তথাকথিত নব্য সালাফীদের কিতাবেই তারাবীহ ২০ রাকাত!....
==================
(লেখাটি আমার মৌলিক লেখা নয়, সম্পাদিত!, কপি করে শেয়ার করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিন। জাযাকাল্লাহ!)
★দুনিয়াব্যাপী তারাবীহর নামাজ ২০ রাকাত পড়া হয়েছে সেটা নব্য সালাফীরাই স্বীকার করেছে★
আজকে আপনাদের জন্য সেইরকম এক চমক নিয়ে উপস্থিত হলাম। তারাবীর রাকায়াত সংখ্যার মীমাংসা নব্য সালাফীরাই দিয়ে দিয়েছে। তাদের লিখনীতে স্পষ্টই ফুটে উঠেছে খুলাফায়ে রাশেদীন রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম, সাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু্ম, তাবেয়িন রহমতুল্লাহি আলাইহিম, চার মাযহাবের ইমামগন, অন্যান্য ইমাম মুস্তাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম সহ মক্কা শরীফ, মদীনা শরীফের সকল স্থানের সবার আমল ছিলো ২০ রাকায়াত তারাবীহ।
কথা হচ্ছে এরপরও যদি তারা তারাবীহর রাকায়াত নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায় তাদের মুনাফিক ছাড়া আর কিছূই বলার নেই।
ছবিতে যে বইয়ের প্রচ্ছদ দেখতে পাচ্ছেন সেটা সালাফীদের অন্যতম প্রকাশনী “পিস পাবলিকেশন” থেকে প্রকাশিত। বইটার নাম হচ্ছে “কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্র্যাকটিক্যাল নামায”। বইটা লিখেছে মুহম্মদ ইবনে ইব্রাহিম আততুয়াইজিরী। আর বাংলায় সম্পাদনা করেছে আব্দুর রাজ্জাক সালাফী। বইটার ডাউনলোড লিংক (
http://bit.ly/1PtEDnC )
এবার আসুন এ বইয়ের “তারাবীহর” অধ্যায়ে , ২২১ পৃষ্ঠায় একটা পরিত্যাজ্য রেওয়ায়েত দ্বারা যদিও প্রথমে ৮ রাকাত তারাবীহর কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেখানেই শেষ। এরপর চুড়ান্ত ফয়সালা পেশ করেছে ২০ রাকায়াত প্রসঙ্গে। ২২১ পৃষ্ঠার হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর খিলাফতকালে ২০ রাকাত তারাবী ছিলো। যা উক্ত পৃষ্ঠার স্ক্যান পেজে লাল দাগ দিয়ে আন্ডারলাইন করা হয়েছে। হযরত ইবনুল বার রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সায়িব রদ্বিয়াল্লাহু আনহু, হযরত ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি, শওকানী সহ অনেকের রেফারেন্স দ্বারা হযরত ওমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সময় ২০ রাকাত তারাবীহর প্রমান পেশ করা হয়েছে।
২২২ পৃষ্ঠায় সালাফীদের ইমাম শাওকানীর উদৃতি দিয়ে মুয়াত্তা মালেক এর সূত্রে ২০ রাকায়াত বর্ণনা করা হয়েছে। মুছানান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক এর সূত্রে ২১ রাকাত। এবং ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহির সনদে ২০ রাকাতকে বর্ণনা করে এই মতকে গ্রহন করাই যুক্তিসংগত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
উক্ত পৃষ্ঠায় বায়হাকী শরীফের রেফারেন্স-এ ২০ রাকাত তারাবীহ ও ৩ রাকাত বিতির নামাজ উল্লেখ করা হয়েছে। আর ইমাম তিরমীযি রহমতুল্লাহি আলাইহির রেফারেন্সে বর্ণনা করেছেন যে মদীনা শরীফের অধিকাংশ অধিবাসীদের আমল ছিলো ২০ রাকাত।
ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন তিনি মক্কা শরীফের অধিবাসীদের ২০ রাকাত নামাজ পড়তে দেখেছেন। এরপর ইমাম কুদমাহ, ইমাম কুরতুবী, ইমাম নববী, কুস্তালানী, মনযুর ইবনে ইউনুছ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনার ২০ রাকাত তারাবীর পক্ষে বলেছেন। শুধু তাই নয় শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহির হুজ্জাতুল্লাহিল বালেগা কিতাবের রেফারেন্সে ২০ রাকাত তারাবীর দলীলই পেশ করা হয়েছে।
এর পরের প্যারায় তাবেয়ীদের যুগের তারাবীর নামাজ কত রাকাত ছিলো সে প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে এই সালাফী লেখক স্পষ্টই উল্লেখ করেছেন, “অনেক সাহাবা এবং তাবেঈন ২০ রাকাত বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তারা ৮ রাকাত বর্ণনা করেন নাই।” পাঠক আপনারাই দেখুন সালাফীরা নিজেরাই বললো তাবেঈনদের যুগে ৮ রাকাতের কোন বর্ননা নেই।
উক্ত কিতাবের ২২৩ পৃষ্ঠায় হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ২০ রাকাত তারাবীহ আদায় করতেন সে কথা বলা হয়েছে। শুধু তাই নয় সালাফীদের অন্যতম গুরু ইবনে তাইমিয়াও ২০ রাকাত তারাবীহ পড়তেন এবং তিনি ২০ রাকাত তারাবীহ প্রমাণ করেছেন এমন কথা দ্ব্যার্থ কণ্ঠে উল্লেখ করা হয়েছে। এবং এই মতকে ইমাম যাহাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি সমর্থন করেন বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এরপর বেশকিছু তাবেয়ীদের নাম দেয়া হয়েছে যেমন- অমর ইবনে কায়েস, ইবনু তুরফুসানী, সাতির ইবনে সিকাল, সাওয়িদ ইবনে গাফফাল রহমতুল্লাহি আলাইহিমগন এবং হারিস আব্দুর রহমান ইবনে আবি বকরা, আবুল বখতারা, আতা, আলী ইবনে বুশায়াহ প্রমুখ তাবেঈর রহমতুল্লাহি আলাইহিম গনও ২০ রাকাত তারাবীহর নামাজ পড়তেন।
রবর্তীতে ৪ মাযহাবের মতামত দিতে গিয়ে উক্ত কিতাবে ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ইমাম অহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি ২০ রাকাত তারাবীর সপক্ষে ছিলেন। ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহিও ২০ রাকাতের বর্ণনা করেছেন। যা আন্ডার লাইন করা আছে। এবং ইমাম সুফিয়ান সাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও এই ২০ রাকাত সমর্থন করতেন। যা তারা রেফারেন্স সহ উল্লেখ করেছে।
এবার সালাফীদের কাছে প্রশ্ন ! তোমরা বলো ২০ রাকাতের কোন দলীল নেই। যা আমরা বলি সব নাকি জাল। তবে তোমাদের শায়েখরা “পিস পবলিকেশন” থেকে যে বই প্রকাশ করে ২০ রাকাতের দলীল দিলো সেটা সম্পর্কে তোমরা কি বলবা ?
মনে রাখতে হবে সত্য কখনো চাপা থাকে না। যা সত্য ইচ্ছায় অনিচ্ছায় মুখ দিয়ে বের হয়েই যায়। এতোগুলো মশহুর বর্ণনাকে এরা কীভাবে অস্বীকার করে ৮ রাকাতের পক্ষে মানুষকে ধোঁকা দেয়? আল্লাহ্ এদের উত্তম প্রতিদান দিন!
দেখুন নিচে স্ক্রিন শট ওই বই এর.....
২য় পাতা২২২নং
৩য় পাতা ২২৩ নং
Comments