★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
রোযার মাকরূহ সমূহের ১২টি নিয়মাবলী - Mas'la Masayel Discussions on

রোযার মাকরূহ সমূহের ১২টি নিয়মাবলী



১. মিথ্যা, চোগলখোরী, গীবত, কুদৃষ্টি, গালিগালাজ করা, শরীয়তের অনুমতি
ব্যতীত কারো মনে কষ্ট দেয়া ও দাড়ি মুন্ডানো ইত্যাদি কাজ এমনিতেতো অবৈধ ও
হারাম বা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ, রোযায় আরো বেশি হারাম। সেগুলোর কারণে
রোযা মাকরূহ হয়ে যায়।
২. রোযাদারের জন্য কোন জিনিষকে বিনা কারণে স্বাদ গ্রহণ করা ও চিবুনো
মাকরূহ। স্বাদ গ্রহণের জন্য ওযর হচ্ছে, যেমন কোন নারীর স্বামী বদ-মেযাজী
তরকারী ইত্যাদিতে লবণ কমবেশি হলে রাগ করবে। এ কারণে স্বাদ গ্রহণে ক্ষতি
নেই। চিবুনোর জন্য ওযর হচ্ছে, এতোই ছোট শিশু আছে যে রুটি চিবুতে পারে
না; এমন কোন নরম খাদ্যও নেই যা তাকে খাওয়ানো যাবে; না আছে কোন
ঋতুস্রাব (**) কিংবা নিফাস সম্পন্না নারী অথবা এমন কেউ নেই, যে তা চিবিয়ে
দেবে, তাহলে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য রুটি ইত্যাদি চিবুনো মাকরূহ নয়।
(আদ দুররে মুখতার, খন্ড-৩য়, প-ৃ ৩৯৫)
.............................................................................................
** ঋতুস্রাব ও প্রসবোত্তরকালীন রক্তক্ষরণকালে (হায়য ও নিফাসসম্পনড়বা) নারীর
জন্য রোযা, নামায ও তিলাওয়াত না-জায়িয ও গুনাহ্। নামায তার জন্য মাফ;
কিন্তু পাক হয়ে যাবার পর রোযার কাযা আদায় করতে হবে।
কিন্তু এ ক্ষেত্রে পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বণ করবে। যদি কণ্ঠনালী দিয়ে কিছু
নিচে নেমে যায় তবে রোযা ভেঙ্গে যাবে।
স্বাদ গ্রহণ কাকে বলে?
স্বাদ গ্রহণের অর্থও তা নয়, যা আজকাল সাধারণ পরিভাষায় বলা হয়। অর্থাৎ
আজকাল বলতে শোনা যায়, ‘কোন জিনিষের স্বাদ বুঝার জন্য তা থেকে কিছুটা
খেয়ে নেয়া যাবে।’ এমন করা হলে মাকরূহ কিভাবে? বরং রোযাই ভেঙ্গে যাবে;
এবং কাফ্ফারার শর্তাবলী পাওয়া গেলে কাফ্ফারাও অপরিহার্য হয়ে যাবে। স্বাদ
নেয়ার অর্থ হচ্ছে-শুধু জিহ্বায় রেখে স্বাদ বুঝে নেবেন। আর সাথে সাথে তা থুুর
সাথে ফেলে দেবেন, তা থেকে যেন কণ্ঠনালী দিয়ে কিছু নিচে যেতে না পারে।
৩. যদি কোন জিনিষ কিনলো আর সেটার স্বাদ দেখা জরুরী। কারণ, স্বাদ না
দেখলে লোকসানের সম্ভাবনা থাকে। এমতাবস্থায় স্বাদ পরীক্ষা করতে ক্ষতি নেই,
অন্যথায় মাকরূহ। (দুররে মুখতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৫)
৪. স্ত্রীকে চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা এবং স্পর্শ করা মাকরূহ নয়; অবশ্য যদি এ
আশঙ্কা থাকে যে, বীর্যপাত হয়ে যাবে, কিংবা সহবাসে লিপ্ত হয়ে যাবে তাহলে করা
যাবে না। আর দুধের বোঁটা ও জিহ্বা শোষণ করা রোযার মধ্যে নিঃশর্তভাবে
মাকরূহ। অনুরূপভাবে ‘মুবাশারাতে ফাহিশাহ (অর্থাৎ বিবস্ত্রাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী
পরস্পর যৌনাঙ্গ লাগানো মাকরূহ)*। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৬)
৫. গোলাপ কিংবা মুশক ইত্যাদির ঘ্রাণ নেয়া, দাড়ি ও গোঁফে তেল লাগানো ও
সুরমা লাগানো মাকরূহ নয়। (আদ দুররুল মুখতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৭)
................................................................................................
** বিবাহ শাদীর নিয়্যত সম্পর্কিত বিষয় সমূহ জানার জন্য ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ, খন্ড-২৩, পৃ-
৩৮৫-৩৮৬ তে ৪১, ৪২ নম্বর মাসআলা অধ্যয়ন করুন।

৬. রোযা রাখা অবস্থায় যে কোন ধরণের আতরের ঘ্রাণ নেয়া যেতে পারে। আর
কাপড়েও ব্যবহার করা যাবে। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৭)
৭. রোযা পালনকালে মিসওয়াক করা মাকরূহ নয় বরং অন্যান্য দিনগুলোতে যেমন
সুনড়বত তেমনি রোযায়ও সুনড়বত। মিসওয়াকও শুষ্ক হোক কিংবা ভেজা, যদিও পানি
দ্বারা নরম করে নেয়া হয়, সূর্য পশ্চিম দিকে হেলার পূর্বে করুক কিংবা পরে করুক,
কোন সময় বা কোন অবস্থাতেই মাকরূহ নয়। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৯)
৮. বেশির ভাগ মানুষের মধ্যে এ কথা প্রসিদ্ধ যে, রোযাদারের জন্য দুপুরের পর
মিসওয়াক করা মাকরূহ। এটা আমাদের হানাফী মাযহাবের মাসআলা বিরোধী
কথা। (প্রাগুক্ত)
৯. যদি মিসওয়াক চিবুলে আঁশ ছুটে যায়, স্বাদ অনুভুত হয়, এমন মিসওয়াক
রোযা পালনকালে ব্যবহার করা উচিত নয়।
(ফাতাওয়ায়ে রযবীয়্যাহ্ সংশোধিত, খন্ড-১০,. পৃ-৫১১)
যদি মিসওয়াকের কোন আঁশ কিংবা কোন অংশ কণ্ঠনালীর নিচে নেমে যায়, তবে
রোযা ভেঙ্গে যাবে।
১০. ওযু ও গোসল ব্যতীত ঠান্ডা পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে কুলি− করা কিংবা নাকে পানি
দেয়া অথবা ঠান্ডার খাতিরে গোসল করা বরং শরীরের উপর ভেজা কাপড় জড়ানো
মাকরূহ নয়। অবশ্য পেরেশানীভাব প্রকাশের জন্য ভেজা কাপড় জড়ানো মাকরূহ,
ইবাদত পালনে মনকে সঙ্কুচিত করা ভালো কথা নয়। (রদ্দুল মুহতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৩৯৯)
১১. কোন কোন ইসলামী ভাই বারংবার থুু ফেলতে থাকে। হয়তো সে মনে করে
যে, রোযা পালনকালে থুু গিলে ফেলা উচিত নয়। মূলতঃ এমন নয়। অবশ্য,
মুখে থুু একত্রিত করে গিলে ফেলা-এটাতো রোযা ছাড়া অন্য সময়েও অপছন্দনীয়
কাজ। আর রোযা পালনকালে মাকরূহ। (বাহারে শরীয়ত, খন্ড-৫ম, পৃ-১২৯)

১২. রমযানুল মুবারকের দিনগুলোতে এমন কোন কাজ করা জায়িয নয়, যার
কারণে এমন দূর্বলতা এসে যায় যে, রোযা ভেঙ্গে গেছে এমন ধারণা জন্মে যায়।
সুতরাং রুটি তৈরীকারীর উচিত হচ্ছে, দুপুর পর্যন্ত রুটি পাকাবে, তারপর বিশ্রাম
নেবে। (দুররুল মুখতার, খন্ড-৩য়, পৃ-৪০০)
এ বিধান রাজমিস্ত্রি, মজদুর ও অন্যান্য পরিশ্রমী লোকদের জন্যও। বেশি দূর্বলতার
সম্ভাবনা হলে কাজের পরিমাণ কমিয়ে নিন, যাতে রোযা সম্পনড়ব করতে পারেন।

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|