এ মিলাদুন্নবী -এর অর্থ কি ?
: মিলাদ মানে “জন্ম” অর্থাৎ নবী করীম (ﷺ) এর জন্ম । প্রচলিত অর্থ হচ্ছে, যে মাহফিলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মকাহিনী এবং তদসম্বলিত অলৌকিক ঘটনাবলী, মাতৃগর্ভে থাকাকালীন আশ্চার্যজনক ঘটনাবলী, নূরে মুহাম্মাদীর বিবরণ, শৈশবকালে মু’জিযাতের যিকির, নসবনামার বয়ান, তাঁর গুনবলীর আলোচনা, যা মা হালিমার কোলে অবস্থানকালে যে সমস্ত মু’জিযা প্রকাশিত হয়েছিল। এবং তাঁর পরবর্তী জীবনের বিশেষ দিক আলোকপাত করা হয়, তাকে মিলাদুন্নবীর মাহফিল বলা হয়। সুতরাং প্রচলিত মিলাদ এবং অভিধানিক অর্থের মধ্যে একটি সুন্দর মিল রয়েছে।
ঈদ বলা হয় কেন মিলাদুন্নবীকে ?
: আরবী ঈদ শব্দের অর্থ খুশি প্রকাশ করা, আনন্দ উদযাপন কথা, উৎসব করা আরবী ভাষায় যে কোন খুশি বা আনন্দের উপলক্ষকেই ঈদ বলা হয়৷ যেমন- ১। রমজান মাস শেষ হলে শাওয়াল মাসের প্রথম দিন যে খুশি উদযাপন করা হয় তাকে বলে ঈদুল ফিতর ।
২। জিলহজ্ব মাসের দশ তারিখে যে কোরবানী বা ত্যাগের উৎসব হয় তাকে বলে
ঈদুল আযহ ৩। আর জন্মদিনের উৎসবকে আরবীতে বলা হয় ঈদুল মিলাদ ।
৪। বিবাহ বার্ষিকীকে আরবীতে বলে ঈদুল যাওয়াজ । ৫] আর শ্রমিক দিবসকে আরবীতে বলে ঈদুল উম্মাল ।
মন্তব্যঃ-উপরে উল্লেখিত দৃষ্টান্তগুলো দ্বারা বুঝা গেল, আরবী ভাষায় যে কোন খুশি
বা আনন্দের উপলক্ষকেই ঈদ বলা হয় । পবিত্র কুরআন এবং হাদিসেও খুশির উপলক্ষকে ঈদ বলার দৃষ্টান্ত রয়েছে।
যেমন: পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হচ্ছে
قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنْزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لأوَّلنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مُنكَ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرازقين
: অর্থাৎ- “ঈসা ইবনে মরিয়ম দোয়া করলেন, হে আল্লাহ! আমাদের প্রতি আকাশ হতে খাদ্য অবতীর্ণ করুন যেন সেটা আমাদের জন্য এবং আমাদের পরবর্তীদের জন্য ঈদ হয় এবং আপনার পক্ষ হতে এক নিদর্শন হয়৷ আর আপনি আমাদেরকে রিজিক প্রদান করুন৷ বস্তুত আপনিই সর্বোত্তম রিজিক প্রদানকারী।” (সূরা মায়েদা, আয়াত-১১৪ )
মন্তব্যঃ- উপরোক্ত আয়াতে আকাশ থেকে খাদ্য অবতীর্ণ হওয়ার ঘটনাকে আনন্দের
বিষয় বা ঈদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
ইদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহার ছাড়া কি আর ঈদ নাই ?
: নবী করীম (দঃ) এর হাদীসে একাধিক দিন ও সময়কে ঈদ হিসেবে
অক্ষায়িত করেছেন। সেগুলি হল==>
[A] ইদুল ফিতর ও ঈদুল আযাহার । => ২টি
[B] জুম্মার দিনকে মোমিনদের কাছে ঈদের দিন বলা হয়েছে । => বছরে ৫২ টি জুম্মা
[C] রোযাদার যখন ইফতার সামনে নিয়ে বসে ওটা ঈদ বলা হয়েছে | ==> ৩০ টি
রোযা।
[D] আরাফারদিন => ১ দিন
[E] জিলহজ্ব মাসের ১১,১২,১৩ তারিখ ৩ দিন
[ মন্তব্যঃ- তাহলে সব মিলিয়ে ৮৮ টি ঈদ, এছাড়াও আরো অনেক আছে। তবে যারা বলে দুই ঈদ ছড়া আর কোনো নেই ঈদ কারন তাঁরা এই দুই ঈদে ফিতরা, যাকাত, চামড়া টাকা পায় তাই ঐ আলিম নামের জালিম পেটুকরা দুটি ঈদেকে মনে রেখেছে
বাতিল ওহাবীপন্থি সব | |
:→ আল্লাহ্ সর্বপ্রথম ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করেন :
: পবিত্র মিলাদুন্নবীর ইতিহাস অতি প্রাচীন | মিলাদুন্নবীর সূচনা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন | রোজে আজলে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামকে নিয়ে আল্লাহ্ এই মিলাদের আয়োজন করেছিলে । নবীগণের মহাসম্মেলন ডেকে মিলাদুন্নবী মাহফিলের আয়োজক স্বয়ং আল্লাহ্ । তিনি নিজে ছিলেন মীর মজলিশ ও সভাপতি | সকল নবীগণ ছিলেন শ্রোতা । ঐ মজলিশে একলক্ষ চব্বিশ হাজার বা মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার পয়গাম্বর (আঃ) উপস্থিত ছিলেন | ঐ মজলিশের উদ্দেশ্য ছিল হযরত মোহাম্মাদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের বেলাদাত, শান, মান ও অন্যান্য নবীগণের সামনে তুলে ধরা এবং তাঁদের থেকে তাঁর উপর ইমান আনয়ন ও সাহায্য সমর্থনের প্রতিশ্রুতি আদায় করা। কোরান মাজিদের সূরা আলে ইমারন, আয়াতঃ- ৮১-৮২ নাম্বারের মধ্যে আল্লাহ্ তায়ালা ঐ মিলাদুন্নবী মাহফিলের কথা উল্লেখ করেছেন । নবীজীর সম্মানে এটাই ছিলো প্রথম মিলাদ মাহফিল এবং মাহফিলের উদ্যোক্তা ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্ তায়ালা | সুতরাং মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠান হচ্ছে আল্লাহ্র সুন্নাত বা তরিকা । ঐ মজলিশে সমস্ত আম্বিয়ায়ে কেরামও উপস্থিত ছিলেন । ঐ মজলিশে স্বয়ং আল্লাহ্ নবীজীর শুভ আবির্ভাব বা মিলাদের উপরই গুরুত্ব আরোপ
করেছিলেন | সেদিন সীরাতুন্নবীর উপর কোন আলোচনা হয়নি | সমস্ত নবীগন খোদার দরবারে দাঁড়িয়ে থেকে মিলাদ শুনেছিলেন এবং কিয়াম করেছিলে | কেননা, খোদার দরবারে বসার কোন অবকাশ নেই | পরিবেশটি ছিলো আদবের | মিলাদ পাঠকারী ছিলেন স্বয়ং আল্লাহ্ এবং কেয়ামকারীগণ ছিলেন আম্বিয়ায়ে কেরাম | সুতরাং মিলাদুন্নবী মাহফিল কেয়ামসহ নবীগণের সম্মিলিত সুন্নাত ও ইজমায়ে আম্বিয়া দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। কোরআন মাজিদের আলে ইমরানের আয়াত ৮১-৮২ আল্লাহ্ বললেনঃ>
جانكم ثم وحكمة كتاب من اتيتكم لما النبين ميثاق الله اخذ واذ اأقررتم قال ولتنصرنه به لتؤمنن معكم لما مصدق رسول معكم وانا فاشهدوا قال اقررنا قالوا اصرى ذلكم على واخذتم الفاسقون هم فاولئك ذلك بعد تولى فمن الشاهدين من
: অর্থ ” হে প্রিয় রাসূল! আপনি স্মরণ করুন ঐ দিনের কথা, যখন আল্লাহ্ তায়ালা সমস্ত নবীগণ থেকে প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন এ কথার উপর যে, যখন আমি তোমাদের কিতাব ও হিকমত দিয়ে দুনিয়ায় প্রেরণ করবো; তারপর তোমাদের কাছে আমার মহান রাসূল যাবেন এবং তোমাদের নবুয়ত ও কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করবেন, তখন তোমরা অবশ্যই তাঁর উপর ইমান আনবে এবং অবশ্যই তাঁকে সাহায্য
করবে”। আল্লাহ্ বললেনঃ “তোমরা কি এ সব কথার উপর অঙ্গীকার করছো এবং এই শর্তে আমার ওয়াদা গ্রহণ করে নিয়েছ ? তখন তাঁরা সকলেই সমস্বরে বলেছিলেন, – আমরা অঙ্গীকার করছি” | আল্লাহ্ বললেনঃ “তাহলে তোমরা পরস্পর সাক্ষী থাক আর আমিও তোমাদের সাথে মহাসাক্ষী রইলাম” (আয়াতঃ-৮১)
→ নবীগন (আঃ) ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) পালন করেছেন | এবার বিস্তারিত জানা যাক |
[] পৃথিবীতে সর্বপ্রথম আদম আলাইহিস সালাম ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করেছেন
:প্রত্যেক নবী নিজ নিজ যুগে আমাদের প্রিয়নবী ও আল্লাহ্র হাবীবের আবির্ভাবের
সুসংবাদ দিয়ে গেছেন | আদম (আঃ) তাঁর প্রিয় পুত্র ও প্রিতিনিধি শীস (আঃ) বলেন
أقبل ادم على اليه مثبت فقال أن بنى انت على مِنْ بَعْدِي فَخُذْهَا بِعِمَارَةِ التَّقوى والعروة الوثقى فكلما ذكرت الله فَاذْكُرْ إِلَى جَنْبِهِ إِسْم محمد فاتى رانت إِسْمَةٌ مَكْتُوا عَلَى شاي العربي والانين الروح والفلين ثم إنى كنت السمواتِ قلم ارى في السراب مُوْضِعًا الأرانت اسم محمد محتوا عليم وَإِنَّ رَبِّي أَسْكَنَنِي الجَنَّة فلم أرى فى الجنَّةِ فَصْرًا وَلَا عُرفة الأوجَدْتُ إِسْمَ مُحَمَّد مكتوباً عَلَيْهِ وَلَقَدْ رَأَيْتُ إِسم محمد مكتوبا على نحورِ الْحُورِ الْعِينِ وَعَلَى وَرَقِ قَصَبِ لِجَامِ الْجَنَّةِ ووَعَلَى وَرَقِ شَجَرَةٍ طوبى وَعَلى وَرَقِ سِدرة المنتهى وَعَلَى اطراب العصب ولن أعين الملايحة تأثير الحرة فان الملايكة من قبل تذكرة عن كل ساعاتها الرقابي على المواهب)
: অর্থঃ=> “আদম (আঃ) আপন পুত্র হযরত শীস (আঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ- হে প্ৰিয় বৎস! আমার পরে তুমি আমার খলিফা। সুতরাং এই খেলাফতে তাকওয়ার তাজ ও দৃঢ় একদিনের দ্বারা মজবুত করে ধরে রেখো । আর যখনই আল্লাহ্ র নাম জিকির করবে, তাঁর সাথেই মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নামও উল্লেখ করবে । তাঁর কারণ এইঃ আমিরূহ ও মাটির মধ্যবর্তি থাকা অবস্থায়ই তাঁর পবিত্র নাম আরশের পায়ায় আল্লাহ্র নামের সাথে লিখিত দেখেছি । এরপর আমি সমস্ত আকাশ ভ্রমণ করেছি | আকশের এমন কোন স্থান ছিলনা যেখানে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নাম অঙ্কিত পাইনি। আমার বর আমাকে বেহেস্তে বসবাস করতে দিলেন | বেহেস্তের এমন কোন প্রাসাদ ও কামরা পাইনি যেখানে মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নাম লেখা ছিলনা । আমি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের এর নাম আরও লিখিত দেখেছি বেহেস্তের সমস্ত বৃক্ষের পাতায়, বিশেষ করে তুবা বৃক্ষের পাতায় পাতায় ও সিদরাতুল মোন্তাহার বৃক্ষের পাতায় পাতায়, পর্দায় কিনারায় এবং ফেরেস্তারে চোখে মনিতে ঐ নাম অঙ্কিত দেখেছি । সুতরাং হে শীস! তুমি এই নাম বেশি বেশি করে জপতে থাক। কেননা,
ফেরেস্তাগণ পূর্ব হতেই এই নাম জপনে মশগুল রয়েছেন” । ( জুরকানী শরীফ ও ঘাসায়েসুল কুবরা-১খণ্ড, পৃষ্ঠা-১৭) [ উল্লেখ যে, সর্বপ্রথম দুনিয়াতে ইহাই ছিল
জিকরে মিলাদুন্নবী
হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের মিলাদ পাঠ ও কেয়াম |
: হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এবং হযরত ইসমাইল (আঃ) যখন আল্লাহ্ ঘর তৈরি করেছিলেন, তখন হযরত ইব্রাহীম (আঃ) উক্তা ঘরের নির্মান কাজ করার জন্য এবং নিজের ভবিষ্যৎ সন্তানাদিদের মুসলিম হয়ে থাকার জন্য আল্লাহ্র দরবারে ফরিয়াদ
করার পর দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বা কেয়াম করে নবী করিম দঃ এর আবির্ভাব আরবে ও হযরত ইসমাইলের বংশে হওয়ার জন্য এভাবে দোয়া করেছিলেন |
মহান রব্বুল আলামিন আল্লাহ্ তায়াল বলেনঃ=>
: “হে আমাদের রব! তুমি এই আরব ভূমিতে আমার ইসমাইলের বংশের মধ্যে তাঁদের মধ্যে হতেই সেই মহান রাসূলকে প্রেরণ করো – যিনি তোমার আয়াতসমূহ তাদের কাছে পাঠ করে শুনাবেন, তাদেরকে কোরআন সুন্নাহর বিশুদ্ধ জ্ঞান শিক্ষা দেবেন এবং বাহ্যিক ও আত্মিক অপবিত্রতা থেকে তাদেরকে কোরআন পবিত্র করবেন”
(হে আল্লাহ্ তুমি আমাদের এই দোয়া কবুল করো); কারন তুমিই মহাপরাক্রমশালী ও
পরম কুশলী। (সূরাঃ- আল বাকারা, আয়াতঃ- ১২৯ ) এখানেও দেখা যায়- হযরত ইব্রাহীম (আঃ) রাসূলুল্লাহর আবির্ভাবের চার হাজার বৎসর
পূর্বেই মুনাজাত আকারে তাঁর আবির্ভাব, তাঁর সারা জিন্দেগীর কর্ম চাঞ্চল্য ও মানুষের
আত্মার পরিশুদ্ধির ক্ষমতা বর্ণনা করে হুজুর (দঃ) -এর মিলাদুন্নবী সারাংশ পাঠ করেছেন এবং এই মুনাজাত বা মিলাদ দাঁড়ানো অবস্থায়ই করেছেন – যা পূর্বেই দুটি
আয়াতের মর্মে বুঝা যায় | ইবনে কাছির তাঁর আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ড ২৬১ পৃষ্ঠায় লিখেছেন উক্ত দোয়ার করার সময় ইব্রাহীম (আঃ) দাঁড়ানো অবস্থায় ছিলেন । নবী করিম ( দঃ) বলেন “আমি হযরত ইব্রাহীম (আঃ) -এর দোয়ার ফসল” । হযরত ইব্রাহীম (আঃ) আল্লাহর নিকট থেকে চেয়ে
আমাদের প্রিয় নবী ( দঃ) কে
আরবে ইসমাইল (আঃ) -এর বংশ নিয়ে এসেছেন। এটা উপলব্ধির বিষয় | আশেকে ছাড়া এ মর্ম অন্য কেউ বুঝবেনা | বর্তমানে মিলাদ শরীফে রাসূলে পাকের আবির্ভাবের যে বর্ণনা দেয়া হয়- তা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) -এর দোয়ার তুলনায় সামান্যতম অংশ মাত্র । সুতরাং আমাদের মিলাদ শরীফ পাঠ ও কেয়াম হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামেরই সুন্নাত। [ইবনে কাছির তাঁর আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ড ২৬ ]
হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের মিলাদ কেয়ামঃ-
নবী করিম (সাঃ) -এর ৫৭০ বৎসর পূর্বে হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের আবির্ভাব মিলাদ শরীফ পাঠ করেছেন। উম্মতের কাছে তিনি আখেরী জামানার পয়গম্বর (সঃ)
তিনি তাঁর উম্মত হাওয়ারী জন্য (নবী ইস্রাইল) কে নিয়ে নবী করিম দঃ -এর
এর নাম ও সানা সিফাত এবং তাঁর আগমন বার্তা এভাবে বর্ণনা করেছেন ।
: মহান রব্বুল আলামিন আল্লাহ্ তায়াল বলেনঃ =>
وَإِذْ قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يُبَنِي إِسْرَائِيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُمْ مصدقا لما بينَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُول يَأْتِي مِنْ بَعْدِي
اسمه احمد
: “হে আমার প্রিয় রাসূল! আপনি স্মরণ করে দেখুন ঐ সময়ের কথা- যখন মারিয়ম তনয় ঈসা (আঃ) বলেছিলেনঃ হে বনী ইসরাইলঃ আমি তোমাদের কাছে নবী হয়ে প্রেরিত হয়েছি। আমি আমার পূর্ববর্তী তাওরাত কিতাবের সত্যতার সাক্ষ্য দিচ্ছি এবং এমন এক মহান রাসূলের সুসংবাদ দিচ্ছি- যিনি আমার পরেই আগমন করবেন এর তাঁর নাম হবে আহমদ (দঃ) (মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম ।
{সূরাঃ- আস সাফ, আয়াতঃ- ৬ } /
হযরত ঈসা (আঃ) -এর ভাষণ সাধারনতঃ দাঁড়ানো বা কেয়াম অবস্থায় হতো যা ইহুদি
খ্রীষ্টানরাও জানে । এটাই ভাষণের সাধারণ রীতিও বটে। ইবনে কাছির তাঁর আল- বিদায় ওয়ান নিহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ড ২৬১ পৃষ্ঠায় লিখেছেনঃ ” ঈসা (আঃ) দাঁড়ানো বা কেয়াম অবস্থায় তাঁর উম্মত হাওয়ারীদেরকে নবীজীর আগমনের সুসংবাদ দিয়ে বক্তৃতা
করেছিলেন” | সুতরাং মিলাদ ও কিয়াম হযরত ঈসা (আঃ) -এর সুন্নাত এবং তা নবীযুগের ৫৭০ বৎসর পূর্ব হতেই । [ইবনে কাছির তাঁর ভাল-বিদায় ওয়ান নিহায়া)
→ সাহাবায়ে কেরাম ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উদযাপন করেছেন |
[১] হযরত আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসঃ-
أبي الدرداء رضى اللهُ عَنْهُ قَالَ مَرَرْتُ مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى بَيْتِ عَامِرِ الْأَنصَارَى يُعْلَمُ وَقَائِعَ وَلَادَتِهِ لأَبْنَاء، وَعَشِيْرَتِهِ وَيَقُولُ هَذَالْيَوْمُ . فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّ اللهَ فَتَحَ عَلَيْكَ أَبْوَابَ الرَّحْمَةِ وَمَلَائِكَتَهُ يَسْتَغْفِرُونَ لكُمْ (الدر المنظم)
: হযরত আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ- আমি নবী করিম (দঃ ) – এর সাথে মদিনার আবু আনসারীর গৃহে গমন করে দেখি- তিনি তাঁর সন্তানাদি এবং আত্মীয় স্বজনকে নবী করিম (দঃ) -এর জন্ম বৃত্তান্ত শিক্ষা দিচ্ছেন এবং বলেছেন- আজই সেই দিন | তখন তাদেরকে দেখে নবী করিম দঃ – এরশাদ করলেনঃ নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তায়ালা তোমার উপর রহমতের দরজা খুলে দিয়েছেন এবং আল্লাহ্র ফেরেস্তাগণও তোমাদের সকলের জন্য মাগফিরাত কামনা করছেন। ( কিতাবঃ- দোররে মুনাজ্জাম, আব্দুল হক এলাহাবাদী ) [২] হযরত ইবনে আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত হাদীসঃ-
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا كَانَ يُحَدِّثُ ذَاتَ يَوْمٍ فِي بَيْتِهِ وَقَائِعَ ولادتِه بِقَوْمٍ فَيَبْشِرُونَ وَيَحْمَدُونَ إِذْجَاءَ النَّبِيُّ صَلَحَ الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَقَالَ حَلَّتْ لَكُمْ شَفَاعَتِي التَّنْوِتِرُ فِي مَوْلِدٍ البشير النذير لابن دحية)
: একদিন হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) কিছু লোক নিয়ে নিজগৃহে রাসূল করিম (দঃ) -এর জন্ম বৃত্তান্ত আলোচনা করে আনন্দ উৎসব করছিলেন এবং প্রশংশাবলী আলোচনাসহ দরূদ ও সালাম পেশ করেছিলেন। এমন সময় নবী করিম দঃ সেখানে উপস্থিত হয়ে এ অবস্থা দেখে বললেনঃ- তোমাদের সকলের জন্যে আমার শাফায়াত অবধারিত হয়ে গেল” । { কিতাবঃ- ইবনে দাহইয়ার আত-তানভীর,
৬০৪ হিজরী; সুতরাং প্রমাণিত হলো যে, নবী পাকের মিলাদ শরীফ পাঠে রাসূলে পাকের শাফায়াত নসীব হবে ।
[৩] হযরত হাসসান বিন সাবিত (রাঃ) মিম্বারে দাঁড়িয়ে কবিতা বা নাত শরীফের মাধ্যমে মিলাদুন্নবী করেন। নাত শরীফ পড়া জায়েজ ১০০% ।
হযরত হাসসান বিন সাবিত (রাঃ) মিম্বারে দাঁড়িয়ে কবিতার মাধ্যমে মিলাদুন্নবীপাঠ করেছিলেন |
দীর্ঘ কবিতার একাংশ অর্থ দেওয়া হলো
: “ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি সর্ব দোষত্রুটি হতে মুক্ত হয়েই জন্ম গ্রহন
করেছেন| আপনারা এই বর্তমান সুরত মনে হয় আপনার ইচ্ছা আনুযায়ীই সৃষ্টি হয়েছে
| আল্লাহ্ তাঁর প্রিয় নবীর নাম আযানে নিজের নামের সাথে যুক্ত করেছেন। এর
প্রমাণঃ- যখন মুয়াজ্জিন পাঞ্জেগানা নামাজের জন্য “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর
রাসূলুল্লাহ” বলে আজান দেয় | আল্লাহ্ তায়ালা আপন নামের আংশ দিয়ে নবীজীর
নাম রেখেছেন- তাঁকে অধিক মর্যাদাশীল করার লক্ষ্যে । এর প্রমান হচ্ছে- আরশের অধিপতির নাম হলো “মাহমুদ” এবং ইনির নাম হলো “মুহাম্মাদ” দঃ । { সুত্রঃ- দিওয়ানে হাসসান }
[] উক্তা মিলাদী কাসিদায় হযরত হাসসান বিন সাবিত (রাঃ)-এর কয়েকটি আকিদা
প্রমানিত হয়েছে। যথা
IA] নবী করিম (দঃ)-এর উপস্থিতিতে এই প্রশংসাসূচক কাসিদা পাঠ |
[B] মিম্বারে দাঁড়ানো (কিয়াম) অবস্থায় হুজুরের জন্ম বৃত্তান্ত ও গুণাবলী বর্ণনা করা |
[C] হুজুর পাক (দঃ) এর বর্তমান সুরত নবীজীর ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টি । [D] আজানের মোট গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাতে আল্লাহ্র নামের পাশে নবীজীর নাম আল্লাহ্
কতৃক সংযোজন | নাত শরীফের মাধ্যমে নবী করীম দঃ এর প্রশংসা করা
হয় অতএব ইহা ১০০% জায়েজ |
[E] নবীজীর মুহাম্মাদ নামের উৎস হচ্ছে আল্লাহ্ সিফাতী নাম- মাহমুদ।
হযরত আলী (রাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম এর প্রতি বিশেষ মর্যাদা প্রদান করল সে ব্যক্তি অবশ্যই ইমান নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিবে এবং বিনা হিসেবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। {আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম, পৃষ্ঠাঃ- ১০, আল্লামা ইবনে হাজার হাইছামী (রহঃ) / জাওয়াহেরুল
বিহার ৩য় খন্ড পৃ: ৩৫০,প্যালেস্টাইনের আল্লামা ইউসুফ নাবাহানী রহঃ
হযরত আবুবকর সিদ্দিক রাঃ বলেন,”হুজুর পাক দঃ এর
মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপলক্ষ্যে এক দিরহাম ব্যয় করবে সে জান্নাতে আমার বন্ধু হয়ে থাকবে | {আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম, পৃষ্ঠাঃ- ১০, আল্লামা ইবনে হাজার হাইছামী (রহঃ) / জাওয়াহেরুল বিহারঃ-
বিহার ৩য় খন্ড পৃ: ৩৫০,প্যালেস্টাইনের আল্লামা ইউসুফ নাবাহানী রহঃ
হযরত ওমর (রা) বলেন, ” যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বিশেষ মর্যাদা দিল সে মূলতঃ ইসলামকেই পুনরুজ্জীবিত করল। {আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম, পৃষ্ঠাঃ- ১০, আল্লামা ইবনে হাজার হাইছামী (রহঃ) / জাওয়াহেরুল বিহারঃ- ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠায়ঃ- ৩৫০, প্যালেষ্টাইনের আল্লামা ইউসুফ নাবাহানী (রহঃ)}
হযরত ওসমান (রাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী উপলক্ষ্যে এক দিরহাম
খরচ করল সে যেন বদর ও হুনায়েন যুদ্ধে শরীক থাকল | {আন নি’মাতুল কুবরা আলাল আ’লাম, পৃষ্ঠাঃ- ১০, আল্লামা ইবনে হাজার হাইছামী (রহঃ) / জাওয়াহেরুল বিহারঃ- ৩য় খন্ড, পৃষ্ঠায়ঃ- ৩৫০, প্যালেষ্টাইনের আল্লামা ইউসুফ নাবাহানী (রহঃ)} – “জাওয়াহেরুল বিহার” গ্রন্থকার প্যালেষ্টাইনের আল্লামা ইউসুফ নাবাহানী (রহঃ) তাঁর কিতাবের ৩য় খন্ডের ৩৫০ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত বর্ণনা উপস্থাপন করে বলেছেন যে, আমার উপরোক্তা হাদীস সমূহের সনদ জানা রয়েছে কিন্তু কিতাব বড় হয়ে যাবার আশংকায় আমি সেগুলো অত্র কিতাবে উল্লেখ করিনি |
মন্তব্যঃ- তাহলে বোঝা গেলো সাহাবাগণ নবী করিম (দঃ) -এর দুনিয়াতে স্ব- শরীরে উপস্থিত থাকা অবস্থায় বিশ্বনবী (দঃ )-কে ভালোবেসে ওনার গুণগান ও আদর্শ জীবন সম্পর্কে অন্যদের শোনাতেন যা ঈদে মিলাদুন্নবী নামে পরিচিত । এমনকি যখন সাহাবাগণ বা অন্যান্য নবীগণ বক্তব্য দিতেন দাঁড়িয়ে (কিয়াম) করতেন | সুতরাং আমাদেরও উচিৎ ঈদে মিলাদুন্নবী পালন করা ও কিয়াম করা এটা সাহাবায়ে কেরাম ও নবীগণ (আঃ) এর সুন্নাত |
বিশ্বনবী (দঃ) জন্মের সংবাদ শুনে খুশি হওয়ায় আবু লাহাবের পুরস্কার |
وَفِي الْبُخَارِي كِتَابِ النِّكَاحِ بَابُ وَأُمَّهَاتُكُمْ الَّتِي أَرْضَعْنَكُمْ وَمَا فَلَمَّا مَاتَ أَبُو لَهَبٍ أَرِيْهِ بَعْضُ أَهْلِهِ بَشَرَهُ يُحَرِّمُ مِنَ الرَّضَاعَة ..
هَيْئَةٌ قَالَ لَهُ مَاذَا بَقِيَتْ قَالَ أَبُو لَهَب لَمْ القَ بَعْدَكُمْ خَيْرًا إِنِّي سَقَيْتُ فِي هذه بعناقتي توبية
৩: বুখারীর বর্নায় উরওয়া (রাঃ) বলেন ঘটনাটি ঘটেছিল আবু লাহাবের মৃত্যুর এক বছর পর, বদর যুদ্ধের পরে। তাঁর পরিবারে একজন অর্থাৎ আববাস (রাঃ) তাকে স্বপ্নে খুব খারাপ অবস্থায় দেখেন। তখন তিনি আবু লাহাব কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি হালে আছেন? আবু লাহাব তদুত্তরে বলল, তোমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আমি ভীষণ আজাব ভোগ করছি। তবে প্রতি সোমবার আমার শাহাদত ও মধ্যমা আঙ্গুলি চুষে কিছু পানি পাই আর এতে আমার শাস্তি কিছুটা লঘু হয়। কারন
সুওয়াইবা যখন আবু লাহাবকে তাঁর ভাতিজা মুহাম্মদ (দঃ) জন্মের সুসংবাদ প্রদান
করে, তৎক্ষণাৎ সে সুওয়াইবাকে আযাদ করে দিয়েছিলেন। এটাই তাঁরই পুরস্কার স্বরূপ কিছুটা শাস্তি লঘু হয় | (আল-বিদায় ওয়ান নিহায়া- ২ খন্ড, পৃষ্ঠা- ৫০০ | মুসান্নিফ আবদূর রাজ্জাক- ৯ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৯, হাদীস নং-১৬৬৬১ ১৪ খন্ড,পৃষ্ঠা-৪৪, হাদীস- ৫১০১ ) 25/35
মন্তব্যঃ- কট্টর কাফির আবু লাহাব বিশ্বনবী (দঃ) এর আগমণের খবর শুনে
আনন্দে তাঁর দাসী “সুওয়াইবাকে” আযাদ করার জন্যে আল্লাহ্ তাঁর কবরের আযাব প্রতি সোমবার কম করে দেন | তাহলে আমরাতো মুমিন মুসলমান বিশ্বনবী দঃ এর আগমণের দিন খুশি মনে ঈমানের সহিত যদি রোযা রাখা, কোরআন তেলায়াত, জিকির, মিলাদ মাহফিল, দান, জুসুল ইত্যাদি করলে আল্লাহ নিশ্চয় আমাদের জান্নাত
দিয়ে দেবেন এ আশা আমরা করতেই পারি |
→ বিশ্বনবী (দঃ) এর জন্মদিনের আনন্দে পতাকা উত্তোলন করা |
৩: সায়্যিদাতুনা মা আমিনা (রাঃ) বলেনঃ ” আল্লাহ্ তায়ালা আমার সামনে পূর্ব ও পশ্চিম উন্মুক্ত করে দিলেন একদা আমি দেখলাম যে, তিনটি পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে, তাঁর একটা পূর্বে একটা পশ্চিমে, আর একটা কা’বা শরীফের ছাদের উপর আর এমন সময় বিশ্বনবী দঃ এর জন্ম গ্রহণ করলেন । (খাসায়েসুল কুবরা- ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা-৯১-৯২ )
মন্তব্যঃ- আল্লাহ স্বয়ং জিবরীল আলিনকে নিয়ে বিশ্বনবী (দঃ) এর আগমনের আগে তিনটি পতাকা উত্তোলন করে স্বাগতম জানায়, কারন কুল কায়েনাতের নেতা বা বাদশার আগমণ হচ্ছে |
আমরা দেখি বর্তমানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সভাস্থলে এলে, তাঁর রাজনৈতিক কর্মী তথা সমর্থকরা দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে উচ্চস্বরে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে তাঁকে স্বাগতম জানায় | তখন আমরা একবারও বলিনা বা ফতোয়া দিলাম না। শির্ক, বিদায়াত, নাজায়েজ, হারাম কারন বললেই কর্মীরা এমন উত্তম মধ্যম দেবে যে অন্নপ্রশনের ভাত উঠে আসবে । কারন সেখানে আমাদের ধান্দা স্বার্থ লুকিয়ে থাকে
তাই আমরা চুপ থাকি ।
আর যে বিশ্বনবী (দঃ) এর জন্য আজ ইসলাম পেলাম যিনি দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদের জন্যে মঙ্গল, তাই ওনার আগমনে আমরা পতাকা উড়িয়ে স্বাগতম জানাই যেটা আল্লাহর সুন্নাত। আর যে বিরধীতা করবে সে আল্লাহর বিরুদ্ধাচারন করবে | আল্লাহ্ বিরুদ্ধাচারী হল- বেইমান, মুনাফিক, মুশরিক, কাফীর |
আল্লাহ্ বান্দাকে ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপনের নির্দেশ দিয়েছেন | [১] যেমন: পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হচ্ছে
: “হে রাসুল আপনি বলুন আল্লাহর দয়া ও রহমতকে কেন্দ্র করে তারা যেন আনন্দ (ঈদ) করে এবং এটা হবে তাদের অর্জিত সকল কর্মফলের চেয়েও অধিক শ্রেষ্ঠ। [ সুরাঃ ইউনুস, আয়াত নং-৫৮। ] মন্তব্যঃ- উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহর দয়া ও রহমতকে কেন্দ্র করে মানে বিশ্বনবী, দঃ কে পেয়ে আমরা যেন আনন্দ করি যা ঈদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ।
[২] যেমন: পবিত্র কুরআনুল কারীমে ইরশাদ হচ্ছে
: “নিশ্চয় আমি আপনাকে জগতসমূহের কাছে রহমত করেই প্রেরণ করেছি। [সুরাঃ-আম্বিয়ার, আয়াত নং-১০৭]
মন্তব্যঃ- উপরোক্ত আয়াতে বিশ্বনবী (দঃ) কে আমাদের কাছে রহমত রূপে
প্রেরণ করেছেন, আর আমদের উচিৎ রহমতকে পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করা তথা ঈদ উদযাপন করা। তাই প্রতিটি মুমিন মুসলমানের উচিৎ বিশ্বনবী দঃ আমগন কে কেন্দ্র করে জুলুস ও ওয়াজের মাহফিলে জীবন চর্চার দ্বারা আনন্দ প্রকাশ করা তথা ঈদ উদযাপন করা। আর এই ঈদ হল সকল ঈদের সেরা “ঈদে মিলাদুন্নবী” [এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা আছে ]