ওহাবী ইজম কি❓
কারা সৃষ্টি করেছে❓
👉ব্রিটিশ গোয়েন্দা হ্যামফার’এর লেখা ডায়েরি থেকে জানা যায়, ইসলামকে ধ্বংস করার জন্য ব্রিটিশ ও ইহুদিচক্র অষ্টাদশ শতাব্দির প্রথমার্ধে একটি নীল-নকশা প্রণয়ন করে। এই নীল-নকশা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় গোয়েন্দা হ্যামফারকে।
👉হ্যামফার এমন একজন ইসলামী চিন্তাবিদকে খুঁজে বের করেন, যার মাধ্যমে এই নীল-নকশা বাস্তবায়ন সহজ হবে। সে হচ্ছেন নজদের অধিবাসী মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী।
🧞♂️মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর জন্ম মুসায়লামা কাজ্জাবের বংশে, ১১১১হিজরী সনে। “কাজ্জাব” মানে ডাহা বিথ্যাবাদী। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় মুসায়লামা ইসলাম গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে মুরতাদ হয়ে যায় এবং নিজেকে নবী বলে দাবি করে। এতে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসায়লামাকে “কাজ্জাব” বা ডাহা মিথ্যুক বলে ঘোষণা করেন।
🥀নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর হযরত আবু বকর (রাঃ) যখন খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন মুসায়লামা কাজ্জাব তার বাহিনী নিয়ে মক্কা-মদিনা দখলের জন্য অগ্রসর হয়।
👉এ অবস্থায় হযরত আবু বকর (রাঃ) খেলাফতের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম যে সামরিক অভিযান পরিচালনা করেন তা ছিল মুসায়লামা কাজ্জাবকে দমনের উদ্দেশ্যে প্রচন্ড যুদ্ধে মুসলিম বাহিনীর কাছে মুসায়লামা কাজ্জাবের পতন এবং মৃত্যু হয়।
👉পূর্ব পুরুষদের পরাজয়ের প্রতিশোধ-স্পৃহা আরবদের একটি সহজাত প্রবৃত্তি।
👉মুসলমান হওয়া সত্ত্বেও মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর মনে পূর্ব-পুরুষের পরাজয়ের প্রতিশোধ-স্পৃহা প্রচন্ডভাবে কার্যকর ছিলো বলে অনেকে মনে করেন।
👉ঈমানের অন্যতম শর্ত হচ্ছে তাওহীদ তথা আল্লাহর একত্ববাদ ও নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রিসালাত। কিন্তু মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীর প্রত্যেকটি কাজে-কর্মে আল্লাহর একত্ববাদ বা তাওহীদের উপর গুরুত্বারোপ করা হলেও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রিসালাতের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়নি।এমনকি সে রিসালাতের অনেক বিষয়ে কটূক্তিপূর্ণ ও নিন্দনীয় বক্তব্য রেখেছেন।
🧞♂️মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী প্রাথমিকভাবে মদীনায় মুহাম্মদ সুলায়মান আল-কুর্দী শাফেয়ী এবং মুহাম্মদ হায়াত সিন্ধির কাছে অধ্যয়ন করেন। শৈশবেই তার আচরণ ও কথাবার্তা এমন উগ্র ছিল যে, শিক্ষক পরস্পরকে বলতেন, “কোনো এক সময় এই ছেলেটি ধর্মহীন, ধর্মদ্রোহী ও বাতিল আক্বিদাপন্থী হবে।”
🧞♂️মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদী তার বাল্যকাল থেকে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুয়ত ও রিসালাতের ঘোর বিরোধী ছিলেন। ব্রিটিশ গোয়েন্দা হ্যামফার’এর সান্নিধ্যে আসার পর সে সুপরিকল্পিতভাবে ইসলাম সম্পর্কে তার মতবাদ প্রচারের জন্য কার্যক্রম শুরু করেন। হ্যামফার মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীকে বুঝাতে সক্ষম হয় যে, সকল আহলে কিতাবীগণই আল্লাহ যে এক ও অদ্বিতীয় তা বিশ্বাস করে। এক্ষেত্রে ধর্মে ধর্মে কোনো বিভেদ নেই। আর আল্লাহতো সকল সৃষ্টি জগতেরই প্রভু। বিশ্ববাসীকে একই ধর্মে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে নবুয়তই হচ্ছে একমাত্র বাধা। কাজেই নবুয়তকে বাদ দিয়ে মানুষকে আল্লাহর দ্বীনের পথে আহ্বান করলে ধর্ম নিয়ে মানুষে মানুষে কোন দ্বন্ধ ও বিভেদ থাকবে না। হ্যামফারের এই কুপ্ররোচনা মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাব নজদীকে দারুণভাবে প্রভাবিত করে এবং তিনি ইসলামের নামে একটি নতুন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন, যা ওহাবী ইজম নামে পরিচিত।
🧞♂️এক সময় ইহুদী-নাছারা ও মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব নজদীর চক্রান্ত এমন ব্যাপকতা লাভ করে যে, তার অনুসারীদের তৎপরতা ও চক্রান্তে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের পটভূমিতে লাভ করে যে, তার অনুসারীদের তৎপরতা ওচক্রান্তে দ্বিতীয় বিশ্বেযুদ্ধের পটভূমিতে তুর্কী খেলাফতের পতন হয়। খেলাফত বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ও সংহতির ভিত্তি রচনা করেছিলো তা ধ্বংস হয়ে যায়। খেলাফতের কেন্দ্র থেকে বিছিন্ন হয়ে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঞ্চলিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এর মাধ্যমে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর উপর ইহুদী-নাসারাদের কর্তৃত্ব ও হুকুমদারির পথ সুগম হয়। এভাবেই ওহাবীরা একদিকে যেমন নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রিসালাতের উপর আঘাত হানে, তেমনি খিলাফতি রাষ্ট্রের ভিত্তিও তছনছ করে দেয়। এই ওহাবীদের হাতেই জান্নাতুল বাকীর সকল সাহাবীর পবিত্র সমাধির স্মৃতি চিহ্নগুলো ধ্বংস করা হয়। এমনকি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ) এর কবর পর্যন্ত মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়। এরাই মদিনা মনোয়ারায় নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জিয়ারতের নিয়তে বের হওয়াকে মূর্তি পূজার শামিল বলে ফতোয়া জারি করে।
🧞♂️উপমহাদেশে মওদুদী দর্শন এবং ওহাবী দর্শন একই সূত্রে গাঁথা। জামাতে ইসলামী’র প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীও মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওহাবের মত সারা জীবন নবী-রাসূল এবং সাহাবায়ে কেরামের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য ও কুৎসা রটনা করে গেছেন।
মওদুদী বলেন, “নবীগণ মাসুম নন। পত্যেক নবীর দ্বারাই কিছু না কিছু গুনাহ সংঘটিত হয়েছেন।” (তাফহীমাত ২/৪৩)।
👉সে বলেন, “নবী হোক সাহাবা হোক কারো সম্মানার্থে তার দোষ বর্ণনা না করাকে জরুরি মনে করা আমার দৃষ্টিতে মূর্তিপূজারই শামিল” (তরজুমানুল কুরআন, সংখ্যা ৩৫, পৃষ্ঠা ৩২৭)।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে মওদুদীর ঘোষণা হচ্ছে, “মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানবিক দুর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিক দুর্বলতার বশবর্তী হয়ে গুনাহ করেছিলেন” (তরজুমানুল কুরআন, সংখ্যা ৮৫, পৃষ্ঠা ২৩০)।
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত অনুসরণ সম্পর্কে সে বলেন, “নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদব আখলাককে সুন্নত বলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে সাংঘাতিক ধরনের বিদ’আত ও ধর্ম বিকৃতির নামান্তর” (রাসায়েল মাসায়েল ১/২৪৮)
🤲 আল্লাহ্ পাক অবুঝদের সঠিক বুঝ দান করুন,আমীন।