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলো, তখন তারা উল্টো তাঁদেরকে অভিসম্পাত দিলো।’ অতঃপর মা আয়েশা (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه) এই আয়াতটি তেলাওয়াত করেন - (এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে, ‘হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না)। — তাফসীরে ইবনে কাসীর ওপরে উল্লেখিত আয়াতটি পরিস্ফুট করে যে কেউ অপর কারো জন্যে দোয়া করলে আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি এর আধ্যাত্মিক সুবিধাগুলো পাবেন। এটি আরও প্রতিভাত করে যে এই কাজটি ভুল (বা গোমরাহী) হলে আল্লাহ এভাবে অন্যদের জন্যে আমাদেরকে দোয়া করতে নির্দেশ দিতেন না। আর এ কথাও তিনি তাঁর কালামে পাকে বলতেন না যে বেসালপ্রাপ্তদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীরা আল্লাহর প্রশংসা (তথা আশীর্বাদ) অর্জন করেন। ..... .. হাদীস শরীফ থেকে প্রমাণ দলিল নং - ১ ইমাম বোখারী ও ইমাম মুসলিম লেখেন: এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ ( ﷺ)-এর দরবারে এসে আরয করেন, ‘(হে আল্লাহর রাসূল ﷺ) আমার মা অকস্মাৎ ইন্তেকাল করেছেন এবং তিনি কোনো অসিয়ত (উইল) করে যাননি। তবে আমার মনে উদয় হয়েছে, তিনি তা চাইলে হয়তো কোনো দান-সদকা করার কথা আমাকে বলতেন। এক্ষণে আমি তাঁর পক্ষ থেকে কোনো দান-সদকাহ করলে তিনি কি এর সওয়াব পাবেন?’ মহানবী ( ﷺ) জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ।’ এমতাবস্থায় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘হে রাসূল ( ﷺ), আমি আপনাকে আমার (খেজুর) ফলে পরিপূর্ণ বাগানটি সদকাহ হিসেবে দানের ব্যাপারে সাক্ষী করলাম’। — (আল-বোখারী, ‘অসিয়ত’ অধ্যায়, ৪র্থ খণ্ড, বই নং ৫১, হাদীস নং ১৯)(মুসলিম শরীফ, ‘অসিয়ত‘ অধ্যায়, বই নং ১৩, হাদীস নং ৪০০৩) এই হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইন্তেকালপ্রাপ্তদের পক্ষে কোনো দান-সদকাহ করা হলে তা ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে সুফল বয়ে আনে। . . দলিল নং - ২ ইমাম বোখারী (رحمة الله عليه) লেখেন: মহানবী ( ﷺ) এরশাদ ফরমান, ‘(কবর জীবনে) ইন্তেকালপ্রাপ্তের মর্যাদা উন্নীত করা হলে তিনি আল্লাহর কাছে এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। আল্লাহতা’লা জবাবে বলেন, তোমার পুত্র তোমার জন্যে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করেছে’। — আল-বোখারী, আল-আদাব আল-মোফিদ, ‘পিতা-মাতার শ্রেষ্ঠত্ব/মাহাত্ম্য’ অধ্যায় এই বিশেষ হাদীস থেকে উপলব্ধি করা যায় যে কেবল দান-সদকাহ-ই নয়, বরং দোয়া ও আর্থিক সাহায্য করাও ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে খোদায়ী আশীর্বাদ বয়ে আনে। . . দলিল নং - ৩ নবী পাক ( ﷺ) এরশাদ করেন, “এটি (সূরা এয়াসিন) ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তির কাছে (’ইনদা) পাঠ করো।” — সুনানে ইবনে মাজাহ, কিতাবুল জানায়েয # ১৪৩৮ ’সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারী আরও বলেন, হুযূর পাক ( ﷺ)-এর ‘ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি’ এই বাণীর উদ্দেশ্য ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি অথবা (’আও’) ইন্তেকালপ্রাপ্ত (বা’দ) ব্যক্তিও। — শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ আল-সনদি, প্রাগুক্ত ‘সুনানে আবি দাউদ’ পুস্তকের ’আওন আল-মা’বুদ শরহে সুনানে আবি দাউদ’ শীর্ষক ব্যাখ্যাগ্রন্থে বিবৃত হয়: এবং নাসাঈ (শরীফে) হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه:) থেকে বর্ণিত হাদীসটি (যা’তে এরশাদ হয়েছে), মহানবী ( ﷺ) জানাযার নামায পড়েন এবং সূরা ফাতেহা পাঠ করেন। . দলিল নং - ৪ হুযূর পূর নূর ( ﷺ) এরশাদ ফরমান, “একরা’ও ‘আলা মওতাকুম এয়াসীন”, মানে ‘তোমাদের মধ্যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের কাছে সূরা এয়াসীন পাঠ করো। রেফারেন্স আবূ দাউদ কৃত ‘সুনান’ (জানায়েয) নাসাঈ প্রণীত ‘সুনান’ (’আমল আল-এয়াওম ওয়াল-লায়লাহ) ইবনে মাজাহ রচিত ‘সুনান’ (জানায়েয) ইবনে হিব্বান লিখিত ‘সহীহ’ (এহসান); তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন।. . .দলিল নং - ৫ হযরত মা’কিল ইবনে এয়াসার আল-মুযানি বর্ণনা করেন মহানবী ( ﷺ) এরশাদ ফরমান: কেউ যদি সূরা এয়াসীন আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশ্যে তেলাওয়াত করে, তবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হবে; অতএব, তোমাদের মধ্যে ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের কাছে তা পাঠ করো। — (ইমাম বায়হাকী (رحمة الله عليه) এটি নিজস্ব ‘শুয়াবুল ঈমান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)(আত্ তিরমিযী, হাদীস নং ২১৭৮) . . দলিল নং - ৬ [ইমাম নববী (رحمة الله عليه.)] সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আমর ইবনুল আস্ (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه)-এর কথা বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন: তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে, তখন আমার কবরের পাশে ততোক্ষণ দাঁড়াবে যতোক্ষণ একটি উট যবেহ করে তার গোস্ত বিতরণ করতে সময় প্রয়োজন হয়; এতে আমি তোমাদের সঙ্গ লাভের সন্তুষ্টি পাবো এবং আল্লাহর ফেরেশতাদের কী জবাব দেবো তা মনঃস্থির করতে পারবো। — মুসলিম ইমাম আবূ দাউদ (رحمة الله عليه) ও ইমাম বায়হাকী (رحمة الله عليه) ‘হাসান’ এসনাদে হযরত উসমান (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه) থেকে বর্ণনা করেন; তিনি বলেন: মহানবী ( ﷺ) ইন্তেকালপ্রাপ্ত কারো দাফনের পরে তার (কবরের) পাশে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, ‘এই ইন্তেকালপ্রাপ্তের গুনাহ মাফের জন্যে দোয়া করো, যাতে সে দৃঢ় থাকে; কেননা তাকে (কবরে) প্রশ্ন করা হচ্ছে।’ ইমাম শাফেঈ (رحمة الله عليه:) ও তাঁর শিষ্যবৃন্দ বলেন, (কবরে) কুরআনের অংশবিশেষ তেলাওয়াত করা ভাল; কুরআন খতম করতে পারলে আরও উত্তম। ’হাসান’ সনদে ‘সুনানে বায়হাকী’ গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে যে হযরত ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه:) ইন্তেকালপ্রাপ্তদের দাফনের পরে কবরের পাশে সূরা বাকারাহ’র প্রারম্ভিক ও শেষ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করাকে মোস্তাহাব বিবেচনা করতেন। — কিতাবুল আযকার, ২৭৮ পৃষ্ঠা ইমাম নববী (رحمة الله عليه:) বলেন: যে ব্যক্তি কবর যেয়ারত করেন, তিনি সেটির অধিবাসীকে সালাম-সম্ভাষণ জানাবেন, আল-কুরআনের অংশবিশেষ তেলাওয়াত করবেন এবং ইন্তেকালপ্রাপ্তের জন্যে দোয়া করবেন। — ইমাম নববী রচিত ‘মিনহাজ আত্ তালেবীন’, কিতাবুল জানায়েয অধ্যায়ের শেষে ’আল-মজমু’ শারহ আল-মুহাযযাব’ শীর্ষক গ্রন্থে ইমাম নববী (رحمة الله عليه) আরও লেখেন: “এটি কাঙ্ক্ষিত (ইউস্তাহাব্ব) যে কবর যেয়ারতকারী তাঁর জন্যে সহজে পাঠযোগ্য কুরআনের কোনো অংশ তেলাওয়াত করবেন, যার পরে তিনি কবরস্থদের জন্যে আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। ইমাম শাফেঈ (رحمة الله عليه) এই শর্তারোপ করেন এবং তাঁর শিষ্যবৃন্দ তাঁর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন।” বইয়ের আরেক স্থানে তিনি বলেন: “যদি কুরআন খতম করা সম্ভব হয়, তবে তা আরও উত্তম।” — ইমাম সৈয়ুতী (رحمة الله عليه) ওপরের দু’টি উদ্ধৃতি-ই তাঁর প্রণীত ‘শরহে সুদুর’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন (৩১১ পৃষ্ঠা) উলেমাবৃন্দ কবরের পাশে কুরআন তেলাওয়াতকে মোস্তাহাব (কাম্য) বলে ঘোষণা করেছেন। — ইমাম নববী (رحمة الله عليه:) কৃত ‘শরহে সহীহ আল-মুসলিম’ (আল-মায়স্ সংস্করণ, ৩/৪: ২০৬). . দলিল নং - ৭ বর্ণিত আছে যে আল-’আলা ইবনে আল-লাজলাজ তাঁর সন্তানদেরকে বলেন, তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে এবং কবরের ‘লাহদ’ বা পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গা স্থাপন করবে, তখন পাঠ করবে - বিসমিল্লাহ ওয়া ‘আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ - অর্থাৎ, মহান আল্লাহর নামে এবং মহানবী ( ﷺ:)-এর ধর্মীয় রীতি মোতাবেক। অতঃপর আমার ওপর মাটি চাপা দেবে এবং আমার কবরের শিয়রে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষের আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবে; কারণ আমি দেখেছি হযরত ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه:) তা পছন্দ করতেন। রেফারেন্স ইমাম বায়হাকী, ‘আল-সুনান আল-কুবরা’ (৪:৫৬) ইবনে কুদামা, ’আল-মুগনী’ (২:৪৭৪, ২:৫৬৭, ১৯৯৪ ইং সংস্করণের ২:৩৫৫) আত্ তাবারানী, ‘আল-কবীর’; আর ইমাম হায়তামী নিজ ‘মজমা’ আল-যওয়াইদ’ (৩:৪৪) গ্রন্থে জানান যে এর সকল বর্ণনাকারীকেই নির্ভরযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।. . . দলিল নং - ৮ ইবনে তাইমিয়া লিখেছে: বিশুদ্ধ আহাদীস বা হাদীসসমূহে প্রমাণিত হয় যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত জন তাঁর পক্ষে অন্যান্যদের পালিত সমস্ত নেক আমলের সওয়াব বা পুরস্কার লাভ করবেন। কিছু মানুষ আপত্তি উত্থাপন করে এই মর্মে যে কোনো ব্যক্তি শুধু তার নিজের কর্মের ফলেই সওয়াব অর্জন করতে সক্ষম; আর তারা এ যুক্তির পক্ষে আল-কুরআনের দলিল দিতে তৎপর হয়। এটি সঠিক নয়। প্রথমতঃ ( এ কারণে যে) কোনো মুসলমান নিজে যে নেক আমল পালন করেননি, তার সওয়াব-ও তিনি পেতে পারেন; যেমনটি আল্লাহতা’লা কুরআন মজীদে এরশাদ ফরমান যে আল্লাহর আরশের ফেরেশতারা সর্বদা তাঁর-ই প্রশংসা করেন এবং সকল মুসলমানের পক্ষে মাফ চান। আল-কুরআনে আরও পরিস্ফুট হয় যে আল্লাহ পাক তাঁর-ই প্রিয়নবী ( ﷺ:)-কে নিজ উম্মতের জন্যে দোয়া করতে বলেছেন, কেননা তাঁর দোয়া উম্মতের মানসিক ও আত্মিক শান্তিস্বরূপ। অনুরূপভাবে, দোয়া করা হয় জানাযার নামাযে, কবর যেয়ারতে এবং ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে। দ্বিতীয়তঃ আমরা জানি, আল্লাহ পাক অন্যান্যদের নেক আমল, যা আমাদের পক্ষে তাঁরা পালন করেন, তার বদৌলতে আমাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকেন। এর উদাহরণ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ ( ﷺ:)-এর একখানি হাদীস যা’তে তিনি এরশাদ ফরমান, “কোনো মুসলমান যখন-ই অন্যান্য মুসলমানের জন্যে দোয়া করেন, তৎক্ষণাৎ আল্লাহ পাক একজন ফেরেশতা নিয়োগ করেন ‘আমীন’ বলার জন্যে; অর্থাৎ, ওই ফেরেশতা আল্লাহর কাছে দোয়া কবুলের জন্যে ফরিয়াদ করেন। কখনো কখনো আল্লাহতা’লা জানাযার নামাযে শরিক মুসলমানদেরকে ইন্তেকালপ্রাপ্তদের পক্ষে কৃত তাঁদের প্রার্থনার জবাবে রহমত-বরকত দান করেন; আর ইন্তেকালপ্রাপ্তদেরকেও এর বিপরীতে পুরস্কৃত করেন। — ইবনে তাইমিয়া রচিত ‘মজমু’ আল-ফাতাওয়া’, সউদী আরবীয় সংস্করণ, ৭ম খণ্ড, ৫০০ পৃষ্ঠা এবং ২৪ খণ্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা . । দলিল নং - ৯ [হাফেয ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা] সুদূর অতীতের এক শ্রেণীর বোযূর্গ (এসলাফ) থেকে বর্ণিত আছে যে তাঁরা ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দাফনের পর তাঁদের কবরের কাছে কুরআন পাক তেলাওয়াত করতে অসিয়ত করে গিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল হক (رحمة الله عليه:) বলেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه) নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর মাযারে যেন সূরা বাকারাহ পাঠ করা হয়। হযরত মুআল্লা ইবনে আব্দির রহমান (رحمة الله عليه:)-ও তদ্রূপ অভিমত পোষণ করতেন। ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) প্রথমাবস্থায় উপরোক্ত মতের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনিও কবরে কুরআন শরীফ পাঠ করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন। হযরত আলা ইবনে লাজলাজ (رحمة الله عليه) থেকে বর্ণিত: তাঁর পিতা অসিয়ত করেছিলেন যে তিনি ইন্তেকাল করলে তাঁকে যেন লাহাদ ধরনের কবরে দাফন করা হয় এবং কবরে মরদেহ নামানোর সময় ‘বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ’ বাক্যটি পাঠ করা হয়। আর মাটি দেয়ার পর তাঁর শিয়রের দিক থেকে যেন সূরা বাকারাহ’র প্রথম অংশের আয়াতগুলো পাঠ করা হয়। কেননা, তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه)-কে এ রকম বলতে শুনেছিলেন। এই প্রসঙ্গে হযরত আদ্ দুরী (رحمة الله عليه) বলেন, আমি একবার ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কবরের কাছে কুরআন শরীফ পাঠ করা সম্পর্কে কোনো রওয়ায়াত আপনার স্মরণে আছে কি? তিনি তখন বলেছিলেন, ‘না’। কিন্তু হযরত ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ীন (رحمة الله عليه)-কে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আলা ইবনে লাজলাজ কর্তৃক উদ্ধৃত হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন। হযরত আলী ইবনে মূসা আল-হাদ্দাদ (رحمة الله عليه:) বলেন, আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (رحمة الله عليه) ও হযরত মোহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (رحمة الله عليه)-এর সঙ্গে এক জানাযায় শরীক হয়েছিলাম। লাশ দাফনের পর জনৈক অন্ধ ব্যক্তি কবরের কাছে পবিত্র কুরআন পড়তে লাগলেন। তখন ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) বল্লেন, ‘এই যে শোনো, কবরের কাছে কুরআন শরীফ পাঠ করা বেদআত।’ আমরা যখন কবরস্থান থেকে বেরিয়ে এলাম, তখন হযরত মোহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (رحمة الله عليه:) ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه:)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হযরত মোবাশশির হালাবী (رحمة الله عليه:) সম্পর্কে আপনার ধারণা কী? তিনি উত্তরে বললেন, হযরত মোবাশশির হালাবী (رحمة الله عليه) একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি। আমি আবার তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তাঁর থেকে কোনো রওয়ায়াত লিপিবদ্ধ করেছেন কি? তিনি বল্লেন, ‘হ্যাঁ, করেছি।’ মোহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (رحمة الله عليه) বল্লেন, ’আমাকে হযরত মোবাশশির (رحمة الله عليه), আর তাঁকে হযরত আবদুর রহমান ইবনে আলা ইবনে লাজলাজ (رحمة الله عليه:), আর তাঁকে তাঁর পিতা অসিয়ত করেছিলেন এই মর্মে যে তাঁর পিতার মরদেহ দাফন করার পর তাঁর শিয়রে যেন সূরা বাকারাহ’র প্রথম ও শেষ অংশ থেকে পাঠ করা হয়। তাঁর পিতা তাঁকে আরও বলেছিলেন যে তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه:)-কে এই রকম করার জন্যে অসিয়ত করতে শুনেছিলেন।’ উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ইমাম আহমদ (رحمة الله عليه) তাঁর মত পরিবর্তন করে ইবনে কুদামা (رحمة الله عليه)-কে বলেন, ‘ওই অন্ধ ব্যক্তিকে গিয়ে বলো, সে যেন কবরে কুরআন শরীফ পাঠ করে’। . . রেফারেন্স ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা কৃত ’কিতাবুর রূহ’; বাংলা সংস্করণ ১৬-৭ পৃষ্ঠা; ১৯৯৮ ইং ইমাম গাযযালী (رحمة الله عليه) রচিত ‘এহইয়া’, ইন্তেকাল ও পরকালের স্মরণবিষয়ক বই; ড: আবদুল হাকিম মুরাদ অনূদিত; ক্যামব্রিজ: ইসলামিক টেক্সটস্ সোসাইটি, ১৯৮৯; ১১৭ পৃষ্ঠা। আল-খাল্লাল এটি নিজ ‘আল-আমর বিল্ মা’রূফ’ শীর্ষক পুস্তকে বর্ণনা করেন; ১২২ পৃষ্ঠা # ২৪০-২৪১ ইবনে কুদামাহ প্রণীত ‘আল-মুগনী’ (২:৫৬৭; বৈরুত ১৯৯৪ সংস্করণের ২:৩৫৫) এবং ‘ক্কা’ল আজি-ইন ফেকাহে ইবনে উমর’ (৬১৮ পৃষ্ঠা) ইমাম গাযযালী (رحمة الله عليه) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে (কবরে কুরআন তেলাওয়াত) তাঁর প্রারম্ভিক মন্তব্যে বলেন, ‘কবরের পাশে কুরআন তেলাওয়াত করাতে কোনো ক্ষতি নেই।’ ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়া আরও লেখে: হযরত হাসান ইবনে জারবী (رحمة الله عليه) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি তাঁর এক বোনের কবরের কাছে সূরা মুলক পাঠ করেছিলেন। পরে কোনো এক সময়ে এক ব্যক্তি তাঁকে এসে বললেন, আমি আপনার বোনকে স্বপ্নে দেখেছি; তিনি বলেছেন, ‘আমার ভাইয়ের কুরআন পাঠে আমার খুব-ই উপকার হয়েছে। আল্লাহ তাঁকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।' হযরত হাসান ইবনে হাইসাম (رحمة الله عليه:) বলেন, আমি আবূ বকর ইবনে আতরূশ (رحمة الله عليه:)-কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তি নিজের মায়ের কবরের কাছে গিয়ে প্রতি জুমআ-বারে সূরা ইয়াসীন পাঠ করতেন। একদিন তিনি সূরা ইয়াসীন পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইলেন, ‘হে আল্লাহ, এই সূরা পাঠ করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, তা আপনি এই কবরস্থানের সকল ইন্তেকালপ্রাপ্তের কাছে পৌঁছে দিন।’ পরের জুমআ-বারে তাঁর কাছে এক মহিলা এসে বললেন, আপনি কি অমুকের পুত্র অমুক? তিনি জবাবে বল্লেন, জ্বি হাঁ। ওই মহিলা বললেন, আমার এক মেয়ে মারা গিয়েছে। আমি তাকে স্বপ্নে দেখলাম, সে নিজের কবরের পাশে বসে আছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি এখানে বসে আছো কেন? সে আপনার নাম উল্লেখ করে বললো, তিনি নিজের মায়ের কবরের কাছে এসে সূরা ইয়াসীন পড়েন এবং এর সওয়াব সমস্ত ইন্তেকালপ্রাপ্তের প্রতি বখশিয়ে দেন। সেই সওয়াবের কিছু অংশ অামিও পেয়েছি এবং সে জন্যে আমাকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। আমার ওই মেয়ে আমাকে এ ধরনের আরও কিছু কথা বলেছিল। — ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা লিখিত ‘কিতাবুর রূহ’ বাংলা সংস্করণ, ১৭ পৃষ্ঠা; ১৯৯৮ ইং সাল কোনো মো’মেন বান্দা যখন কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে দোয়া, এস্তেগফার, সাদকাহ, হজ্জ্ব প্রভৃতি নেক আমল পালন করেন, তখন এ সবের সওয়াব ইন্তেকালপ্রাপ্তদের রূহে পৌঁছে যায়। ..এক শ্রেণীর বেদআতী (ভ্রান্ত মতের অনুসারী)-র দৃষ্টিতে ইন্তেকালপ্রাপ্তদের কাছে জীবিতদের নেক আমলের সওয়াব পৌঁছে না। তবে সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয় যে এ ধারণা ভুল।...কুরআন মজীদেই এর প্রমাণ রয়েছে (সূরা আল-হাশর, ১০ম আয়াত), যেখানে মহান আল্লাহ পাক সে সকল মুসলমানের প্রশংসা করেন যাঁরা তাঁদের (অগ্রবর্তী) মুসলমান ভাইদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ...একটি বিশুদ্ধ হাদীস প্রতীয়মান করে যে মহানবী ( ﷺ:) এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্তের পক্ষে পেশকৃত সাদকাহ’র সওয়াব তাঁর রূহে পৌঁছে যায় (বোখারী ও মুসলিম)। ...কতিপয় লোক সন্দেহ করে থাকে যে পূর্ববর্তী তথা প্রাথমিক যুগের মুসলমানবৃন্দ ইসালে সওয়াব (ওরস) পালন করেননি; কিন্তু এটি ওই সব লোকের অজ্ঞতা বা জ্ঞানের অভাবে ঘটেছে। প্রাথমিক যুগের মুসলমানবৃন্দ প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে এগুলো করতেন না। ....মহানবী ( ﷺ:) স্বয়ং সাদকাহ প্রদানের অনুমতি দিয়েছিলেন। অতএব, ইসালে সওয়াব সঠিক। ...আল-কুরআনের যে আয়াতটিতে ঘোষিত হয়েছে কোনো ব্যক্তি শুধু সে সওয়াবটুকুই পাবেন যা তিনি আমল করেছেন, তাতে বোঝানো হয়েছে তাঁকে সওয়াব অর্জনের মতো যোগ্যতাসম্পন্ন নেককার হতে হবে; কিন্তু আল্লাহ পাক এ ছাড়াও অন্য কারো উপহৃত নেক আমলের সওয়াব ইন্তেকালপ্রাপ্তদের রূহের প্রতি বখশে দেন। — ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা কৃত ‘কেতাবুর রূহ’, ১৬তম অধ্যায় হযরত শায়বী (رحمة الله عليه) বলেন, আনসার সাহাবা (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه:)-দের কেউ ইন্তেকাল করলে তাঁরা তাঁর কবরের কাছে গিয়ে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতেন। — প্রাগুক্ত ‘কেতাবুর রূহ’, ১৭ পৃষ্ঠা; বাংলা সংস্করণ হযরত আল-হাসান ইবনে আস্ সাবাহ আয্ যাফরানী (رحمة الله عليه:) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, কবরের পাশে কুরআন শরীফ পাঠ করা সম্পর্কে আমি ইমাম শাফেঈ (رحمة الله عليه)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি জবাবে বলেন, ’এতে আপত্তির কোনো কিছু নেই’। — প্রাগুক্ত ’কেতাবুর রূহ’, ১৭ পৃষ্ঠা; বাংলা সংস্করণ। . . দলিল নং - ১০ [কাজী শওকানী] সুন্নী জামাআতের মতানুযায়ী, ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানগণ (তাঁদের পক্ষে) অন্যদের পেশকৃত দোয়া, হজ্জ্ব, সাদকাহ ইত্যাদির বদৌলতে সওয়াব হাসেল করেন। কিন্তু মো’তাযেলা (ভ্রান্ত মতবাদী) সম্প্রদায় এ সত্য মানতে নারাজ। ইন্তেকালপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে এগুলো পেশ করা যদি ভ্রান্তি-ই হতো, তবে কবরস্থানে যেয়ারত বা প্রবেশের সময় ইন্তেকালপ্রাপ্তদের প্রতি আমাদের সালাম দেয়াকেও ইসলাম ধর্ম অনুমোদন করতো না। — কাজী শওকানী রচিত ‘নায়ল আল-আওতার’, জানায়েয অধ্যায় দাফনের পরে কবরের পাশে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষের আয়াতগুলো পাঠ করা হোক। এই সিদ্ধান্ত হযরত ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه)-এর কথার ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে, যা বর্ণিত হয়েছে ইমাম বায়হাকী (رحمة الله عليه:)-এর ’সুনান’ (৪:৫৬) গ্রন্থে এবং যা’তে বলা হয়েছে: ‘আমি পছন্দ করি কবরের পাশে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষাংশ পঠিত হোক।’ ইমাম নববী (رحمة الله عليه) ঘোষণা করেন যে (ওপরের) এই বর্ণনার এসনাদ হাসান (’হাসসানা এসনাদুহূ’); আর যদিও এটি শুধু হযরত ইবনে উমর (رضي الله ﺗﻌﺎﻟﯽٰ عنه)-এরই বাণী, তথাপি তা স্রেফ কোনো মতামতের ভিত্তিতে উপস্থাপিত নয়। এটির সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এই যে, তিনি সার্বিকভাবে আলোচিত এ ধরনের তেলাওয়াতের ফায়দাগুলো সম্পর্কে জেনেছিলেন, এবং এর গুণাগুণের আলোকে কবরের ধারে তা পঠিত হওয়াকে পছন্দনীয় ভেবেছিলেন এই আশায় যে এর তেলাওয়াতের দরুন ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ সওয়াব হাসেল করতে সক্ষম হবেন। — শওকানী কৃত ‘তোহফাত আয্ যাকেরীন’, ২২৯ পৃষ্ঠা; আল-জাযুরী দামেশকী (رحمة الله عليه)-এর প্রণীত ‘হিসনে হাসিন’ গ্রন্থেও এই উদ্ধৃতি আছে।। মানুন না মানুন আপনার ব্যাপার , তবে মোরতে তো এক দিন হবেই! তখন টের পাবেন। image Like & Share Bellow box Text for This Post নিচের বক্সের লেখাটি শেয়ার করেন এটা এই পোস্টের লিঙ্ক কবরের পাশে কোরআন তেলাওয়াত এর দলিল সকল কে পড়ার সুজগ করে দিন। http://yanabi.in/u/1h

Comments

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|