★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
হজ্জ করার নিয়মাবলি -লিঙ্কে ক্লিককরে সমপূর্ণ্ন পড়ুন - Mas'la Masayel Discussions on

হজ্জ করার নিয়মাবলি -লিঙ্কে ক্লিককরে সমপূর্ণ্ন পড়ুন

edited August 2017 in Mas'la Masayel

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
হজ্জ ইসলামের পঞ্চস্তম্বের একটি জরুরী স্তম্ব। সামর্থবানদের ওপর হজ্জ আদায় করা ফরজ। কেউ যদি হজ্জ ফরজ হওয়ার বিষয় মানতে অস্বীকার করে, সে কাফির হয়ে যাবে। হজ্জের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তালা পবিত্র কুরআনে ইর্শাদ করেছেন, “বাইতুল্লাহ শরীফে পৌছিতে সামর্থবান লোকদের উপর আল্লাহর উদ্দেশ্য বায়তুল্লাহর হজ্জ আদায় করা কর্তব্য। কেউ যদি তা মানতে অস্বীকার করে, তাহলে (সে জেনে নিক) আল্লাহ সৃষ্টির প্রতি মুখাপেক্ষী নন।“(সুরা আল-ইমরান, আয়াতঃ ৯৭) তাই হজ্জ একটি গুরুত্তপুর্ন ইবাদত, যা আল্লাহর ঘর কাবাশরীফকে কেন্দ্র করে আরবী বছরের শেষ মাস অর্থাৎ জিলহজ্জ মাসে অনুস্টিত হয়। ইহা একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এ কারনে একমাত্র ধনী ও সুস্থ-সবল পুরুষ-মহিলাদের জন্য জীবনে একবার হজ্জ করা ফরজ।
তবে মহিলাদের সাথে মাহরাম (বিবাহ হারাম এমন পুরুষ) থাকা আবশ্যক।
হজ্জ আদায়কারীর জন্য হজ্জের প্রয়োজনীয় ফরজ, ওয়াজিব সহ যাবতীয় মাসাআলা মাসায়িল জেনে নেয়া একান্ত প্রয়োজন। ইহা সামনে রেখেই আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বিস্তারিত জানার জন্য বিজ্ঞ উলামাদের শরনাপন্ন হওয়া জরুরী। তাছাড়া হজ্জের মত গুরুত্বপুর্ন সফর কোন যোগ্য আলেমের সাথে করা প্রয়োজন।
হজ্জের ফাজায়িল

হাদিসঃ
নবীয়ে কারীমﷺ ইরশাদ করেন, অনিবার্য প্রয়োজন অথবা অত্যাচারী শাসক কিংবা কঠিন রোগ যদি হজ্জ পালন করতে কাউকে বিরত না রাখে আর সে হজ্জ পালন না করেই মৃত্যুবরন করে, তার মৃত্যু যেন ইয়াহুদ নাসারার মৃত্যু। (দারিমী)
হুজুরে পাক ﷺ আরো  যে ব্যক্তি হজ্জ করে, এবং ইহাতে বাজে কথা বলেনা আর কোন গুনাহের কাজ করেনা, সে নিজের গুনাহ থেকে এমন ভাবে মুক্ত ও পবিত্র হয়ে ফিরে, যেন তার মা তাকে এখনই প্রসব করেছে। (বুখারী/মুসলিম)

হজ্জঃ
৯ই জিলহজ্জ উকুফে আরাফার পুর্বে হজ্জের ইহরাম বেঁধে ১৩ই জিলহজ্জ পর্যন্ত কয়েকটি বিশেষ আমল আদায় করার নামই হজ্জ।

উমরাহ্‌
ইহরাম অবস্থায় বায়তুল্লাহ শরীফের তওয়াফ এবং সাফা-মারওয়ার সাঈ (৭চক্কর) করার পর হলক (মাথা মুন্ডানো) করে ইহরাম মুক্ত হওয়ার নাম উমরাহ। হজ্জের ৫ দিন ছাড়া বছরের যে কোন সময়ে উমরাহ করা যায়।

হজ্জ ফরজ হওয়ার শর্তাবলী
(১) মুসলমান হওয়া। (২) বুদ্ধিসম্পন্ন ও বালেগ হওয়া। (৩) শারিরীক সামর্থ থাকা। (৪) আর্থিক সামর্থ থাকা।(হজ্জের খরছ বহন এবং পরিবারের বরন-পোষনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পত্তি) (৫) মহিলাদের সাথে হজ্জের পুরো সময়ে মাহরাম থাকা। (৬) যাতায়াতের রাস্তা নিরাপদ হওয়া। (৭) উল্লেখিত শর্ত পুরনে সক্ষম অবস্থায় যেকোন হিজ্জ মওসুম অতিক্রম করা।

হজ্জের ফরজ ৩টি
(১) ইহরাম বাধা। (২) উকুফে আরাফা করা।(৯ই জিলহজ্জ আরাফার ময়দানে অবস্থান) (৩) তওয়াফে যিয়ারত। (তওয়াফে ইফাদা)

হজ্জের ওয়াজিব ৬টি
(১) সাফা ও মারওয়া উভয় পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানে সাত বার সাঈ করা।
(২) ৯ই জিলহজ্জ দিবাগত রাত্রে মিযদালিফায় অবস্থান করা।
(৩) মিনায় জামারাহ সমূহের উপর রমী’ অর্থাৎ কঙ্কর নিক্ষেফ করা।
(৪) হজ্জে কিরান বা হজ্জে তামাত্তো আদায়কারীর জন্য কোরবানী করা।
(৫) ইহরাম ভঙ্গ করার পর মাথার চুল ছাঁটা অথবা মুন্ডানো।
(৬) মক্কার বাহিরের লোকদের জনয বিদায়ী তওয়াফ করা।

হজ্জ ৩ প্রকার
(১) হজ্জে তামাত্তুঃ মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে উমরাহ করে হালাল হয়ে যাওয়া অতঃপর ৮ই জিলহজ্জ নতুন করে হজ্জের জন্য ইহরাম বাঁধা। অর্থাৎ উমরাহ এবং হজ্জ এর নিয়ত আলাদা ভাবে করা।
(২) হজ্জে কিরানঃ মীকাত থেকে ইহরাম বেঁধে একই ইহরামে উমরাহ ও হজ্জ করা। অর্থাৎ উমরাহ এবং হজ্জ এর নিয়ত এক সাথে করা।
(৩) হজ্জে ইফরাদঃ মীকাত থেকে শুধু মাত্র হজ্জের উদ্দেশ্যে ইহরাম বেঁধে হজ্জ করা। অর্থাৎ শুধুমাত্র হজ্জের নিয়ত করা।

উমরাহের বিবরণ
১) মীকাত থেকে উমরার নিয়ত করে ইহরামের কাপড় পরিধান করে তলবিয়া পড়বেন (পুরুষেরা জোরে জোরে আর মহিলাগন চুপে চুপে) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা-শারীকা লাক’’
২) পবিত্র মক্কায় শরইফ পৌছে সাত চক্কর কাবা শরীফের চারিদিকে তাওয়াফ করবেন। আল্লাহু আকবর বলে হাজারে আসোয়াদ থেকে তাওয়াফ শুরু করবেন পুনরায় হাজারে আসোয়াদের কাছে গিয়ে শেষ করবেন। তাওয়াফ কালীন সময়ে ইচ্ছামত শরীয়তসম্মত যিকর ও দোয়া পাঠ করবেন। দোয়া নিজের ভাষায় ও পড়তে পারেন। এভাবে সাত চক্কর সম্পন্ন করবেন। তাওয়াফ শেষ করে জমজমের পানি পান করবেন এবং মাকামে ইব্রাহীমের পিছনে দু রাকাত নামায পড়বেন।
৩) তারপর সাফা-মারোয়ায় সাঈ করবেন। সাফা থেকে মারওয়ায় এক চক্কর এবং মারওয়া থেকে সাফা পর্যন্ত এক চক্কর, এভাবে মারওয়াতে গিয়ে সাত চক্কর পুর্ন করবেন।
৪) সাঈ পুর্ন করে মাথার চুল মুন্ডাবেন অথবা ছোট করবেন।(মহিলাদের জন্য চুলের অগ্রভাগ এক ইঞ্চি পরিমাণ ছোট করা)

হজ্জের বিবরণ
১) হজ্জের নিয়ত করে ইহরামের কাপড় পরিধান করে তলবিয়া পড়বেন। (পুরুষেরা জোরে জোরে আর মহিলাগন চুপে চুপে) “লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা-শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মূলক, লা-শারীকা লাক’’
২) ৮ই জিলহজ্জ মীনার দিকে রওয়ানা হবেন, সেখানে জোহুর, আছর, মাগরিব ও ইশা এবং ৯ই জিলহজ্জ ফজরের নামায পড়বেন।
৩) ৯ই জিলহজ্জ সুর্য্য উদয়ের পর মীনা থেকে আরাফাতের দিকে রওয়ানা হবেন। সেখানে পুর্ন তিন দিন অবস্থান করবেন, এবং বেশী বেশী করে দোয়া ও ইস্তিগফারে মশগুল থাকবেন। যোহরের সময় যোহরের নামায এবং আসরের সময় আছরের নামায কছর আদায় করবেন।
৪) সুর্য্য অস্ত যাওয়ার পর ধীরে ধীরে তলবিয়া পড়তে পড়তে মুযদালিফার উদ্দেশ্যে গমন করবেন। সেখানে পৌঁছে (ইশার সময়) মাগরীব ও ইশার নামায একত্রে পড়বেন এবং ইশার নামায কছর আদায় করবেন। রাত্রে মটরের দানার সমান ৪৯টি কংকর তুলে নিবেন।
৫) ১০ই জিলহজ্জ ফজর পড়ে সুর্য্য উদয় হওয়ার কিছু পুর্বে তলবিয়া পড়তে পড়তে মীনার দিকে যাত্রা করবেন এবং দুপুরের আগে জামারাতুল আকাবায় (বড় শয়তানের উপর) আল্লাহু আকবর বলে পর পর সাতটি কংকর নিক্ষেপ করবেন।(সুর্য্য উদয় থেকে দুপুরের পুর্ব পর্যন্ত কংকর নিক্ষেপ করা সুন্নত, দুপুরের পর থেকে সুর্য্যাস্ত পর্যন্ত কংকর নিক্ষেপ করা মুবাহ, এবং সুর্য্যাস্ত থেকে ফজর পর্যন্ত নিক্ষেপ করা মাকরুহ।
৬) তারপর কোরবানী করে মাথার চুল হলক (মুন্ডানো) অথবা ছোট করবেন (মহিলাদের জন্য চুলের অগ্রভাগ এক ইঞ্চি পরিমান ছোট করা।)
৭) তাপর মক্কায় এসে তাওয়াফে যিয়ারত (তাওয়াফে ইফাদা) করবেন।
8) তারপর সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ করবেন।
৯) ১০ই জিলহজ্জ তাওয়াফ এবং সাঈর পর মীনায় ফিরে আসবেন এবং সেখানে ১১ ও ১২ তারিখ দুপুরের পর তিনটি জামারায় আল্লাহু আঁকাবর বলে সাতটি করে কংকর(মোট ২১টি করে দুদিন) নিক্ষেপ করবেন। (প্রথমে ছোট শয়তান, তারপর মেঝ শয়তান এবং তারপর বড় শয়তান)
১০) হজ্জের কাজ সম্পন্ন করার পর নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করার আগে কাবা শরীফের তাওয়াফ করতে হবে। এই তাওয়াফের নাম তাওয়াফে বিদা বা বিদায়ী তাওয়াফ। তারপর মদীনা মুনাওয়ারার দিকে সফর করুন।

জিয়ারতে মদীনা মুনাওয়ারা
হাদিস
হযরত আব্দুল্লা বিন উমর (রাদিয়াল্লাহুআনহু) বর্ননা করেন, যে রাসুলﷺবলেন, যে ব্যক্তিআমার কবর জিয়ারত করবে তার জন্য আমার শাফায়াত ওয়াজিব হয়ে যাবে।(দারকুত্নী)
হুজুরে পাক ﷺআরো , আমার কবর ও আমার মিম্বরের মধ্যখানে যে জায়গা আছে তা জান্নাতের বাগানসমূহের একটি বাগান এবং আমার মিম্বর আমার হাউজ (কাউসার) এর উপর অবস্থিত। (সহিহাইন)
হাদিসে আছে আল্লাহ তা’লা একজামাত ফিরিস্তা সৃষ্টি করে রেখেছেন যাদের কাজ হচ্ছে, জিয়ারতের ইচ্ছা পোষণকারীর দুরুদের তুহফা হুজুর ﷺএর দরবারে পৌছে দেয়া। তার আরজ করেন যে, অমুকের সন্তান অমুক জিয়ারতে এসেছেন এবং এই তুহফা অগ্রে পাটিয়েছেন।(যাদুল্কুলুব)
আদব
আদব ও ভক্তি সহকারে মদিনাতুল মুনাওয়ারার দিকে সফর শুরু করুন। পাক পরিষ্কার হয়ে শান্ত, গম্ভীর্য, আদব ও সম্মানের সাথে দৃষ্টি নিছু করে মহান দরবারের দিকে রওয়ানা হবেন। মদিনা শরীফে বাবে জিব্রিল দিয়ে প্রবেশ করা উত্তম, অনুরুপ যে কোন দরজা প্রবেশ করতে পারবেন। প্রবেশকালে ‘’বিসমিল্লাহি আসলাতু ওয়াসলামু আলা রাসুলিল্লাহি পড়ে ডান পা ভিতরে রাখবেন। অতপর রিয়াজুল জান্নাতে গিয়ে দু রাকাত ‘তাহিয়াতুল মসজিদ’ নামাজ পড়ুন, যদি মকরুহ ওয়াক্ত নাহয়। অতঃপর খুব মহব্বতের সাথে হুজুর ﷺএর রওজায়ে আথহরের সামনে হাজির হয়ে কবরে জীবিত খেয়াল করে দুরুদ ও সালাম পেশ করুন।
কতিপয় মুবারক সংক্ষিপ্ত দুরুদ ও সালাম
আসসালাতু ওয়াসলামু আলাইকা ইয়া নাবীয়াল্লাহ
আসসালাতু ওয়াসলামু আলাইকা ইয়া হাবীবাল্লাহ
ইআসসালাতু ওয়াসলামু আলাইকা য়া খাইরি খালকিল্লাহ
আসসালাতু ওয়াসলামু আলাইকা ইয়া খাতামুল আম্বিয়া
আসসালাতু ওয়াসলামু আলাইকা ইয়া সাইয়েদিল আম্বিয়ায়ি ওয়াল মুরসালীন ওয়া রাহ্মাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ
তারপর হযরত আবু বকর (রাদিয়াল্লাহুআনহু), হযরত উমার (রাদিয়াল্লাহুআনহু), এর উপর সালাম পেশ করবেন। রওজায়ে আথহরের জিয়ারত বাদে জান্নাতুল বাকিতে প্রবেশ করে হযরত উসমান (রাদিয়াল্লাহুআনহু), আয়েশা (রাদিয়াল্লাহুআনহা), ফাতিমাতুজ জোহরা (রাদিয়াল্লাহুআনহা), সাহাবায়ে কেরাম ও হুজুরের অন্যান্য বিবি গনের কবর জিয়ারত করবেন।

হজ্জ ও উমরাহের সময় সহজ কিছু দোয়া সমূহ
(১) নিয়ত বাঁধার পর পড়ুনঃ
• লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারীকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা-শারিকা লাক।
(২) ইহরামের নামাযেরপরহাততুলেদোয়াকরুনএবংপড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ ফিরতুকা আওছাউ মিন জুনুবী ওয়া রাহমাতুকা, আরজা ইন্দি মিন আমালী।

অর্থঃ- হে আল্লাহ,তুমার ক্ষমা আমার গুনাহের চেয়ে অত্যন্ত প্রশস্ত এবং আমার আমলের চেয়ে তোমার রহমতের প্রতি আমি অধিক আশ্বস্ত। হে আল্লাহ আমি তুমার কাছে তওবা করছি, আমি গুনাহের দিকে কখনও ফিরে যাবনা।
(৩) এহরামের নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদুল উমরাতা ফাইয়াছ ছিরহা লী, ওয়া তাকাব্বালহা মিন্নি।

অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি উমরাহ পালনের নিয়ত করছি। তা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।
(৪) মসজিদে হারামে প্রবেশ করে এই দোয়া পড়ুনঃ
• আল্লাহুম্মাগ ফিরলী যুনুবী ওয়াফতাহলী আবোয়াবা রাহ্মাতিকা।

অর্থঃ- হে আল্লাহ,আমার সকল গুনাহ মাফ করুন, এবং আমার জন্য আপনার রহমতের দরওয়াজা সমুহ খুলে দিন।

(৫) তওয়াফ শুরুর পুর্বে এই দোয়া পড়ুনঃ (কালরেখারউপরদাঁড়িয়ে)
• আল্লাহুম্মা ইন্নি উরীদু তাওয়াফা বাইতিকাল হারামী ছব’আতা আশোয়াতিনলিল্লহি তা’য়ালা ফাইছছিরহুলী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।

অর্থঃ- হে আল্লাহ আমি তুমার বায়তুল হারামকে সাত চক্ষরে তোয়াফ করার ইচ্ছা করছি একমাত্র তুমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য। আমার জন্য তা সহজ করে দিন।এবং কবুল করে নিন।
(৬) হাজরে আছওয়াদেচুমু দেয়ার সময় পড়ুনঃ (৮চক্ষরে আঁট বার)
• আল্লাহু আকবর লাইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াছছালাতু ওয়াছছালামু আলা রাসুলিল্লাহি।
(৭)হাজরে আছোয়াদও রুকনেইয়ামানীর মধ্যখানেরদোয়া সমূহঃ
• সুবহানাল্লাহি ওয়ালহামদুলিল্লাহি ওয়া লাইলাহা, ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার,ওয়ালাহাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহি।
লাইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ যোয়ালিমীন।

অর্থঃ- আল্লাহ পবিত্র এবং সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য, আল্লাহ ছাড়া ইবাদতের কেউ নেই। আল্লাহ তালা সব ছেয়ে মহান। ভাল কাজ করার শক্তি এবং মন্দ কাজ থেকে বেচে থাকার সামর্থ্য আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়।
হে আল্লাহ, তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নাই, তুমি পবিত্র, নিশ্চয় আমি অত্যাচারকারীদের অন্তর্ভুক্ত।
• আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফউয়া, ফা’ফু আন্নী।

অর্থঃ- হে আল্লাহ, নিশ্চয় আপনি অত্যান্ত ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ কর,আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।

• রাব্বিগ ফিরলী ওয়াতুব আলাইয়্যা ইন্নাকা আন্তাত তাওয়াবুর রাহীম।

অর্থঃ- হে আমার প্রতিপালক, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি তওবা গ্রহনকারি দয়ালু।

• আছতাগ ফিরুল্লাহাল লাজি লাইলাহা ইল্লাহুয়াল হাইয়ুল কাইয়ুমু ওয়াতুবু ইলাইহি,
আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা রিজাকা ওয়াল জান্নাতা ওয়া আউজু বিকা মিন গাজাবিকা ওয়ান্নারি।

অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি তুমার কাছে তুমার সন্তুষ্টি ও জান্নাত চাচ্ছি। এবং তুমার অসন্তুষ্টি ও দোজখ থেকে পানাহ চাচ্ছি।

• রাব্বানা আতিনা ফিদ্দোনিয়া হাসানা, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানা, ওয়াকিনা আজাবান্নারি। ওয়া আদখিলনাল জান্নাতা মা’আল আব্রারি। ইয়া আজিজু ইয়া গাফফারু, ইয়া রাব্বাল আলামীন।

অর্থঃ- হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে দুনিয়াতেও কল্যাণ দান করুন ও পরকালের কল্যাণ দান করুন। এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন। পুণ্যবানদের সাথে আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান। হে মহা সম্মানী, হে মহা ক্ষমাকারি, হে সমস্ত জাহানের পালনকর্তা।
(৮) জমজমের পানি পান করার সময় এই দোয়া পড়বেনঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নী আসাআলুকা ইলমান নাফিয়া, ওয়া রিজকান ওয়াসিয়া, ওয়া আমালান সোয়ালিহা, ওয়া শিফাআম মিন কুল্লি দায়িন।

হে আল্লাহ, আমি তুমার কাছে উপকারী জ্ঞান, প্রশস্ত রিজিক, নেক আমল, এবং প্রত্যেক রুগ থেকে আরুগ্যতা চাচ্ছি।
(৯) সাফা পাহাড় আরোহণ কালে এই দোয়া পড়বেনঃ
• আব্দাউ বিমা বাদাআল্লাহু তাআলা বিহি ইন্নাস সাফা ওয়াল মারোয়াতা মিন শাআইরিল্লাহি।

অর্থঃ- আমি এই জায়গা থেকে সাঈ আরম্ভ করছি, যার উল্ল্যেখ আল্লাহ তালা প্রথমে করেছেন, নিশ্চয় সাফা এবং মারওয়া আল্লাহ তালার নিদর্শন সমূহের অন্ত্ররভুক্ত।

(১০) সাফা-মারোয়ার সাঈর নিয়তঃ
• আল্লাহুম্মা ইন্নী উরীদুছ সাঈয়া বাইনাসসাফা ওয়াল মারোয়াতি সাব’আতা আসোয়াতিন লিল্লাহি তালা ফাইছছিরহু লী ওয়া তাকাব্বালহু মিন্নী।

অর্থঃ- হে আল্লাহ, আমি সাফা ও মারোয়ার মধ্যখানে সাত চক্ষরে সাঈ করার নিয়ত করছি একমাত্র তুমার সন্তুষ্টি লাভের জন্য, আমার জন্য তা সহজ করে দিন এবং কবুল করে নিন।
(১১) সাঈ এর সময় সবুজ দুটি স্তম্বের মধ্যখানে এই দূয়া পড়বেনঃ
• রাব্বিগ ফির ওয়ারহাম ইন্নকা আন্তাল আআজ্জুল আকরাম।
অর্থঃ- হে প্রতিপালক, আপনি আমাকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন। নিশ্চয় আপনি সকলের উপর ক্ষমতাশীল ও সবচেয়ে বেশী সম্মানী।
(১২) আরাফার মাঠে, মীনায়, মুযদালিফায় ও চলতে ফিরতে সব সময় এই তাছবিহ গুলো পড়বেনঃ
• আল্লাহু আকবর আল্লাহু আকবার লাইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
**সুবহানাল্লাহ, **আলহামদুলিল্লাহ, **লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, **আল্লাহু আকবার।
**আস্তাফিরুল্লাহাল লাজি লাইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়ুল কাইকুমু ওয়াতুবু ইলাইহি।

এক নজরে হজ্জ ও উমরাহের কয়েকটি পরিভাষা এবং বিশেষ স্থান সমূহঃ
১) ইহরামঃ এর অর্থ হারাম করা। হজ্জ ও উমরাহের নিয়ত করে তল্বিয়া পাঠ করার পর কতিপয় হালাল বস্তু তাদের উপর হারাম হয়ে যায়। এজন্য তাকে ইহ্রাম বলে।
২) তলবিয়াঃ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক——-পুরোটার নাম তলবিয়া।
৩) মীকাতঃ যেখান থেকে হজ্জ ও উমরার ইহরাম বাঁধা হয়।
৪) হারামঃ মক্কা মদিনার চারদিকের বেশ দূর পর্যন্ত এলাকাকে হারাম বলা হয়। এর ভিতরে স্থলজ প্রাণী শিকার করা, বৃক্ষ কাটা, পশুকে ঘাস খাওয়ানো হারাম।
৫) তোয়াফঃ বিশেষ পদ্ধতিতে কাবা ঘরের চারিদিকে প্রদক্ষিন করা।
৬) রমলঃ তওয়াফের প্রথম তিন চক্কর বীরের ন্যায় সাহসের সাথে বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে চলা।
৭) ইজতেবাঃ ইহরামের চাদর ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেছিয়ে এনে বাম কাঁধের উপর রাখা। তবে নামাযের সময় কাঁধ ঢেকে নামায পড়তে হয়।
8) জামারাতঃ মীনায় অবস্থিত তিনটি স্তম্ব যেগুলোকে পরুক্ষ ভাবে শয়তান বলা হয়।
১০) রমীঃ কঙ্কর নিক্ষেপ করা।
১১) হাজারে আসোয়াদঃ কাবা শরীফের পর্ব দক্ষিন কোনে স্থাপিত কালো পাথর।
১২) মাকামে ইব্রাহীমঃআলায়হিওয়াসাল্লাম যেখানে একটি বেহেস্তী পাথর রাখা আছে, যে পাথরের উপর দাঁড়িয়ে হযরত ইব্রাহীম (আলায়হিওয়াসাল্লাম) ক্বাবা ঘর মেরামত করেছিলেন।
১৩) মাথাফঃ ক্বাবা ঘরের চতুর্দিকের খোলা জায়গা, যেখানে তোয়াফ করা হয়।
১৪) উকুফে আরাফাঃ ৯ই জিলহজ্জ আরাফার মাঠে আবস্থান করা।
১৫) জাবালে রহমতঃ আরাফার একটি পাহাড় যেখানে দাড়িয়ে হুজুর ﷺ বিদায় হজ্জের ভাষণ দিয়েছিলেন।
১৬) মসজিদে খায়েফঃ মীনায় অবস্থিত মসজিদ যেখানে ৭০ জন নবী নামায আদায় করেছিলেন।
১৭) মসজিদে নামিরাঃ আরাফার মসজিদ।
১৮) মসজিদে তানঈম বা মসজিদে আয়িশাঃ মক্কার কাছে অবস্থিত মসজিদ যেটাকে উমরা মসজিদও বলা হয়। যেখান থেকে উমরাহের ইহরাম বাধা হয়।
১৯) জান্নাতুল মুওয়াল্লাহঃ মক্কা শরীফের নির্দৃস্ট বতকত্ময় কবরস্থান।
২০) জান্নাতুল বাকীঃ মদীনা শরীফের নির্দৃস্ট বরকত্ময় কবরস্থান।
২১) মসজিদে কুবাঃ মদিনা শরীফে অবস্থিত ইসলামের প্রথম মসজিদ।
২২) মসজিদে কিবলাতাইনঃ মদিনা শরীফের যে মসজিদে নবী করীমﷺমসজিদে আকসার দিকে মুখ করে যোহরের নামায পড়া অবস্থায় কাবা শরীফের প্রতি মুখ ফিরিয়েছিলেন।
২৩) মসজিদে ঘামামাহঃ মদিনা শরীফের দক্ষিন পশ্চিম কোনে অবস্থিত মসজিদ যে খানে রাসুল ﷺ ঈদের নামায পড়তেন। ইহরাম অবস্থায় যা করা নিষেধ
(১) চুলকাঁটা, কামানো বা ছিঁড়ে ফেলা।
(২) নখ কাটা বা ছিঁড়ে ফেলা।
(৩) মাথায় ও দাড়িতে এমন ভাবে হাত বোলানো, যাতে চুল ছিঁড়ে যায় বা পড়ে যায়।
(৪) গোসলে বা কাপড় কাঁচায় সুগন্ধি সাবান ব্যবহার করা।
(৫) কোন প্রকার সুগন্ধি তৈল, আতর, ক্রীম ইত্যাদি ব্যাবহার করা।
(৬) গুমন্ত বা জাগ্রত অবস্থায় ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছায় মাথা ও চেহারা ঢাকা।
(৭) এমন জুতা পরিধান করা যাতে পায়ের মধ্যবর্তী উঁচু হাড় ঢাকা পড়ে যায়। এজন্য দুই ফিতা বিশিষ্ট স্যান্ডেল পরিধান করা।

অবশেষে দুয়া করি আল্লাহ পাক যাদের হজ্জে যাওয়ার তৌফিক দিয়েছেন তাদের সবাইকে হজ্জে মাব্রুর দান করুন।
এবং আমরা যারা যেতে পারিনাই আমাদেরকে যেন এই হারামাইন সারিফাইন যিয়ারতের তৌফিক দেন। আমিন

Comments

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|