প্রমাণিত হল,জাকির পন্থিরা মিথ্যাবাদী,কোরআন চোর,হাদীস চোর,ঈমান নষ্টকারী।
![](http://yanabi.in/uploads/editor/88/utabh00x4g45.jpg)
*আহলে হাদিসের একটি পেজে'র নাম "আয়না" পেজে একটি পোস্ট করেছে সূরা আরফের ৩নং আয়াতের অনুবাদ সহ পোস্টটিতে অনুবাদ সঠিক নয়। আমি আরো ৪টি অনুবাদ দেখেছি এমন মনগড়া অনুবাদ পাইনি।*
*************************************************************
অশুদ্ধ অনুবাদঃ
" তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে, তোমরা তারই অনুসরণ কর, তা ব্যতিরেকে কোন ওলী-আউলিয়ার অনুসরণ কর না।"
(সূরা আরাফ-৩)
শুদ্ধ অনুবাদঃ
"হে মানব সমাজ! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের উপর যা কিছু নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করো এবং নিজেদের রবকে বাদ দিয়ে অন্য অভিভাবকদের অনুসরণ করো না। কিন্তু তোমরা খুব কমই উপদেশ মেনে থাকো। "
----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সংযুক্ত পোস্টটিতে প্রদত্ত কুরআনের আয়াতের অনুবাদ সঠিক নয়। এতে আউলিয়া-বুযূর্গানে দ্বীনের প্রতি প্রচার করা হয়েছে। মুফতী আহমদ এয়ার খাঁন (رحمة الله عليه)-এর প্রণীত ‘তাফসীরে নূরুল এরফান’ গ্রন্থে উক্ত সূরা আ’রাফের ৩য় আয়াতের অনুবাদ এরকম: “হে লোকেরা, সেটার ওপর-ই চলো, যা তোমাদের প্রতি তোমাদের রব্বের কাছ থেকে অবতীর্ণ হয়েছে এবং সেটাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য হুকুমদাতার অনুসরণ করো না।” অতঃপর তাফসীরে লেখা হয়েছে, “এ আয়াতের তাফসীর হচ্ছে এ-ই আয়াত - ‘এবং কাফেরদের ওলী-আউলিয়া তথা সাহায্যকারী হচ্ছে শয়তান’ (সূরা-২: আয়াত-২৫৭)। অর্থাৎ, শয়তান হচ্ছে আল্লাহ ব্যতীত অন্য বন্ধু। তাকে বন্ধু বানানো কুফর। পক্ষান্তরে, আল্লাহর ওলী-আউলিয়াকে বন্ধুস্বরূপ গ্রহণ না করা বে-দ্বীনী” [নূরুল এরফান, ১ম খণ্ড, ৩৯২ পৃষ্ঠা]। উপরন্তু, সূরা মা-ইদা’র ৫৫-৫৬ আয়াতে এরশাদ হয়েছে, “নিশ্চয় তোমাদের ওলী তথা বন্ধু তো আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল ﷺ ও (পুণ্যাত্মা বুযূর্গ) ঈমানদারবৃন্দ, যাঁরা নামায কায়েম করেন, যাকাত দেন এবং আল্লাহরই সামনে বিনত হন। এবং যেসব মানুষ আল্লাহ, তাঁর রাসূল ﷺ ওই পুণ্যাত্মা ঈমানদার) মুসলমানদেরকে স্বীয় ওলী তথা বন্ধুস্বরূপ গ্রহণ করে, তবে নিশ্চয় আল্লাহরই দল বিজয়ী হয়।” এর তাফসীরে লেখা হয়েছে, “এথেকে দুটি মাসআলা বোঝা যায়: ১/ আল্লাহর প্রিয় বান্দাদেরকে বন্ধু ও সাহায্যকারী বানানো মু’মিনদেরই পন্থা। তাঁদেরকে ভালোবাসা আল্লাহকে ভালোবাসারই নামান্তর। পক্ষান্তরে, তাঁদের প্রতি শত্রুতা পোষণ আল্লাহরই প্রতি শত্রুতা পোষণের সামিল। ২/ সর্বদা মুসলমানবৃন্দ নিজেদের জাতির মধ্যে থাকলে সম্মান ও বিজয় লাভ করবেন। নিজ জাতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কাফিরদের সাথে মিলিত হওয়া অবমাননা ও লাঞ্ছনারই কারণ। (বৃক্ষের) ওই শাখাই তাজা থাকে, যা তার শিকড়ের সাথে মিলে থাকে” [তাফসীরে নূরুল এরফান, ১ম খণ্ড, ৩০৬-৭ পৃষ্ঠা]। লক্ষণীয় যে আয়াত দুটিতে আল্লাহতা’লা ওলী তথা সাহায্যকারী হিসেবে তাঁর পাশাপাশি রাসূলুল্লাহ ﷺ ও নেককার বুযূর্গ ঈমানদারবৃন্দকেও উল্লেখ করেছেন। এই দুটি আয়াতের কী জবাব দেবে বর্তমানকালের এসব স্বনিযুক্ত পণ্ডিত? <<কাজী সাইফুদ্দনি ভাইয়ের লিখাটি যুক্ত করলাম)।
--------------------------------------------------------------------------------
অলি'র অভিধানিক অর্থঃ
অলি-অভিভাবক, অলি-বন্ধু, অলি-আল্লাহর অলি। অলি আরবি শব্দ যার অর্থ অভিভাবক বা বন্ধু। আরবি ভাষায় "আউলিয়া" শব্দটি "অলির বহুবচন। অলি অর্থ বন্ধু, মিত্র বা অনুসারী। কখনো শব্দটির অর্থ হয় শাসক, অভিভাবক, বা কর্তা। (তথ্যসূত্র আরবি বাংলা অভিধান, প্রকাশনায় ইসালামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ)।
প্রসিদ্ধ আরবী ইংরেজি অভিধান "আল মাওয়ারিদ" অনুসারে অলি শব্দের অর্থঃ guardian, patron, friend, companion ইত্যাদি। পবিত্র কোরআনে "অলি এবং আউলিয়া" এ উভয় শব্দটির ব্যাবহার হয়েছে অসংখ্যবার।
আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন, "আলা ইন্না আউলিয়া আল্লা-হি লা-খাওফুন ওয়ালা-হুম ইয়াহ্যানুন" অর্থ- জেনে রাখ আল্লাহর অলিদের (বন্ধু) কোন ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না। যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। (সুরা ইউনুস ৬২-৬৩)।
এখানে আল্লহ তা'আলা অলি'র দু'টি গুণাবলী বর্ণনা করেছেন। (১) যারা ঈমান আনয়ন করেছে এবং শিরক মুক্ত যারা। (২) তাকওয়া অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহকে ভয় করে ইসলামে তাঁর নিষিদ্ধ সকল প্রকার হারাম কাজ বর্জন করে চলা।
" নিশ্চয় তোমাদের অলি (বন্ধু) হলেন আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল আর ঈমাদার লোকেরা যারা সালাত (নামায) কায়েম করে, জাকাত দিয়ে দেয়, এবং আল্লাহর প্রতি অনুগত বাধ্যগত থাকে। যারা অলি মানে আল্লাহ কে এবং আল্লাহর রাসূলকে আর ঈমানদার লোকদেরকে, তারাই আল্লাহর দল এবং আল্লাহর দলই থাকবে বিজয়ী। (সূরা মায়িদা আয়াত ৫৫-৫৬)।