আমিরুল মুমিনীন হযরতে মাওলায়ে কাইনাত আলী মুরতাজা শেরে খোদা বলেন, “যে কেউ শবে ক্বদরে সূরা ক্বদর সাতবার পড়বে,
ّٰআল্লাহ তাআলা তাকে প্রত্যেক বালা মুসীবত থেকে নিরাপত্তা দান করেন। আর সত্তর হাজার ফিরিশতা তার জন্য জান্নাত প্রাপ্তির দু’আ করেন। যে ব্যক্তি (সারা বছরে যখনই) জুমার দিন জুমার নামাযের পূর্বে তিনবার সূরা ক্বদর পড়ে আল্লাহ তাআলা ওই দিনে সমস্ত নামায সম্পন্নকারীর সংখ্যার সমান নেকী তার আমল নামায় দান করেন।” (নূযহাতুল মাজালিস, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ২২৩)
আমার মাথার মুকুট, মি’রাজের দুলহা হযরত মুহাম্মদ এর বরকতময় দরবারে আরয করলাম, হে আল্লাহর রসূল আমি যদি শবে ক্বদর সম্পর্কে জানতে পারি তবে আমি কি পড়বো? সারকারে আবাদকরার, শফীয়ে রোযে শুমার হযরত মুহাম্মদ
অর্থ ঃ- হে আল্লাহ নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল। তুমি ক্ষমা পছন্দ করো। তাই আমাকে ক্ষমা করো। (তিরমিযী, খন্ড ৫ম, পৃষ্ঠা ৩০৬, হাদিস নং ৩৫২৪)
শবে ক্বদরের নফলসমূহঃ
হযরত সায়্যিদুনা ইসমাঈল হক্কী رحمة الله عليه তাফসীর-ই-রূহুল বয়ান এর মধ্যে এ বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন, “যে ব্যক্তি শবে ক্বদরের নিয়্যতে নিষ্ঠা সহকারে
নফল পড়বে, তার পূর্বাপর গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে।”
(রূহুল বয়ান, খন্ড ১০ম, পৃষ্ঠা ৪৮০)
হুযুর ﷺ যখন রমযানুল মুবারকের শেষ দশদিন
আসতো তখন ইবাদতের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে নিতেন। সেগুলোর মধ্যে রাতে
জাগ্রত থাকতেন। নিজ পরিবারের সদস্যদেরকে জাগাতেন।
(সুনানে ইবনে মাজাহ, খন্ড ২য়, পৃষ্ঠা ৩৫৭, হাদিস নং ১৭৬৮)
হযরত সায়্যিদুনা ইসমাঈল হককী رحمة الله عليه
উদ্ধৃত করেছেন,
বুযুর্গানে দ্বীন رحمة الله عليه
এ দশ দিনের প্রতিটি রাতে দু’রাকাআত নফল নামায
শবে ক্বদরের নিয়্যতে পড়তেন। তাছাড়া কিছু সংখ্যক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি থেকে
উদ্ধৃত, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে দশটি আয়াত এ নিয়্যতে পড়ে নেবে, সে সেটার
বরকত ও সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে না। আর ফকীহ্ আবুল লায়্স সমরকন্দীرحمة الله عليه
বলেন, শবে ক্বদরের নামায কমপক্ষে দু’রাক’আত, বেশীর চেয়ে
বেশী ১০০০ রাক’আত। মাঝারী পর্যায়ের হচ্ছে ২০০ রাক’আত।
প্রত্যেক রাক’আতে মাঝারী পর্যায়ের কিরাত হচ্ছে সূরা ফাতিহার পর
একবার সূরা ক্বদর ও তিনবার সূরা ইখলাস পড়বেন। আর প্রত্যেক দু’রাক’আতের পর সালাম ফেরাবেন। সালামের পর মাদিনার তাজেদার, উভয় জগতের সরদার,
হযরত মুহাম্মদ ﷺ এর উপর দুরুদ শরীফ পাঠ করবেন।
তারপর নামাযের জন্য দাঁড়িয়ে যাবেন। এভাবে, নিজের শত রাকআত,
কিংবা তদপেক্ষা কম বা বেশীর, যে নিয়্যত করেছেন তা পূরণ করবেন। সুতরাং
এমনি করা এ শবে ক্বদরের মহা মর্যাদা, যা আল্লাহ তাআলা বর্ণনা করেছেন, আর
যা মাদিনার তাজেদার, উভয় জগতের সরদার, হযরত মুহাম্মদ ﷺ ইরশাদ
করেন, “তোমাদের উপর এমন এক মাস এসেছে, যাতে একটি রাত এমনও
আছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এ রাত থেকে বঞ্চিত রয়েছে, সে পূর্ণ
কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। (যে শবে ক্বদরের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রইল, সে
আসলেই কল্যাণ থেকে বঞ্চিত রইল।) (মিশকাত, ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৭২, হাদিস নং ১৯৬৪)
Comments