★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
কুরবানীর ১২টি মাদানী ফুল ১২টি মাসায়েলঃ - Mas'la Masayel Discussions on

কুরবানীর ১২টি মাদানী ফুল ১২টি মাসায়েলঃ

edited July 2019 in Mas'la Masayel

কুরবানীর ১২টি মাদানী ফুল
(১) কিছু লোক সম্পূর্ণ পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানী
দিয়ে থাকে। অথচ অনেক সময় নিছাব পরিমাণ সম্পদের মালিক
হওয়ার কারণে পরিবারের একাধিক সদস্যের উপর কুরবানী
দেওয়া ওয়াজিব হয়েছে। এদের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক কুরবানী
দিতে হবে। একটি ছাগল যা সবার পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া
হয়েছে, কারো পক্ষ থেকে ওয়াজিব আদায় হয়নি, কেননা ছাগল
এক অংশের চেয়ে বেশি অংশ হতে পারেনা। কোন এক নির্ধারিত
ব্যক্তির পক্ষ থেকে ছাগল কুরবানী হতে পারে।
(২) গরু, মহিষ এবং উট দ্বারা সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী হতে
পারে। (ফতোওয়ায়ে আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ৩০৪ পৃষ্ঠা)
(৩) নাবালেগ সন্তানের উপর যদিও কুরবানী ওয়াজিব নয়, তবুও তার
পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া উত্তম (এবং এক্ষেত্রে তাদের অনুমতি
নেওয়ারও প্রয়োজন নেই)। প্রাপ্ত বয়স্ক সন্তান বা স্ত্রীর পক্ষ থেকে
কুরবানী দিতে চাইলে তাদের অনুমতি নিতে হবে। 
যদি তাদের অনুমতি ব্যতীত তাদের জন্য কুরবানী দেওয়া হয়
তাহলে তাদের পক্ষ থেকে ওয়াজিব আদায় হবেনা। (ফতোওয়ায়ে
আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ২৯৩ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৪২৮ পৃষ্ঠা) অনুমতি দু’ধরনের
হয়ে থাকে; (১) প্রকাশ্য ভাবে। যেমন- তাঁদের মধ্য থেকে কেউ
যদি সুস্পষ্ট ভাবে বলে দেয় যে, “আমার পক্ষ থেকে কুরবানী
দিয়ে দাও।” (২) প্রমাণ সহকারে (টঘউঊজ ঝঞঙঙউ)
(যেমন- অনুমতি বুঝা যায় এমন আচরণের মাধ্যমে) যেমন- সে
নিজের স্ত্রী কিংবা সন্তানদের পক্ষ থেকে কুরবানী আদায় করছে
আর তারাও (স্ত্রী, সন্তানরা) এ ব্যাপারে অবগত আছে এবং
সন্তুষ্টও রয়েছে। (ফতোওয়ায়ে আহলে সুন্নাত, অপ্রকাশিত)
(৪) কুরবানীর সময় কুরবানী করাটাই আবশ্যক। অন্য কোন বস্তু
কুরবানীর স্থলাভিষিক্ত হতে পারে না। যেমন পশু কুরবানী করার
পরিবর্তে পশুটি ছদকা করে দেওয়া বা এটির মূল্য দান করে
দেওয়া যথেষ্ট নয়।
(ফতোওয়ায়ে আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ২৯৩ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৩৫ পৃষ্ঠা)
(৫) কুরবানীর পশুর বয়স:- উট ৫ বৎসর, গরু ২ বৎসর, ছাগল,
দুম্বা-দুম্বী, ভেড়া-ভেড়ী ১ বছর। এর চেয়ে কম বয়সী হলে
কুরবানী জায়েয হবেনা। বেশি হলে জায়েয বরং উত্তম। তবে দুম্বা
কিংবা ভেড়ার ৬ মাস বয়সী বাচ্চা যদি দূর থেকে দেখতে এক
বছর বয়স্ক দুম্বা, কিংবা ভেড়ার মত বড় মনে হয় তবে তা দ্বারা
কুরবানী জায়েয। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৩৩ পৃষ্ঠা) স্মরণ রাখবেন!
সাধারণত ৬ মাস বয়সের দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা বৈধ নয়। এটি
এই পরিমাণ মোটা ও বড় হওয়া জরুরী যে, দূর থেকে দেখতে
১বছর বয়স হয়েছে বলে মনে হতে হবে। দূর থেকে দেখতে ৬মাস বয়সী নয় বরং ১ বছর থেকে একদিন
কম এমন দুম্বা বা ভেড়ার বাচ্চাও দূর থেকে দেখতে যদি পূর্ণ ১
বছর বয়সী মনে না হয় তবে ঐ পশু দ্বারা কুরবানী হবেনা।
(৬) কুরবানীর পশু ত্রুটি মুক্ত হওয়া আবশ্যক। যদি সামান্য ত্রুটি
থাকে যেমন; কান ছিঁড়া বা কানে ছিদ্র থাকা। ঐ পশু দিয়ে
কুরবানী করলে তা মাকরূহ হবে। আর বেশি ত্রুটি থাকলে
কুরবানী হবেনা। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৪০ পৃষ্ঠা)
ত্রুটিপূর্ণ পশুর বিবরণ, যা দ্বারা কুরবানী হয় না
(৭) এমন পাগল পশু যা বিচরণ করে না। এতই দূর্বল যে হাড়ের
ভিতর মগজ নেই (এটির চিহ্ন হল, সেটি রুগ্ন হওয়ার কারণে
দাঁড়াতে পারছেনা), অন্ধ বা এমন কানা যার অন্ধত্ব প্রকাশ্যে দেখা
যাচ্ছে, বা এমন অসুস্থ যার অসুস্থতা প্রকাশ্যে বুঝা যাচ্ছে (অর্থাৎ-
যেটা অসুস্থতার কারণে ঘাস খায় না অথবা এমন খোঁড়া বা
ল্যাংড়া যে কুরবানীর স্থানে পায়ে হেঁটে যেতে পারেনা) যেটার
জন্ম থেকে কান না থাকে বা একটি কান না থাকলে, জঙ্গলের পশু
যেমন- নীল গাভী, জঙ্গলের ছাগল বা হিজড়া পশু (অর্থাৎ-
যেটাতে নারী ও পুরুষ উভয়ের নিদর্শন বিদ্যমান থাকলে) বা
জাল্লালা যেটি শুধু ময়লা-আবর্জনা খেয়ে থাকে বা যেটির এক পা
কর্তিত, কান ও লেজ এক তৃতীয়াংশের চেয়ে বেশি কাটা, নাক
কাটা হলে, দাঁত না থাকলে, (অর্থাৎ- দাঁত পড়ে গেলে, স্তন কাটা
হলে বা স্তন শুকনো হওয়া এ সকল পশু দ্বারা কুরবানী নাজায়েয।
ছাগলের এক স্তন শুকনো হওয়া, আর গরু মহিষের দুই স্তন
শুকনো হওয়াটা কুরবানী নাজায়েয হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
(দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৩৫-৫৩৭ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৪০-৩৪১ পৃষ্ঠা)
(৮) পশুর জন্ম থেকে শিং না থাকলে ঐ পশু দিয়ে কুরবানী জায়েয
হবে। আর যদি শিং ছিল কিন্তু ভেঙ্গে গেছে। যদি গোড়া সহ
ভেঙ্গে যায় তবে কুরবানী হবেনা আর যদি উপরে সামান্য ভেঙ্গে
যায় গোড়া অক্ষত থাকে তবে কুরবানী হয়ে যাবে।
(ফতোওয়ায়ে আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ২৯৭ পৃষ্ঠা)
(৯) কুরবানী করার সময় পশু লাফালাফি বা হেচকা-হেচকি করার
কারণে দোষত্রুটি সৃষ্টি হয়ে গেল, এ দোষ ক্ষতিকারক নয় অর্থাৎ
কুরবানী হয়ে যাবে এবং লাফালাফি, হেচকা-হেচকির দ্বারা
দোষত্রুটি সৃষ্টি হয়ে গেল এবং ছুটে পালিয়ে গেল আর শীঘ্রই ধরে
আনা হল এবং জবেহ করা হল তখন ও কুরবানী হয়ে যাবে।
(বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৪২ পৃষ্ঠা, দুররে মুখতার রদ্দে মুহতার, ৯ম খন্ড, ৫৩৯ পৃষ্ঠা)
(১০) উত্তম হচ্ছে, পশু যবেহ করার নিয়ম জানা থাকলে নিজের
কুরবানী নিজের হাতে করা। যদি ভালভাবে যবেহ করার নিয়ম
জানা না থাকে তবে অন্য ব্যক্তিকে কুরবানীর পশু যবেহ করার
জন্য নির্দেশ দিবে। তবে সেক্ষেত্রে কুরবানী দেওয়ার সময় নিজে
উপস্থিত থাকাটা উত্তম। (ফতোওয়ায়ে আলমগীরী, ৫ম খন্ড, ৩০০ পৃষ্ঠা)
(১১) পশু কুরবানী দেওয়ার পর এটির পেট থেকে জীবিত বাচ্চা বের
হলে তাও যবেহ করে দিবে এবং এটির (অর্থাৎ- বাচ্চার মাংস)
খাওয়া যাবে। আর মৃত বাচ্চা হলে মৃত জন্তু হিসেবে ফেলে
দিবে। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় খন্ড, ৩৪৮ পৃষ্ঠা) (মৃত বাচ্চা হলেও কুরবানী হয়ে
যাবে এবং ঐ পশুর মাংস খাওয়াতে কোন প্রকারের অসুবিধা
নেই।)
(১২) অন্যকে দিয়ে কুরবানীর পশু যবেহ করানোর সময় নিজেও ছুরির
উপর হাত রেখে উভয়ে মিলে যবেহ করলে উভয়ের উপর
বিসমিল্লাহ্‌ বলা ওয়াজিব। 
একজনও যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে আল্লাহ্ তাআলার নাম ছেড়ে দেয় বা
অন্যজন আল্লাহ্ তাআলার নাম নিচ্ছে আমার নেওয়ার প্রয়োজন
নেই এই ধারণা করে আল্লাহ্ তাআলার নাম বাদ দেয়, তাহলে
উভয় অবস্থায় পশু হালাল হবেনা। (দুররে মুখতার, ৯ম খন্ড, ৫৫১ পৃষ্ঠা) 

Comments

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|