★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
মিসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত - Ibadat amal Discussions on

মিসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত

edited December 2016 in Ibadat amal
মিসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত

মিসওয়াক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি বিশেষ সুন্নাত। বিভিন্ন হাদিস শরীফে মিসওয়াক করার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ ﷺ কে বেশি বেশি মিসওয়াক করার নির্দেশ দিয়েছেন। যেমন হাদিস শরীফে হযরত আবু উমামা বাহেলী (رضي الله عنه.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন, ‘যখনই জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) আমার নিকট আসতেন, তখনই আমাকে মিসওয়াক করার জন্য আদেশ দিতেন। যাতে আমার ভয় হতে লাগলো যে, মিসওয়াক করতে করতে আমি আমার মুখের সম্মুক দিক ক্ষয় করে দিব।’ (মেশকাত শরীফ- ১/৪৫) রাসূল ﷺ ও উম্মতগণকে মেসওয়াকের গুরুত্ব বোঝাতে, যেয়ে বলেন, ‘যদি উম্মতের কষ্ট ও অসুবিধার কথা চিন্তা না করতাম, তাহলে প্রত্যেক নামাজের সময় মিসওয়াক তাদের ওপর আবশ্যক করে দিতাম।’ (মুসলিম শরীফ- ১/১২৮)
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মিসওয়াক সম্পর্কে আমি তোমাদেরকে অতি গুরুত্বারোপ করছি।’ (নাসাঈ শরীফ পৃ. ৩)
মিসওয়াক সকল আম্বিয়ায়ে কেরামের শরীয়তে সুন্নাত ছিলো। যেমন, হাদিস শরীফে হযরত আবু আইয়ূব আনসারী (رضي الله عنه.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, চারটি বস্তু সকল নবীগণের সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। (১) মন্দ কাজ থেকে লজ্জা করা (২) সুগন্ধি ব্যবহার করা (৩) মিসওয়াক করা (৪) বিবাহ করা। (তিরমিযি শরীফ-১/২০৬)
রাসূল ﷺ উম্মতগণকে মিসওয়াকের প্রতি গুরুত্বারোপ করার সাথে সাথে নিজেও মিসওয়াকের আমলের প্রতি অধিক যত্নবান ছিলেন। যেমন হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, তাবেয়ী হযরত শুরাইহ ইবনে হানী (رضي الله عنه.) বলেন, একবার আমি উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (رضي الله عنه.) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসূল ﷺ যখন ঘরে প্রবেশ করতেন তখন কোন কাজ সর্বপ্রথম করতেন? হযরত আয়েশা (رضي الله عنه.) বললেন, মিসওয়াক। (মুসলিম শরীফ-১/১২৮) অন্যত্রে হযরত আয়েশা (رضي الله عنه.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ ﷺ যখনই ঘুমাতেন রাতে হোক বা দিনে, অতঃপর জাগ্রত হতেন, তখনই মিসওয়াক করতেন ওযু করার পূর্বে।’ (আবু দাঊদ-১/৮) ইসলামী শরীয়তে মিসওয়াক করার মধ্যে অনেক বরকত ও ফজিলত রয়েছে। ওলামায়ে কেরাম উল্লেখ করেছেন যে, মিসওয়াকের ফজিলত প্রসঙ্গে প্রায় চল্লিশটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো, হযরত আয়েশা (رضي الله عنه.) থেকে বর্ণিত রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ইরশাদ করেছেন, ‘মিসওয়াক মুখের পবিত্রতা ও আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টি লাভের মাধ্যম।’(নাসাঈ শরীফ-পৃ:৩ )
অন্যত্রে হযরত আয়েশা (رضي الله عنه.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূল ﷺ ইরশাদ করেছেন, ‘যে নামাজের জন্য মিসওয়াক করা হয়, তার ফজিলত মিসওয়াকবিহীন আদায় কৃত নামাজের তুলনায় সত্তর গুণ অধিক।’ (মেশকাত শরীফ-১/৪৫)
অন্য এক হাদিসে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, নবী করিম ﷺ ইরশাদ করেছেন, একবার আমি স্বপ্নে দেখলাম, আমি একটি মিসওয়াক দ্বারা মিসওয়াক করছি। এ সময় আমার নিকট দু’জন ব্যক্তি আসলো, তাদের মধ্যে একজন অপর জন থেকে বড়। আমি ছোট ব্যক্তিকেই আমার মিসওয়াকটি দিয়েছিলাম। তখন আমাকে বলা হলো, (ওহীর মাধ্যমে) বড় ব্যক্তিকেই মিসওয়াকটি দিন। অতঃপর আমি মিসওয়াকটি বড় ব্যক্তিকে দিলাম। (মুসলিম শরীফ-২/২৪৪) হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন, আমার নিকট মিসওয়াক সহকারে দুই রাকাআত নামাজ আদায় করা মিসওয়াক বিহীন সত্তর রাকাআতের চেয়েও পছন্দীয়। (আবু নাঈম)
বেনেয়া গ্রন্থে আল্লামা আয়নী রাহ. উল্লেখ করেছেন, হযরত ওমর (رضي الله عنه.) বলেন, মিসওয়াকের ফজিলতের ব্যাপারে সকল ওলামায়ে কেরাম ঐক্যমত। এ ব্যাপারে কেউ দ্বিমত পোষণ করেননি। সকলের নিকট মিসওয়াক সহকারে নামাজ আদায় করা মিসওয়াকবিহীন নামাজ আদায় করার চেয়ে উত্তম। এছাড়া মিসওয়াকের উপকারিতাও অনেক বেশি। আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله عليه.) উল্লেখ করেছেন, মিসওয়াকের উপকারিতা সত্তরেরও অধিক। তন্মধ্যে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করার দ্বারা মুখের দুর্গন্ধ দূূর হয়। আর সর্ব্বোচ উপকার হচ্ছে মিসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালিমা নছিব হয়। (ফাতাওয়ে শামী-১/২৩৬)
হযরত ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه.) বলেন, মিসওয়াক করার মধ্যে দশটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন : নিয়মিত মিসওয়াক করলে, মাড়ি শক্ত হয়, মুখ পরিষ্কার হয়, গলা থেকে কফ নিরাময় হয়, চোখের জ্যোতি বাড়ে, ফেরেশতা খুশি হয়, নামাজের সওয়াব বৃদ্ধি পায়, শারীরিক সুস্থতা লাভ হয়, সুন্নাতের অনুকরণ হয় এবং দাঁতের হলুদ রং দূর হয় । অন্যত্রে হযরত আলী (رضي الله عنه.) বর্ণনা করেন, মিসওয়াক মেধাকে বৃদ্ধি করে এবং কফ দূর করে ।
মিসওয়াক তিক্ত বৃক্ষ যেমন নিম ইত্যাদি হওয়া উচিৎ। তবে পিলু বৃক্ষের মিসওয়াক উত্তম। কেননা, হাদিস শরীফে পিলু বৃক্ষের কথা উল্লেখ হয়েছে। (মাজাহেরে হক জাদীদ-১/৩৭৩ ) মিসওয়াক লম্বায় এক বিঘত ও মোটায় কনিষ্ঠা আঙ্গুলের পরিমাণ হওয়া বাঞ্ছনীয়। (হেদায়া, হাশিয়া, পৃ:১৮)

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|