★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
মা_বাবর_মৃত্যুর_পর_তাদের_জন্য_করণীয়_আমল_সূমহ - Ibadat amal Discussions on

মা_বাবর_মৃত্যুর_পর_তাদের_জন্য_করণীয়_আমল_সূমহ

#মা_বাবর_মৃত্যুর_পর_তাদের_জন্য_করণীয়_আমল_সূমহ
إن الحمد لله والصلاة والسلام على رسول الله وعلى آله وصحبه أجمعين، أما بعد

মা-বাবা ছোট শব্দ, কিন্তু এ দুটি শব্দের সাথে কতযে আদর, স্নেহ, ভালবাসা রয়েছে  তা পৃথিবীরকোন মাপযন্ত্র দিয়ে নির্ণয় করা যাবে না। মা-বাবাকত না কষ্ট করেছেন, না খেয়ে থেকেছেন, অনেকসময় ভাল পোষাকও পরিধান করতে পারেন নি,কত না সময় বসে থাকতেন সন্তানের অপেক্ষায়।সেই মা বাবা যাদের চলে গিয়েছেন, তারাই বুঝেনমা বাবা কত বড় সম্পদ। যেদিন থেকে মা বাবাদুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন সেদিন থেকে মনে হয়কী যেন হারিয়ে গেল,তখন বুক কেঁপে উঠে, চোখথেকে বৃষ্টির মত পানি ঝরে, কী শান্তনাই বাতাদেরকে দেয়া যায়!  সেই মা বাবা যাদের চলেগিয়েছে তারা কি মা-বাবার জন্য কিছুই করবেনা?। এত কষ্ট করে আমাদের কে যে মা-বাবালালন পালন করেছেন তাদের জন্য আমাদের কিকিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে। আলোচ্যপ্রবন্ধে কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে মৃত মা-বাবাজন্য কী ধরনের আমল করা যাবে এবং যেআমলের সওয়াব তাদের নিকট পৌছবে তাউল্লেখ করা হলো:

১. বেশী বেশী দু‘আ করা 

মা-বাবা দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার পর সন্তান মা-বাবার জন্য বেশী বেশী দু‘আ করবে। আল্লাহতা‘আলা আমাদেরকে দু‘আ করার নির্দেশদিয়েছেন এবং কী দু‘আ করবো তাও শিক্ষাদিয়েছেন । আল-কুরআনে এসেছে,

 رَبِّ ٱرۡحَمۡهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرٗا ٢٤ ﴾ [الاسراء: ٢٤]

‘‘হে আমার রব, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর,যেমন তারা আমাকে শৈশবকালে লালন-পালনকরেছেন’’ [সূরা বানী ইসরাঈলঃ ২৪]

رَبَّنَا ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ يَوۡمَ يَقُومُ ٱلۡحِسَابُ ٤١﴾ [ابراهيم: ٤١]

‘‘হে আমাদের রব, রোজ কিয়ামতে আমাকে,আমার পিতা-মাতা ও সকল মুমিনকে ক্ষমা করেদিন’’ [সুরা ইবরাহীমঃ৪১]

এছাড়া আলস্নাহ রাববুল আলামীন পিতা-মাতারজন্য দূ‘আ করার বিশেষ নিয়ম শিক্ষা দিতে গিয়েবলেনঃ

 رَّبِّ ٱغۡفِرۡ لِي وَلِوَٰلِدَيَّ وَلِمَن دَخَلَ بَيۡتِيَ مُؤۡمِنٗا وَلِلۡمُؤۡمِنِينَ وَٱلۡمُؤۡمِنَٰتِۖ وَلَا تَزِدِ ٱلظَّٰلِمِينَ إِلَّا تَبَارَۢا ٢٨ ﴾ [نوح: ٢٨

‘হে আমার রব! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে,যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবেতাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করুন এবংধ্বংস ছাড়া আপনি যালিমদের আর কিছুইবাড়িয়ে দেবেন না ’[সূরা নুহ: ২৮] ।

 

মা-বাবা এমন সন্তান রেখে যাবেন যারা তাদেরজন্য দোয়া করবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহুআনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

« إِذَا مَاتَ الإِنْسَانُ انْقَطَعَ عَنْهُ عَمَلُهُ إِلاَّ مِنْ ثَلاَثَةٍ إِلاَّ مِنْ صَدَقَةٍ جَارِيَةٍ أَوْ عِلْمٍ يُنْتَفَعُ بِهِ أَوْ وَلَدٍ صَالِحٍ يَدْعُو لَهُ ».

অর্থ: মানুষ মৃত্যুবরণ করলে তার যাবতীয় আমলবন্ধ হয়ে যায়, তবে ৩ টি আমল বন্ধ হয় না-১.সদকায়ে জারিয়া  ২. এমন জ্ঞান-যার দ্বারাউপকৃত হওয়া যায় ৩. এমন নেক সন্তান- যে তারজন্য দু‘আ করে [সহিহ মুসলিম: ৪৩১০]

মূলত: জানাযার নামায প্রথম থেকে শেষ পর্যন্তমৃত ব্যক্তির জন্য দু‘আ স্বরূপ।

 ২. দান-ছাদকাহ করা, বিশেষ করে সাদাকায়েজারিয়াহ প্রদান করাঃ

মা-বাবা বেচে থাকতে দান-সাদকাহ করে যেতেপারেন নি বা বেচে থাকলে আরো দান-সদকাহকরতেন, সেজন্য তাদের পক্ষ থেকে  সন্তান দান-সদকাহ করতে পারে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَجُلاً أَتَى النَّبِىَّ صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أُمِّىَ افْتُلِتَتْ نَفْسَهَا وَلَمْ تُوصِ وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ أَفَلَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا قَالَ « نَعَمْ »

অর্থ: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেনঃ ‘‘জনৈকব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূলআমার মা হঠাৎ মৃতু বরণ করেছেন। তাই কোনঅছিয়ত করতে পারেন নি। আমার ধারণা তিনিযদি কথা বলার সুযোগ পেতেন তাহলে দান-ছাদকা করতেন। আমি তাঁর পক্ষ থেকে ছাদকাকরলে তিনি কি এর ছাওয়াব পাবেন ? রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ,অবশ্যই পাবেন।’’ [সহীহ মুসলিম:২৩৭৩]

তবে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে সাদাকায়ে জারিয়া বাপ্রবাহমান ও চলমান সাদাকা প্রদান করা। যেমনপানির কুপ খনন করা, (নলকুপ বসানো, দ্বীনীমাদরাসা প্রতিষ্ঠা, কুরআন শিক্ষার জন্য মক্তব ওপ্রতিষ্ঠান তৈরী করা, স্থায়ী জনকল্যাণমূলক কাজকরা। ইত্যাদি।

 ৩. মা-বাবার পক্ষ থেকে সিয়াম  পালনঃ

মা-বাবা জীবিত থাকা অবস্থায় যদি তাদের কোনমানতের সিয়াম কাযা থাকে, সন্তান তাদের পক্ষথেকে সিয়াম পালন করলে তাদের পক্ষ থেকেআদায় হয়ে যাবে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাহতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ

«مَنْ مَاتَ  وَعَلَيْهِ صِيَامٌ صَامَ عَنْهُ وَلِيُّهُ»

অর্থ: ‘‘যে ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করল এমতাবস্থায় যেতার উপর রোজা ওয়াজিব ছিল। তবে তার পক্ষথেকে তার ওয়ারিসগণ রোজা রাখবে’’ [সহীহবুখারী:১৯৫২]।

অধিকাংশ আলেমগণ এ হাদীসটি শুধুমাত্রওয়াজিব রোযা বা মানতের রোযার বিধান হিসেবেনির্ধারণ করেছেন। তাদের পক্ষ থেকে নফলসিয়াম রাখার পক্ষে দলীল নাই।

 ৪. হজ্জ বা উমরাহ করাঃ

মা-বাবার পক্ষ থেকে হজ্জ বা উমরাহ করলে তাআদায় হবে এবং তারা  উপকৃত হবে। ইবনেআববাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা হতে বর্ণিত হাদীসেএসেছে,

«أَنَّ امْرَأَةً مِنْ جُهَيْنَةَ جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ نَعَمْ حُجِّي عَنْهَا أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً اقْضُوا اللَّهَ فَاللَّهُ أَحَقُّ بِالْوَفَاءِ»

অর্থ: ‘‘ জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলারাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরকাছে আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল,আমার মা হজ্জ করার মানত করেছিলেন কিন্তুতিনি হজ্জ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন। এখনআমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করতেপারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, ‘‘তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জকর। তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার উপরঋণ থাকতো তবে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর জন্য তা আদায় কর। কেননাআল্লাহর দাবী পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’’ [সহীহ অর্থ: ‘‘ জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলারাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরকাছে আগমণ করে বলল, হে আল্লাহর রাসুল,আমার মা হজ্জ করার মানত করেছিলেন কিন্তুতিনি হজ্জ সম্পাদন না করেই মারা গেছেন। এখনআমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করতেপারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, ‘‘তুমি তোমার মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জকর। তোমার কি ধারণা যদি তোমার মার উপরঋণ থাকতো তবে কি তুমি তা পরিশোধ করতে না? সুতরাং আল্লাহর জন্য তা আদায় কর। কেননাআল্লাহর দাবী পরিশোধ করার অধিক উপযোগী’’ [সহীহ বুখারী: ১৮৫২]

তবে মা-বাবার পক্ষ থেকে যে লোক হজ্জ বাওমরাহ করতে চায় তার জন্য শর্ত হলো সে আগেনিজের হজ্জ-ওমরাহ করতে হবে।

 ৫. মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করাঃ

মা-বাবার পক্ষ থেকে কুরবানী করলে তারছাওয়াব দ্বারা তারা উপকৃত হবে। এ বিষয়েহাদীসে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمَرَ بِكَبْشٍ أَقْرَنَ يَطَأُ فِى سَوَادٍ وَيَبْرُكُ فِى سَوَادٍ وَيَنْظُرُ فِى سَوَادٍ فَأُتِىَ بِهِ لِيُضَحِّىَ بِهِ فَقَالَ لَهَا « يَا عَائِشَةُ هَلُمِّى الْمُدْيَةَ » ثُمَّ قَالَ « اشْحَذِيهَا بِحَجَرٍ ». فَفَعَلَتْ ثُمَّ أَخَذَهَا وَأَخَذَ الْكَبْشَ فَأَضْجَعَهُ ثُمَّ ذَبَحَهُ ثُمَّ قَالَ « بِاسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ تَقَبَّلْ مِنْ مُحَمَّدٍ وَآلِ مُحَمَّدٍ وَمِنْ أُمَّةِ مُحَمَّدٍ ». ثُمَّ ضَحَّى بِهِ.

অর্থ: আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনএকটি শিংযুক্ত দুম্বা উপস্থিত করতে নির্দেশদিলেন, যার পা কালো, চোখের চতুর্দিক কালোএবং পেট কালো। অতঃপর তা কুরবানীর জন্যআনা হলো। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকেবললেন, হে আয়েশা! ছুরি নিয়ে আস, তারপরবললেন, তুমি একটি পাথর নিয়ে তা দ্বারা এটাকেধারালো কর। তিনি তাই করলেন। তারপররাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছুরিহাতে নিয়ে দুম্বাটিকে শুইয়ে দিলেন। পশুটি যবেহ্করার সময় বললেন, বিসমিল্লাহ, হে আল্লাহ তুমিএটি মুহাম্মাদ, তাঁর বংশধর এবং সকল উম্মাতেমুহাম্মাদীর পক্ষ থেকে কবুল কর”। এভাবে তিনিতা দ্বারা কুরবানী করলেন। [ সহীহ মুসলিম:৫২০৩]

 ৬. মা-বাবার ওসিয়ত পূর্ণ করা

মা-বাবা শরীয়াহ সম্মত কোন ওসিয়ত করে গেলেতা পূর্ণ করা সন্তানদের উপর দায়িত্ব। রাশীদ ইবনসুয়াইদ আসসাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,

«قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، إِنَّ أُمِّي أَوْصَتْ أَنْ نُعْتِقُ عَنْهَا رَقَبَةً ، وَعِنْدِي جَارِيَةٌ سَوْدَاءُ ، قَالَ : ادْعُ بِهَا ، فَجَاءَتْ ، فَقَالَ : مَنْ رَبُّكِ ؟ قَالَتِ : اللَّهُ ، قَالَ : مَنْ أَنَا ؟ قَالَتْ : رَسُولُ اللَّهِ ، قَالَ : أَعْتِقْهَا ، فَإِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ».

অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লামকে বললাম হে আল্লাহর রাসুল, আমারমা একজন দাসমুক্ত করার জন্য ওসিয়ত করেগেছেন। আর আমার নিকট কালো একজন দাসীআছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, তাকে ডাকো, সে আসল, রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে প্রশ্নকরলেন, তোমার রব কে ? উত্তরে সে বলল,আমার রব আল্লাহ। আবার প্রশ্ন করলেন আমিকে ? উত্তরে সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল।তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবললেন, তাকে মুক্ত করে দাও; কেন না সে মু’মিনা। [সহীহ ইবন হিববান :১৮৯]

 ৭. মা-বাবার বন্ধুদের সম্মান করা 

মা-বাবার বন্ধুদের সাথে ভাল ব্যবহার করা, সম্মানকরা, তাদেরকে দেখতে যাওয়া,তাদেরকে হাদিয়াদেয়া। এ বিষয়ে হাদীসে উল্লেখ আছে,

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ دِينَارٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ أَنَّ رَجُلاً مِنَ الأَعْرَابِ لَقِيَهُ بِطَرِيقِ مَكَّةَ فَسَلَّمَ عَلَيْهِ عَبْدُ اللَّهِ وَحَمَلَهُ عَلَى حِمَارٍ كَانَ يَرْكَبُهُ وَأَعْطَاهُ عِمَامَةً كَانَتْ عَلَى رَأْسِهِ فَقَالَ ابْنُ دِينَارٍ فَقُلْنَا لَهُ أَصْلَحَكَ اللَّهُ إِنَّهُمُ الأَعْرَابُ وَإِنَّهُمْ يَرْضَوْنَ بِالْيَسِيرِ. فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ إِنَّ أَبَا هَذَا كَانَ وُدًّا لِعُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ وَإِنِّى سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- يَقُولُ « إِنَّ أَبَرَّ الْبِرِّ صِلَةُ الْوَلَدِ أَهْلَ وُدِّ أَبِيهِ ».

অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রাদিয়াল্লাহু আনহুআব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেবর্ণনা করেন, একবার মক্কার পথে চলার সময়আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর এক বেদুঈন এরসাথে দেখা হলে তিনি তাকে সালাম দিলেন এবংতাকে সে গাধায় চড়ালেন যে গাধায় আব্দুল্লাহরাদিয়াল্লাহু আনহুমা উপবিষ্ট ছিলেন এবং তাঁর(আব্দুল্লাহ) মাথায় যে পাগড়িটি পরা ছিলো তাতাকে প্রদান করলেন। আব্দুল্লাহ ইবান দীনাররাহেমাহুল্লাহ বললেন, তখন আমরা আব্দুল্লাহকেবললাম: আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক! এরা গ্রাম্যমানুষ: সামান্য কিছু পেলেই এরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়-(এতসব করার কি প্রয়োজন ছিলো?) উত্তরেআব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তার পিতা, (আমার পিতা) উমার ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুআনহু এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি“পুত্রের জন্য পিতার বন্ধু-বান্ধবের সাথে ভালব্যবহার করা সবচেয়ে বড় সওয়াবের কাজ’’ [অর্থ: আব্দুল্লাহ ইবনে দীনার রাদিয়াল্লাহু আনহুআব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকেবর্ণনা করেন, একবার মক্কার পথে চলার সময়আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু এর এক বেদুঈন এরসাথে দেখা হলে তিনি তাকে সালাম দিলেন এবংতাকে সে গাধায় চড়ালেন যে গাধায় আব্দুল্লাহরাদিয়াল্লাহু আনহুমা উপবিষ্ট ছিলেন এবং তাঁর(আব্দুল্লাহ) মাথায় যে পাগড়িটি পরা ছিলো তাতাকে প্রদান করলেন। আব্দুল্লাহ ইবান দীনাররাহেমাহুল্লাহ বললেন, তখন আমরা আব্দুল্লাহকেবললাম: আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুক! এরা গ্রাম্যমানুষ: সামান্য কিছু পেলেই এরা সন্তুষ্ট হয়ে যায়-(এতসব করার কি প্রয়োজন ছিলো?) উত্তরেআব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, তার পিতা, (আমার পিতা) উমার ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহুআনহু এর বন্ধু ছিলেন। আমি রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি“পুত্রের জন্য পিতার বন্ধু-বান্ধবের সাথে ভালব্যবহার করা সবচেয়ে বড় সওয়াবের কাজ’’ [সহীহ মুসলিম:৬৬৭৭]।

মৃতদের বন্ধুদের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলও আমাদেরকেউৎসাহিত করে। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাথেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

«إِذَا ذَبَحَ الشَّاةَ فَيَقُولُ « أَرْسِلُوا بِهَا إِلَى أَصْدِقَاءِ خَدِيجَةَ »

অর্থ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামযখনই কোন বকরী যবেহ করতেন, তখনই তিনিবলতেন, এর কিছু অংশ খাদীজার বান্ধবীদেরনিকট পাঠিয়ে দাও [সহীহ মুসলিম: ৬৪৩১]

 ৮. মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সম্পর্ক রাখা

সন্তান তার মা-বাবার আত্নীয়দের সাথে সম্পর্কবজায় রাখবে। আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহুআনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«مَنْ أَحَبَّ أَنْ يَصِلَ أَبَاهُ فِي قَبْرِهِ ، فَلْيَصِلْ إِخْوَانَ أَبِيهِ بَعْدَهُ»

‘যে ব্যক্তি তার পিতার সাথে কবরে সুসম্পর্কপ্রতিষ্ঠা করতে ভালবাসে, সে যেন পিতার মৃত্যুরপর তার ভাইদের সাথে সু-সম্পর্ক রাখে’ [সহীহইবন হিববান:৪৩২]

 ৯. ঋণ পরিশোধ করা

মা-বাবার কোন ঋণ থাকলে তা দ্রুত পরিশোধকরা সন্তানদের উপর বিশেষভাবে কর্তব্য।রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঋণেরপরিশোধ করার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।আবু হুরায়রা  রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিতহাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন,

«نَفْسُ الْمُؤْمِنِ مُعَلَّقَةٌ بِدَيْنِهً حَتَّى يُقْضَى عَنْهُ».

অর্থ: ‘‘মুমিন ব্যক্তির আত্মা তার ঋণের সাথেসম্পৃক্ত থেকে যায়; যতক্ষণ তা তা তার পক্ষ থেকেপরিশোধ করা হয়”। [সুনান ইবন মাজাহ:২৪১৩]

ঋণ পরিশোধ না করার কারণে জান্নাতের যাওয়ারপথ বন্ধ হয়ে যায়; এমনকি যদি আল্লাহর রাস্তায়শহীদও হয় । হাদীসে  আরো এসেছে,

«مَا دَخَلَ الْجَنَّةَ حَتَّى يُقْضَى دَيْنُهُ»

অর্থ: যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দার ঋণ পরিশোধ না করাহবে ততক্ষণ পর্যন্ত জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবেনা। [নাসায়ী ৭/৩১৪; তাবরানী ফিল কাবীর ১৯/২৪৮; মুস্তাদরাকে হাকিম ২/২৯]

 ১০. কাফফারা আদায় করা   

মা-বাবার কোন শপথের কাফফারা,ভুলকৃতহত্যাসহ কোন কাফফারা বাকী থাকলে সন্তান তাপূরণ করবে। আল-কুরআনে বলা হয়েছে,

﴿وَمَن قَتَلَ مُؤۡمِنًا خَطَ‍ٔٗا فَتَحۡرِيرُ رَقَبَةٖ مُّؤۡمِنَةٖ وَدِيَةٞ مُّسَلَّمَةٌ إِلَىٰٓ أَهۡلِهِۦٓ إِلَّآ أَن يَصَّدَّقُواْۚ ﴾ [النساء: ٩٢] 

অর্থ: যে ব্যক্তি ভুলক্রমে কোন মুমিনকে হত্যাকরবে, তাহলে একজন মুমিন দাসকে মুক্ত করতেহবে এবং দিয়াত (রক্ত পণ দিতে হবে) যা হস্তান্তরকরা হবে তার পরিজনদের কাছে। তবে তারা যদিসদাকা (ক্ষমা) করে দেয় (তাহলে সেটা ভিন্ন কথা) [ সূরা আন-নিসা:৯২]

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনাকরেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন,

« مَنْ حَلَفَ عَلَى يَمِينٍ فَرَأَى غَيْرَهَا خَيْرًا مِنْهَا فَلْيَأْتِهَا وَلْيُكَفِّرْ عَنْ يَمِينِهِ ».

অর্থ: ‘‘ যে ব্যক্তি কসম খেয়ে শপথ করার পরতার থেকে উত্তম কিছু করলেও তার কাফফারাঅদায় করবে’’ [সহীহ মুসলিম: ৪৩৬০] ।

এ বিধান জীবিত ও মৃত সবার ক্ষেত্রে সমভাবেপ্রযোজ্য। দুনিয়ার বুকে কেউ অন্যায় করলে তারকাফফারা দিতে হবে। অনুরূপভাবে কেউ অন্যায়করে মারা গেলে তার পরিবার-পরিজন মৃতব্যক্তির পক্ষ থেকে কাফফারা প্রদান করবেন।

 ১১. ক্ষমা প্রার্থনা করাঃ

মা-বাবার জন্য আল্লাহর নিকট বেশী বেশী ক্ষমাপ্রার্থনা করা গুরুত্বপূর্ণ আমল। সন্তান মা-বাবারজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় আল্লাহ তা‘আলা তাদেরমর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন। হাদীসে বলা হয়েছে,

«عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : تُرْفَعُ لِلْمَيِّتِ بَعْدَ مَوْتِهِ دَرَجَتُهُ . فَيَقُولُ : أَيْ رَبِّ ، أَيُّ شَيْءٍ هَذِهِ ؟ فَيُقَالُ : وَلَدُكَ اسْتَغْفَرَ لَكَ»

অর্থ: আবু হুরায়রা  রাদিয়াল্লাহু আনহু  হতেবর্ণিত, তিনি বলেন, মৃত্যুর পর কোন বান্দাহরমর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়। তখন সে বলে হে আমাররব, আমি তো এতো মর্যাদার আমল করিনি,কীভাবে এ আমল আসলো ? তখন বলা হবে,তোমার সন্তান তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করায় এমর্যাদা তুমি পেয়েছো’’ [আল-আদাবুল মুফরাদ:৩৬]।

মা-বাবা দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার পর তাদেরজন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার বিষয়ে উসমানরাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

«عَنْ عُثْمَانَ ، قَالَ : وَقَفَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَى قَبْرِ رَجُلٍ وَهُوَ يُدْفَنُ فَلَمَّا فَرَغَ مِنْهُ قَالَ : اسْتَغْفِرُوا لأَخِيكُمْ وَسَلُوا اللَّهَ لَهُ بالثَّبَاتِ ؛ فَإِنَّهُ يُسْأَلُ الآنَ».

অর্থ: উসমান রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক মৃতব্যক্তিকে দাফন করার পর তার কবরের পার্শ্বেদাঁড়ালেন এবং বললেন ‘‘তোমরা তোমাদেরভাইয়ের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করএবং তার জন্য ঈমানের উপর অবিচলতা ও দৃঢ়তাকামনা কর, কেননা এখনই তাকে প্রশ্ন করা হবে’’ [মুসনাদুল বাজ্জার :৪৪৫]।

তাই সুন্নাত হচ্ছে, মৃত ব্যক্তিকে কবরে দেয়ার পরতার কবরের পার্শ্বে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তার জন্যপ্রশ্নোত্তর সহজ করে দেয়া, প্রশ্নোত্তর দিতে সমর্থহওয়ার জন্য দো‘আ করা।

 ১২. মান্নত পূরণ করা 

মা-বাবা কোন মান্নত করে গেলে সন্তান তার পক্ষথেকে পূরণ করবে। ইবন আববাস রাদিয়াল্লাহুআনহুমা থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে,

«أَنَّ امْرَأَةً نَذَرَتْ أَنْ تَصُومَ شَهْرًا فَمَاتَتْ فَأَتَى أَخُوهَا النَّبِىَّ -صلى الله عليه وسلم- فَقَالَ :« صُمْ عَنْهَا ».

অর্থ: কোন মহিলা রোজা রাখার মান্নত করেছিল,কিন্তু সে তা পূরণ করার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করল।এরপর তার ভাই এ বিষয়ে  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলে তিনিবলরেন, তার পক্ষ থেকে সিয়াম পালন কর।[সহীহ ইবন হিববান:২৮০]

 ১৩. মা-বাবার ভাল কাজসমূহ জারী রাখা 

মা-বাবা যেসব ভাল কাজ অর্থাৎ মসজিদ তৈরীকরা, মাদরাসা তৈরী করা, দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানতৈরীসহ যে কাজগুলো করে গিয়েছেন সন্তানহিসাবে তা যাতে অব্যাহত থাকে তার ব্যবস্থা করা।কেননা এসব ভাল কাজের সওয়াব তাদেরআমলনামায় যুক্ত হতে থাকে। হাদীসে এসেছে,

«مَنْ دَلَّ عَلَى خَيْرٍ فَلَهُ مِثْلُ أَجْرِ فَاعِلِهِ »

‘‘ভাল কাজের পথপ্রদর্শনকারী এ কাজসম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে’’। [সুনানআততিরমীযি : ২৬৭০]

«مَنْ سَنَّ فِى الإِسْلاَمِ سُنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أَجْرُهَا وَأَجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ مِنْ غَيْرِ أَنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورِهِمْ شَىْءٌ»

যে ব্যক্তির ইসলামের ভাল কাজ শুরু করল, সে একাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ সাওয়াব পাবে।অথচ তাদেও সওয়াব থেকে কোন কমতি হবে না’’ [সহীহ মুসলিম:২৩৯৮]।

 ১৪. কবর যিয়ারত করা  

সন্তান তার মা-বাবার কবর যিয়ারত করবে। এরমাধ্যমে সন্তান এবং মা-বাবা উভয়ই উপকৃত হবে।এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিওয়াসাল্লাম বলেছেন,

«كُنْتُ نَهَيْتُكُمْ عَنْ زِيَارَةِ الْقُبُورِ فَقَدْ أُذِنَ لِمُحَمَّدٍ فِى زِيَارَةِ قَبْرِ أُمِّهِ فَزُورُوهَا فَإِنَّهَا تُذَكِّرُ الآخِرَةَ»

অর্থ: আমি তোমাদেরকে কবর যিয়ারত করতেনিষেধ করেছিলাম,অত:পর মুহাম্মাদের মায়েরকবর যিয়ারতের অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখনতোমরা কবর যিয়রাত কর, কেননা তাআখেরাতকে স্মরণ করিয়ে দেয় [সুনান তিরমীযি:১০৫৪]।

যিয়রাত কর, কেননা তা আখেরাতকে স্মরণকরিয়ে দেয় [সুনান তিরমীযি :১০৫৪]।

কবর যিয়ারত কোন দিনকে নির্দিষ্ট করে করাযাবে না। কবর যিযারত করার সময় বলবে,

«السَّلاَمُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الدِّيَارِ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ ، وَإِنَّا إِنْ شَاءَ اللَّهُ بِكُمْ لاَحِقُونَ ، نَسْأَلُ اللَّهَ لَنَا وَلَكُمُ الْعَافِيَةَ».

অর্থ: কবরবাসী মুমিন-মুসলিম আপনাদের উপরশান্তি বর্ষিত হোক । নিশ্চয় আমরা আপনাদেরসাথে মিলিত হবো। আমরা আল্লাহর কাছেআপনাদের এবং আমাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনাকরছি। [সুনান ইবন মাজাহ :১৫৪৭]

 ১৫. ওয়াদা করে গেলে তা বাস্তবায়ন করা    

মা-বাবা কারো সাথে কোন ভাল কাজের ওয়াদাকরে গেলে বা এমন ওয়াদা যা তারা বেচে থাকলেকরে যেতেন, সন্তান যথাসম্ভব তা বাস্তবায়নেরচেষ্টা করবে। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে,

وَأَوۡفُواْ بِٱلۡعَهۡدِۖ إِنَّ ٱلۡعَهۡدَ كَانَ مَسۡ‍ُٔولٗا ٣٤ ﴾ [الاسراء: ٣٤] 

অর্থ: আর তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ কর, নিশ্চয়অঙ্গীকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। [ সূরাবনী ইসরাঈল:৩৪]

 ১৬.কোন গুনাহের কাজ করে গেলে তা বন্ধকরা

মা-বাবা বেচে থাকতে কোন গুনাহের কাজেরসিদ্ধান্ত নিয়ে থাকলে তা বন্ধ করবে বা শরীয়াহসম্মতভাবে সংশোধন করে দিবে। কেননা আবুহুরায়রা  রাদিয়াল্লাহু আনহু  হতে বর্ণিত হাদীসেরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামবলেছেন,

«وَمَنْ دَعَا إِلَى ضَلاَلَةٍ كَانَ عَلَيْهِ مِنَ الإِثْمِ مِثْلُ آثَامِ مَنْ تَبِعَهُ لاَ يَنْقُصُ ذَلِكَ مِنْ آثَامِهِمْ شَيْئًا ».

এবং যে মানুষকে গুনাহের দিকে আহবান করবে,এ কাজ সম্পাদনকারীর অনুরূপ গুনাহ তারআমলনামায় যুক্ত হতে থাকবে। অথচ তাদেরগুনাহ থেকে কোন কমতি হবে না’’ [সহীহমুসলিম:৬৯৮০]।

 ১৭.মা-বাবার পক্ষ থেকে মাফ চাওয়া 

মা-বাবা বেচে থাকতে কারো সাথে খারাপ আচরণকরে থাকলে বা কারো উপর যুলুম করে থাকলেবা কাওকে কষ্ট দিয়ে থাকলে মা-বাবার পক্ষ থেকেতার কাছ থেকে মাফ মাফ চেয়ে নিবে অথবাক্ষতি পূরণ দিয়ে দিবে।  কেননা হাদীসে এসেছে,

«عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ : أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : أَتَدْرُونَ مَنِ الْمُفْلِسُ ؟ قَالُوا : الْمُفْلِسُ فِينَا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَنْ لاَ دِرْهَمَ لَهُ ، وَلاَ مَتَاعَ لَهُ ، فَقَالَ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : الْمُفْلِسُ مِنْ أُمَّتِي يَأْتِي يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِصَلاَتِهِ وَصِيَامِهِ وَزَكَاتِهِ ، فَيَأْتِي وَقَدْ شَتَمَ هَذَا ، وَأَكَلَ مَالَ هَذَا ، وَسَفَكَ دَمَ هَذَا وَضَرَبَ هَذَا ، فَيَقْعُدُ ، فَيُعْطَى هَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ ، وَهَذَا مِنْ حَسَنَاتِهِ ، فَإِنْ فَنِيَتْ حَسَنَاتُهُ قَبْلَ أَنْ يُعْطِيَ مَا عَلَيْهِ أُخِذَ مِنْ خَطَايَاهُمْ ، فَطُرِحَ عَلَيْهِ ثُمَّ طُرِحَ فِي النَّارِ».

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনাকরেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামবলেছেন, তোমরা কি জান নিঃস্ব ব্যক্তি কে?সাহাবীগণ বললেন, আমাদের মধ্যে যার সম্পদনাই সে হলো গরীব লোক। তখন তিনি বললেন,আমার উম্মতের মধ্যে সে হলো গরীব যে,কিয়ামতের দিন নামায, রোযা ও যাকাত নিয়েআসবে অথচ সে অমুককে গালি দিয়েছে,অমুককে অপবাদ দিয়েছে, অন্যায়ভাবে লোকেরমাল খেয়েছে, সে লোকের রক্ত প্রবাহিত করেছেএবং কাউকে প্রহার করেছে। কাজেই এসবনির্যাতিত ব্যক্তিদেরকে সেদিন তার নেক আমলনামা দিয়ে দেয়া হবে। এবং তাকে জাহান্নামেনিক্ষেপ করা হবে। [সুনান আততিরমিযি :২৪২৮]

সুতরাং এ ধরনের নিঃস্ব ব্যক্তিকে মুক্ত করার জন্যতার হকদারদের কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেয়াসন্তানের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।

অল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে মা বাবার জন্যআমলগুলো করার তাওফীক দিন। আমীন!

وصلى الله على نبينا محمد وعلي اله وأصحابه ومن تبعهم بإحسان إلى يوم الدين- وأخر دعوانا أن الحمد لله رب العالمين

'আপনিও হোন ইসলামেরপ্রচারক' 
#কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলেযতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবেরঅধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদেরসওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
ভাল লাগলে শেয়ার করুন।


Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|