★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
নবীজীর রওযা মুবারকের পাশে যা ঘটেছিলো সেদিন সুন্নি আলিম ইহসান কাদেরী এবং সালাফী আলিম মুজাফফর এর মাঝে - Ja-al-haq Discussions on

নবীজীর রওযা মুবারকের পাশে যা ঘটেছিলো সেদিন সুন্নি আলিম ইহসান কাদেরী এবং সালাফী আলিম মুজাফফর এর মাঝে

edited May 2017 in Ja-al-haq
♥♥নবীজীর রওযা মুবারকের পাশে যা ঘটেছিলো সেদিন সুন্নি আলিম ইহসান কাদেরী এবং সালাফী আলিম মুজাফফর এর মধ্যে। 

---------------------------


Download ডাউনলোড


শ্রীলংকান অন্যতম শীর্ষ একজন সুন্নী আলিমে দ্বীন হচ্ছেন আল্লামা শায়খ হাফিয ইহসান ক্বাদেরী। আরবী, উর্দূ সহ অনর্গল ইংরেজীতে দেওয়া অসংখ্য বক্তব্য রয়েছে উনার। এছাড়া কিছুদিন আগেও উনি আমাদের চট্টগ্রাম এসে ঘুরে গিয়েছেন। তিনি ইলমে দ্বীন হাসিল করেছেন, আ'লা হাযরাত কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বেরেলভী শরীফে অবস্থিত "মানযারুল ইসলাম" হতে। সিলসিলাগত ভাবে তিনি আওলাদে আ'লা হাযরাত হযরত আখতার রেযা আযহারী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী'র হাতে বায়'আত গ্রহণ করেছেন। যেহেতু তিনি মুরীদ হয়েছেন সিলসিলায় ক্বাদেরীয়া'র, তাই তিনি তাঁর নামের শেষে "ক্বাদেরী" শব্দটি নিসবত স্বরুপ সংযুক্ত করেছেন। আসুন মূল কথায় আসি এবার।

গত কিছুদিন আগে তিনি যিয়ারতের উদ্দেশ্যে মাদীনা মুনাওয়ারায় গিয়েছিলেন। একজন আন্তর্জাতিক স্কলার হিসেবে তাঁর খ্যাতি-পরিচিতি মোটামুটি সর্বত্র-ই থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সেই হিসেবে তিনি মদীনা মুনাওয়ারায় গেলে তাঁকে ভারতীয় বংশোদ্ভূত 'মুজাফফর' নামী এক স্থানীয় সালাফি আলিম ঘিরে ধরে। উল্লেখ্য এই মুজাফফর সাহেব এর ডিউটি হচ্ছে মদীনা মুনাওয়ারায়। এখানে সে একটা ক্যামেরাম্যান নিয়ে ঘুরাঘুরি করে। ভারত-পাকিস্তান হতে আগত হাজীরা হচ্ছে তার মূল টার্গেট। সে এদেরকে টার্গেট করে আক্বীদা-আমল নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক কথার দ্বারা প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এসব কার্যকলাপ সে রেকর্ডিং করে ইউটিউবে আপলোড দেয়। যাই হোক সে আল্লামা ইহসানকে ঘিরে ধরার পর ভেবেছিল যে তাকে কিভাবে তার শিকার বানানো যায়!! আলহামদুলিল্লাহ, নবীর দরবারে নবী তাঁর একজন প্রকৃত ওয়ারিশ গোলামকে অসম্মান হতে দেয়নি। আসুন তাহলে তাদের বিতর্কের সারাংশ দেখে নিই।

(মুজাফফর সাহেব আল্লামা ইহসানকে দূর থেকে দেখে টিংটিং করতে করতে এসে প্রশ্ন করলো)
মুজাফফর: আপনার নাম কি?
আল্লামা ইহসান: মুহাম্মদ ইহসান। 
- পুরো নাম বলুন।
(তিনি কৌশল অবলম্বন স্বরুপ বললেন..)
-- পুরো নাম-ই মুহাম্মদ ইহসান।
(মুজাফফর সাহেব কিছুটা রেগে গিয়ে)
- না আপনি পুরো নাম বলছেন না।
-- আপনি আমাকে আমার নাম জিজ্ঞাসা করেছেন, আমি তো তা-ই বললাম।
- ব্যস, এতটুকুই আপনার নাম?
-- হ্যাঁ।
- নামের পর ক্বাদেরী/চিশতী/নক্সবন্দি কিছুই নাই?
-- কেন, থাকলে কি কোন আপত্তি আছে আপনার?
- সেটা না, আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছি আপনার পুরো নাম কি? আপনি তো বলছেনই না।
-- আমি কী বলছি বা বলছি না, এতে কি সমস্যা আপনার?
(এরপর পাশের থেকে কাছাউছা শরিফ থেকে আগত আল্লামা ইহসান এর একজন আলিম বন্ধু মুজাফফর সাহেবকে বললেন, আচ্ছা যদি পুরা নাম না বলে অর্ধেক বলে, তাহলে কি কোন সমস্যা আছে? এটা কি হারাম হবে? আরে ভাই, উনার নামই তো মুহাম্মদ ইহসান। মা-বাবা এই নাম রেখেছেন উনার। এই নামেই উনার আক্বীকা হয়েছে। এতে আপনার সমস্যাটা কোথায়?)
-আমি ইহসান সাহেবের সাথে কথা বলছি। আপনি কেন জবাব দিচ্ছেন? (আল্লামা ইহসানকে মুজাফফর বললো)উনি কি আপনার আপন ভাই??
-- হ্যাঁ, ঈমানী ভাই। নবীজী বলেছেন, নিশ্চয়ই মু'মিনগণ একে অপরের ভাই। আচ্ছা, আমি তো আপনাকে আমার সম্পূর্ণ নাম বলেই দিয়েছি। কি সমস্যা এতে আপনার?
-না না, কি সমস্যা? কিছুই না।
--আমার নাম মুহাম্মদ ইহসান। বাবার নাম মুহাম্মদ ইকবাল। এখন এরপর কি হবে না হবে সেটা দিয়ে আপনার লাভ কি? আপনার কি কোন বিশেষ উদ্দেশ্য আছে এ বিষয়ে? যদি উদ্দেশ্য থাকে, তবে আসুন আমরা বসে আলোচনা করি। এখানে তো কোন সমস্যার কিছুই নাই। 
(মুজাফফর সাহেব এবার জ্ঞান ঝাড়ার উদ্দেশ্যে বলতে লাগলো...)
- ব্যস এতটুকুই বলতে চাই, আপনি কোরান-হাদিস মোতাবেক মানুষকে পথ দেখাবেন। ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম মালেক সহ ইমামদের কথা অনুযায়ী মানুষকে পথ দেখাবেন। আপনার নামের পর "কাদেরী" শব্দটি সংযুক্ত আছে। "ইহসান কাদেরী"। আপনি বলুন, আল্লাহ কি কাদেরি হওয়ার কোন হুকুম দিয়েছেন কোথাও? নবীজী-সাহাবী সহ ইমামগণ কি এটা বলেছেন?
(মুজাফফর সাহেবের লোকেরা কিছু সময়ের জন্য আনন্দিত হয়ে গেলো। এরপরই আল্লামা ইহসানের পাল্টা পদক্ষেপ স্বরুপ সেখানেই মুনাযারার প্রস্তাব)
--ঠিক আছে, প্রথমে আপনি আমাকে এটা বলুন যে, আপনি যদি কথা বলতে চান এই বিষয়ে, তাহলে আসুন আমরা উভয়ে এখানেই বসবো। আমাদের দু'পক্ষের কথারই রেকর্ডিং হবে।
(মুনাযারার কথা শুনে মুজাফফর সাহেবের চোখ বড় বড় হয়ে গেল। সে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে বললো)
- না না আমি কেন বসবো? 
-- আচ্ছা যদি আপনি এই বিষয়ে বসতেই না চান, তবে আমার একটি প্রশ্নের জবাব দিন যে, 'আপনি যে লাল রুমালটি মাথায় পরে আছেন, সেই লাল রুমালটি কোরা'আন বা হাদিসের কোথায় আছে?
(মুজাফফর সাহেব তৎক্ষণাৎ-ই হতবম্ব হয়ে গেলো)
-আরে মিয়া, আপনি দেখছি আমাকে প্রশ্নের উপর প্রশ্ন করছেন!!
-- শুনুন, পাগড়ী আরবের ইজ্জত। আপনি আরবের ইজ্জতকে নিচে ফেলে দিয়েছেন। এই লাল রুমাল পরিধান করা কোথা থেকে নিয়ে আসলেন?
(উত্তর খুঁজে না পেয়ে মুজাফফর এবার তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠলো আর আল্লাম ইহসানকে বলতে লাগলো..)
-আপনি আলিম না, আপনি একজন জাহিল।
-- তাহলে আপনিও তো জাহিল। যদি আলিম হন, তবে মাথার উপর ঝুলানো এই লাল রুমালকে প্রমাণ করুন। আপনি জাহিল বিধায়ই এরকম কথা বলছেন। আলিম হলে কখনো আমাকে এসব কথা বলতেন না।
(মুজাফফর এবার চেষ্টা করছে তাকে করা প্রশ্নটা থেকে পলায়ন করতে। তো সে বললো..)
- আমি আপনাকে প্রশ্ন করলাম কাদেরি সম্পর্কে। আপনি আমার জবাব দেন!! 
--আচ্ছা, তো আপনি যখন জানেনই আমি কাদেরি সিলসিলার, তো আপনি বিনা কারণে কেন আমাকে আমার নাম নিয়ে প্রশ্ন করেছেন??
(এখনো মাথা গরম মুজাফফর সাহেবের। সে বললো...)
-আপনি ইসলাম থেকে সরে গিয়ে 'কাদেরি' হয়েছেন!!
(আল্লামা ইহসান বললেন..)
-- আচ্ছা, তাহলে আপনার মাথার উপর এই লাল রুমাল আবার কিরকম ইসলামি পদ্ধতি হলো?? বলেন আপনি!! 
(উত্তর দিতে না পেরে মুজাফফর সাহেবের মাথা এখন কয়েকশো ডিগ্রি গরম। সে বললো..)
- লাল রুমালকে আমি পোষাক হিসেবে পরিধান করেছি, ইসলামী পদ্ধতি মনে করে ব্যবহার করি নাই।
(ইহসান কাদেরি মুচকি হেসে বললেন..)
-- আচ্ছা, তাহলে পোষাকের কি কোন ইসলামী পদ্ধতি (সুন্নত) নির্দেশিত হয় নাই হাদিসে???
আল্লাহ তায়ালা বলছেন-
"লাক্বাদ কানা লাকুম ফি রাসূলিল্লাহি উসওয়াতুন হাসানাহ" (অর্থাৎ, নিশ্চয় তোমাদের জন্য রসূলুল্লাহর অনুসরণ উত্তম।) আমাদের নবীজী কি পোষাক পরিধান এর পদ্ধতি শেখান নাই?? আপনি তো দেখছি ইসলামকে ছেড়ে আপনার মনগড়া পদ্ধতিতে পোষাক পরিধান করছেন। এটা আবার কেমন কথা ভাই?? (পাশের লোকজন আল্লাহু আকবার বলা শুরু করলো)
(এবার মুজাফফর সাহেব অসহায় হয়ে বললো....)
-তাহলে আপনার পাগড়ী কোথায়?
--আমি তা এখন পরিধান না করলেও টুপি তো পরেছি, টুপিও তো সুন্নাত নাকি!! আপনি আপনার লাল রুমালকে প্রমাণ করুন হাদিসের আলোকে। জি হ্যাঁ, এটাকে প্রমাণ করুন।
(মুজাফফর সাহেব এবার কাপা কাপা সুরে বললো..)
- দেখুন, আমিও তো রুমালের নিচে টুপি পরেছি ।
--আরে ভাই, আমি তো টুপির কথা বলছি না, আমি বলছি টুপির উপর পরা লাল রুমালটি প্রমাণ করুন আপনি। আমি তো আলহামদুলিল্লাহ পাগড়ী পরিধান করি। আপনি কি আমার পাগড়ী পরিহিত কোন ছবি নেটে দেখেন নাই?? সেখানে তো আমি পাগড়ীও পরিধান করা ছিলাম।
(এখন মুজাফফর সাহেবের আমতা আমতা শুরু)
মাঝখান থেকে তৃতীয় কয়েকজন ব্যক্তি এসে আল্লামা ইহসান এবং মুজাফফর মাদানী'কে আলাদা করে দেয়। আর মুজাফফর সেখানেই লজ্জিত হয়ে অসহায় অবস্থায় বিড়বিড় করা শুরু করে।)

এই ছিলো নবীর দরবারে সত্যের বিজয় কাহিনী। এ ঘটনা থেকে আমাদের এখন শিক্ষা একটাই, সেটা হচ্ছে "সত্যিকারের আলিম এর গুরুত্ব"। আল্লামা ইহসান একজন আলিম হওয়াতেই বাতিলের মোকাবেলা করে নিজ এবং সাথে থাকা অন্যদের ঈমানকে আল্লাহর ফযল ও রহমতে হিফাযত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যদি তিনি জাহিল হতেন, তবে হয়তো দৃশ্যপট এরকম না হয়ে ভিন্ন হতো। তাই আমাদের বর্তমানে উচিৎ, যে যেখানেই আছি সেখানেই স্ব-উদ্যোগে একটি সুন্নি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা। হোক না সেটা একটা হিফযখানা থেকে শুরু। আমরা বর্তমান সময়ে সুন্নীয়তের খুবই ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছি। এর অন্যতম কারণ আমাদের আলেম এবং মাদ্রাসা সংকট; যেটা ভারত-পাকিস্তানে নাই। শেষমেস বাংলার যমীনে সুন্নিয়ত কায়েমে যার অবদান সবচেয়ে বেশি; আলে রাসূল, গাউসে জামান হযরত সাইয়্যেদ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহির একটি বাণী দ্বারা আমার এই শিশু কলমকে বিশ্রাম দিচ্ছি। হুজুর বলেন- "কাম কারো, ইসলাম কো বাচাঁও! দ্বীন কো বাঁচাও! সাচ্চা আলিম তাইয়্যার কারো! অর্থাৎ, তোমরা দ্বীনের জন্য কাজ করো, ইসলামকে(সুন্নীয়ত) রক্ষা করো! ধর্মকে রক্ষা করো! সত্যিকারের আলিম তৈরী করো! 

আল্লাহ তায়ালা আমাদের ঈমান-আমলকে পথহারাদের কালো হাত থেকে রক্ষা করুন। আমাদেরকে সালফে সালেহীন এবং আউলিয়ায়ে কিরামগণের রাস্তায় চলার তাওফিক দান করুন। আমিন, বিহুরমাতি সাইয়্যিদিল মুরসালিন।

বি:দ্র: হঠাৎ পারিবারিক একটি প্রয়োজনে ব্যস্ত থাকায় লেখাটি কথানুযায়ী গত রাতে দিতে পারিনি বলে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। সবার দোয়া কামনায় রইলাম।♥♥

সংগ্রহঃ https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=301214046974108&id=100012565453880
Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|