★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
“সহীহ হাদিসের আলোকে নামাজ শিক্ষা”- : কেন এই গ্রন্থ রচনা ? লেখক : মাওলানা মুহাম্মদ এ কে - Ibadat amal Discussions on

“সহীহ হাদিসের আলোকে নামাজ শিক্ষা”- : কেন এই গ্রন্থ রচনা ? লেখক : মাওলানা মুহাম্মদ এ কে

“সহীহ হাদিসের আলোকে নামাজ শিক্ষা”- : কেন এই গ্রন্থ রচনা ? 
           লেখক :   মাওলানা মুহাম্মদ এ কে আজাদ 
            বাবলা ,  মেহেরাপুর, মালদহ 



    বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম। সকল প্রশংসা লা-শরীক আল্লাহর। কোটি কোটি দরুদ ও সালাম অবতীর্ন হউক তাঁর প্রিয়তম রসুল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর । 

     এই গ্রন্থখানি দুটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রচিত হয়েছে । প্রথমতঃ , কিছু ভাই বারংবার অনুরোধ করেছেন যে বাংলা ভাষায় তথ্যনিষ্ঠ এমন একটি সহীহ নামাজ শিক্ষার গ্রন্থ রচনা করতে যেখান থেকে নামাজ পাঠের ধারাবাহিক নিয়মাবলী সহজে শিক্ষালাভ করা যাবে এবং যার দ্বারা পরিবারের সকলকে সুশৃংখলভাবে ও ধাপে ধাপে নামাজ পাঠের প্রশিক্ষন প্রদান করা যাবে। এই অনুরোধ মাথায় রেখে গ্রন্থখানি বিন্যস্ত করা হয়েছে এবং খুঁটিনাটি বিষয়সমূহ ও দলীলের আলোকে আলোচনা করা হয়েছে । দ্বিতয়তঃ, মুসলিমদের মধ্যে কলহ ও অন্তর্দ্বন্দ সৃস্টির উদ্দেশ্যে কিছু অপরিণামদর্শি অর্বাচিন বন্ধু  অপপ্রচার চালান যে আহলে সুন্নত ওয়াল জযামায়াতের লোকজন, বিশেষতঃ হানাফী ফিকাহ এর অনুসারীগন হাদিস মোতাবেক নামাজ পাঠ করেন না। সত্যি বলতে কি, এর চেয়ে নির্জলা মিথ্যা পাওয়া দুস্কর। এই অপরিণামদর্শি অর্বাচিন বন্ধুগণ নামাজকে বিবাদের বিষয়ে পরিণত করেছেন। এই গ্রন্থে দেখানো হয়েছে যে, “ “হানাফী ফিকহে” বর্নিত নামাজের প্রতিটি অংশই হাদীস-সুন্নাহ থেকে আহরিত এবং দলীলের নিরিখে সর্বাধিক শক্তিশালী । 

         বিরোধীদের ইমামগণ ও একথা স্বীকার করেন। তাঁরা একথা ও স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে, চার মহান মুজতাহিদ ইমামের মধ্যে যে কোন একজনের অনুসরণ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য । যে সব বিধি-বিধান শরীয়তে সুস্পস্টভাবে উল্লেখিত নেই, ঐ বিধি-বিধানসমুহ  মহান ইমাম চতুষ্টয় কুরআন-হাদিস থেকে গবেষণা ও ইজতেহাদ প্রয়োগ করে  মুসলিম উম্মাহর ধর্ম- যাপন করা সহজ করে দিয়েছেন। এসকল বিধি-বিধানের ক্ষেত্রে মুজতাহিদ নয় এমন ব্যক্তির কর্তব্য হল, যে কোন একজন মুজতাহিদ ইমামের অনুসরণ করা।  এবিষয়ে মুসলিম উম্মাহর ইজমা বা ঐক্যমত রয়েছে । এমনকি , বিরোধীদের তথাকথিত শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া লিখেছেন ,  “ উম্মাহর আলেমগন এ বিষয়ে একমত যে, স্ব স্ব ক্ষেত্রে ইজতিহাদ ও তাকলীদ উভয়ই বৈধ। সবার জন্য ইজতিহাদ ওয়াজিব, তাকলীদ হারাম কিংবা সবার জন্য তাকলীদ ওয়াজিব, ইজতিহাদ হারাম – বিষয়টি এমন নয় । ইজতিহাদের যোগ্যতা যার আছে সে ইজতিহাদ করবে আর যার যোগ্যতা নেই সে তাকলীদ করবে । এরপর যে প্রশ্ন থেকে যায় তা হল, ইজতিহাদের যোগ্যতা-সম্পন্ন কোন ব্যক্তির পক্ষে ও তাকলীদ বৈধ কি না । এ বিষয়ে আলেমগনের একাধিক মত রয়েছে। সঠিক মত এই যে, যেসব ক্ষেত্রে মুজতাহিদের পক্ষে ইজতিহাদ করা সম্ভবপর হয় না, সেসব ক্ষেত্রে তার জন্য ও তাকলীদ বৈধ । বিভিন্ন কারনে ইজতিহাদ করা সম্ভবপর না ও হতে পারে। যেমন কোন বিষয়ে উভয় দিকেই সমান মাপের দলীল রয়েছে কিংবা এমুহুর্তে মুজতাহিদের সময়-স্বল্পতা রয়েছে কিংবা এই মাসআলার দলীল তাঁর জানা নেই ইত্যাদি” । [ তথ্যসূত্র : ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া – খণ্ড নং ২০ - পৃষ্ঠা নং – ২০৩ ] । শাহ ওয়লীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (রঃ) কে বিরোধিরা নিজেদের গুরু বলে দাবি করেন। এই শাহ ওয়লীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী (রঃ) বলেন , “ যে ব্যক্তি কুরআন-সুন্নাহতে পারদর্শী নয়, তার পক্ষে যেহেতু কুরআন-সুন্নাহ থেকে মাসাইল খুঁজে বের করা কিংবা কুরআন-সুন্নাহ থেকে চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া কোনটাই সম্ভব নয় , তাই তার কর্তব্য হল, কোন ফকীহর নিকট থেকে কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা জেনে তা অনুসরন করা। সে নির্দেশনা কুরআন-সুন্নাহতে থাকতে পারে অথবা কুরআন-সুন্নাহতে উল্লেখিত সমশ্রেনীর মাসআলার উপর কিয়াস করা ও হয়ে থাকতে পারে। এটা হল ওয়াজিব তাকলীদ । এভাবে আমল করা হলে প্রকৃতপক্ষে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসেরই অনুসরণ করা হয় এবং এই পদ্ধতি সঠিক হওয়ার ক্ষেত্রে সকল যুগের উলেমা  একমত” । [ তথ্যসূত্র : ইক্বদুল জীদ- শাহ ওয়লীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী- পৃষ্ঠা নং –৪২]

          সৌদি আরবের কথিত সালাফী-আহলে হাদীস মৌলভীগন ও সম্প্রতি স্বীকার করেছেন যে, সাধারন মুসলিমগনের জন্য চার ফিকহি মাযহাবের মধ্যে যে কোন একটি অনুসরণ করা অপরিহার্য । এ সম্পর্কে তাঁরা একটি রেজুলেশন ও গ্রহন করেছেন । এই রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেছেন উপরোল্লিখিত ফির্কার শীর্ষস্থানীয় আলেম ইবনে বাজ , সালেহ ইবনে ফাওজান, ডাঃ আবদুল্লাহ উমর নাসিফ প্রমুখগন । রেজুলেশনটিতে স্বীকার করা হয়েছে যে, 
           “ কিছু বিধানের ক্ষেত্রে ফিকহি মাজহাবসমুহের মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্যের বহু শাস্ত্রীয় কারন আছে এবং এতে আল্লাহ তায়ালার নিগুড় হিকমত রয়েছে। যেমন বান্দাদের প্রতি দয়া ও অনুগ্রহ এবং নুসূস থেকে আহকাম ও বিধান উদঘাটনের ক্ষেত্রকে প্রশস্ত করা। তাছাড়া এটা হল আল্লহ তায়ালার পক্ষ থেকে এক বিরাট নেয়ামত এবং ফিকহ ও কানুনের মহাসম্পদ, যা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীন ওশরীয়তের ক্ষেত্রে প্রশস্ততা দিয়েছে। ফলে তা নির্ধারিত একটি হুকুমের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকবে না, যা থেকে কোন আবস্থাতেই বের হওয়ার সুযোগ নেই। বরং যে কোনো সময়ই কোন বিষয়ে যদি কোন একজন ইমামের মাযহাব সংকীর্ণতার কারণ হয়ে যায় তাহলে শরঈ দলিলের আলোকেই অন্য ইমামের মাযহাবে সহজতা ও প্রশস্ততা পাওয়া যাবে। তা হতে পারে ইবাদত সংক্রান্তবিষয়ে অথবা মুআমালা সংক্রান্ত অথবা পারিবারিক কিংবা বিচার ও অপরাধ সংক্রান্ত। তো আহকাম ও বিধানের ক্ষেত্রে এ ধরনের মাযহাবী ইখতিলাফ আমাদের দ্বিনের জন্য দোষের কিছু নয় এবং তা স্ববিরধিতাও নয়। এ ধরনের মতভেদ না হওয়া অসম্ভব। এমন কোন জাতি পাওয়া যাবেনা যাদের আইন-ব্যাবস্থায়  এ ধরনের ইজতিহাদী মতপার্থক্য নেই।  ‘অতএব বাস্তব সত্য এই যে, এ ধরনের মতভেদ না হওয়াই অসম্ভব। কেননা একদিকে যেমন নুসূসে শরঈ অনেক ক্ষেত্রে একাধিক অর্থের সম্ভাবনা রাখে অন্যদিকে শরঈ নস সম্ভাব্য সকল সমস্যাকে সুস্পষ্টভাবে বেষ্টন করতে পারে না। কারন নুসূস হল সীমাবদ্ধ আর নিত্যনতুন সমস্যার তো কোন সীমা নেই। ‘অতএব কিয়াসের আশ্রয় নেওয়া এবং আহকাম ওবিধানের ইল্লত,বিধানদাতার মাকসাদ; শরীয়তের সাধারণ মাকসাদসমূহ বোঝার জন্য চিন্তাভাবনা করতে হবে এবং এর মাধ্যমে নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান গ্রহণ করতে হবে।এখানে এসেই উলামায়ে কেরামের চিন্তার বিভিন্নতা দেখা দেয় এবং সম্ভাব্য বিভিন্ন দিকের কোন একটিকে প্রাধান্য দেওয়ার ক্ষেত্রে মতপার্থক্য হয়। ফলে একই বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত আসে। অথচ প্রত্যেকের উদ্দেশ্য হক্ব ও সত্যের অনুসন্ধান। কাজেই যার ইজতিহাদ সঠিক হবে সে দুইটি বিনিময় পাবে এবং যার ইজতিহাদ ভুল হবে সে একটি বিনিময়পাবে। আর এভাবেই সংকীর্ণতা দূর হয়ে প্রশস্ততার সৃষ্টি হয়।  ‘সুতরাং যেমতপার্থক্য কল্যান ও রহমতের ধারক তা বিদ্যমান থাকলে দোষ কেন হবে? বরং এ তো মুমিনবান্দার প্রতি আল্লাহ তায়ালার রহমত ও অনুগ্রহ। বরং মুসলিম উম্মাহর গর্ব ও গৌরবেরবিষয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, কিছু মুসলমানতরুন বিশেষত করে যারা বাইরে লেখাপড়া করতে যায় তাদের ইসলামীজ্ঞানের দুর্বলতার সুযোগে কিছু গোমরাহকারী লোক তাদের সামনে ফিকহী মাসআলার এজাতীয় মতপার্থক্যকে আকীদার মতভেদের মতো করে তুলে ধরে। অথচ এ দু’য়ের মাঝে আকাশ-পাতালের ব্যাবধান!  ‘দ্বিতীয়ত যেশ্রেনীর লোকেরা মানুষকে মাযহাব বর্জন করার আহবান করে এবং ফিকহের মাযহাব ও তার ইমামগনের সমালোচনা করে এবং মানুষকে নতুন ইজতিহাদের মধ্যে নিয়ে আসতে চায় তাদের কর্তব্য,এই নিকৃষ্ট পন্থা পরিহার করা। যা দ্বারা তারা মানুষকে গোমরাহ করছে এবং তাদেরঐক্যকে বিনষ্ট করছে। অথচ এখন প্রয়োজন ইসলামের দুশমনদের ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় নিজেদের ঐক্যকে সুদৃঢ় করা।  [ তথ্যসূত্র : মাজাল্লাতুল মাজলায়িল ফিকহী, রাবিতাতুলআলামিন ইসলামী, মক্কা মুকাররমা বর্ষঃ ১, সংখ্যাঃ ২, পৃষ্ঠাঃ ৫৯,২১৯ ]
           
            সর্বাধিক বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করেছেন বিরোধীদের প্রবাদপ্রতীম ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বিটালবী । তকলীদ পরিত্যাগের ভয়াবহ পরিনাম সম্পর্কে মাওলানা মুহাম্মদ হুসাইন বিটালবী লিখেছেন, “ পঁচিশ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যারা অজ্ঞ থাকা সত্বে ও মুজতাহিদ বনে যায় এবং তাকলীদকে সম্পূর্নভাবে পরিত্যাগ করে, তারা পরিশেষে ইসলামকেই বিদায়-সম্ভাষন জানিয়ে বসে। মুরতাদ বা ফাসিক হওয়ার বহু কারণ পৃথিবীতে আছে । কিন্তু দ্বীনদার মানুষের বেদ্বীন হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হল, অজ্ঞ থাকা সত্বে ও তকলীদ পরিত্যাগ করা। আহলে হাদীস সম্প্রদায়ের যে সব অশিক্ষিত বা স্বল্প-শিক্ষিত ব্যক্তি তাকলীদ পরিত্যাগ করার ঘোষণা দেয়, তাদের উচিত নিজ পরিনাম সম্পর্কে ভীত হওয়া । এই সম্প্রদায়ের সাধারণ লোকেরা দিন দিন মুক্ত ও স্বাধীন হয়ে যাচ্ছে” । [ তথ্যসূত্র : ইশআতুস সুন্নাহ – রিসালা – খন্ড নং- ১১- সংখ্যা নং ২- ১৯৮৮ ] । এখন তো পরিস্থিতি ভয়ংকর জায়গায় গিয়ে পৌছেছে। চার ফিকহি মাজহাবসমুহের মধ্যে যে কোন একটির তাকলীদ পরিহার-কারীরা একশোটির ও অধিক উপ- গোষ্ঠীতে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এবং সবাই সবাইকে কাফের বলছে। তাকলীদ পরিত্যাগকারীদের সৌদি আরবীয় মৌলভীরা কেবল নামাজেরই চল্লিশটি বিষয়ে তীব্র মতানৈক্য প্রকাশ করেছেন এবং একে অপরের ফতোয়ার লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হচ্ছেন। আল্লাহ পাকের অসীম রহমত যে তিনি আমাদেরকে আহলে সুন্নত ওয়া জামায়াতের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এই জামায়াত-ভূক্ত চার ফিকহি মাজহাবের মধ্যে গবেষণা-জনিত কিছু ফিকহি মতপার্থক্য রয়েছে কিন্তু  কোন বৈরীতা নেই। আছে কেবল সম্প্রীতী, সৌভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য। 

        আশা করি সত্য- অনুসন্ধানীগন এই গ্রন্থ থেকে উপকৃত হবেন এবং আহলে সুন্নত ওয়া জামায়াতের উপর অটল ও অবিচল থাকবেন। ওগো আল্লাহ ! অধমের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস কবুল করুণ এবং আমাদেরকে আহলে সুন্নত ওয়া জামায়াতের উপর অটল রাখুন। আমাদেরকে ঐভাবে নামাজ পাঠ করার তওফীক দান করুণ যেভাবে আপনার প্রিয়তম রসুল মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ পাঠ করেছেন । রসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ صَلّوا کَما رَاَي۫تُمُو۫نِي اُصَلِّي” অর্থাৎ , “ তোমরা  ঐভাবে নামাজ পাঠ যেভাবে আমাকে নামাজ পাঠ করতে দেখো” ।  [তথ্যসূত্র :বুখারী – সহীহ – কিতাবুল আদাব – বাব রহমাতুন নাস ওয়াল বাহায়িম - খণ্ড নং ৫ -  পৃষ্ঠা নং – ২২৩৮ – হাদীস নং- ৫৬৬২] 


                          আস স্বলাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়া রসুলাল্লাহ  । 

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|