★بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيم★لآ اِلَهَ اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ★اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ★
YaNabi.in
তারাবীর ৩৫ টি মাদানী ফুল - Mas'la Masayel Discussions on

তারাবীর ৩৫ টি মাদানী ফুল

edited May 2017 in Mas'la Masayel


তারাবীর ৩৫ টি মাদানী ফুল
(১) তারাবীহ্ প্রত্যেক বিবেকবান ও বালেগ ইসলামী ভাই ও ইসলামী বোনের জন্য সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। (্দুররুল মুখতার: ২য় খন্ড, ৪৯৩ পৃষ্ঠা) সেটা বর্জন করা জায়িয নেই।
(২) তারাবীর নামায বিশ রাকাত। সায়্যিদুনা ফারুকে আযম রাদিয়াল্লাহু আনহু
এর শাসনামলে বিশ রাকাতই পড়া হতো। (আস্সুনানুল কুবরা, বায়হাকী: ২য় খন্ড, ৬৯৯ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৪৬১৭)
(৩) তারাবীর জামাআত সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আলাল কেফায়া। সুতরাং যদি মসজিদের সবাই তারাবীর জামাআত ছেড়ে দেয় তবে সবাই তিরস্কারযোগ্য কাজ করলো। (অর্থাৎ মন্দ কাজ করলো)। আর যদি কয়েকজন লোক জামাআত সহকারে পড়ে, তবে যারা ইশাকী পড়েছে, তারা জামাআতের ফযীলত থেকে বঞ্চিত হয়েছে। (হেদায়া ১ম খন্ড, ৭০ পৃষ্ঠা)
(৪) তারাবীর নামাযের সময় হল ইশার ফরয নামায পড়ার পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত। ইশার ফরয আদায় করার পূর্বে পড়ে নিলে বিশুদ্ধ হবে না। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১১৫ পৃষ্ঠা)
(৫) ইশার ফরয ও বিতরের পরও তারাবী পড়া যায়। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৪ পৃষ্ঠা) যেমন, কখনো ২৯শে রমযান চাঁদ দেখার সাক্ষী পেতে দেরী হলে এমনই ঘটে থাকে।
(৬) মুস্তাহাব হচ্ছে; তারাবীতে রাতের এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত দেরী করা। যদি অর্ধ রাতের পরেও পড়ে তবুও মাকরূহ হবে না। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৫ পৃষ্ঠা)
(৭) তারাবীহ ছুটে গেলে তার কাযা নেই। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৪ পৃষ্ঠা)
 (৮) উত্তম হচ্ছেÑ তারাবীর বিশ রাকাত নামায দুই দুই রাকাত করে দশ সালাম সহকারে সম্পন্ন করা। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৫ পৃষ্ঠা)
(৯) তারাবীর ২০ রাকাত নামায এক সালাম সহকারে সম্পন্ন করা যায়, কিন্তু এমন করা মাকরুহ। প্রতি দু’রাকাত পর কাদাহ করা (বসা) ফরয।প্রত্যেক কাদায় (আত্তাহিয়্যাত) এর পর দরূদ শরীফ ও পড়বে। আর বিজোড় রাকাত অর্থাৎ ১ম, ৩য়, ৫ম, ইত্যাদিতে সানা পড়বে, আর ইমাম আউযু বিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহও পড়বেন। (আদ্দুররুল মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠা)
(১০) যখন দু’ দু’ রাকাত করে পড়ছে, তখন প্রতি দু’ রাকাতে পৃথক পৃথক নিয়্যত করবে। আর যদি বিশ রাকাতের একসাথে নিয়্যত করে নেয়, তবেও জায়িয। (আদ্দুররুল মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৪ পৃষ্ঠা)
(১১) বিনা ওযরে তারাবীহ বসে পড়া মাকরুহ। বরং কোন কোন সম্মানিত ফকীহ رحمه الله على মতে তো নামাযই হবে না। (আদ্দররুল মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৯ পৃষ্ঠা)
(১২) তারাবীহ জামাআত সহকারে মসজিদে আদায় করা উত্তম। যদি জামাআত সহকারে ঘরে পড়ে নেয়, তবে জামাআত বর্জনের গুনাহ হবেনা। কিস্তু ওই সাওয়াব পাবেনা, যা মসজিদে পড়লে পেত। (আলমগীরি, ১ম খন্ড, ১১৬ পৃষ্ঠা) মসজিদে ইশার নামায জামাআত সহকারে আদায় করে ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে তারাবীর নামাজ আদায় করা যাবে। যদি শরয়ী গ্রহণ যোগ্য ওযর ব্যতীত ঘরে বা অন্য কোথাও ইশার ফরজ নামাজের জামাআত আদায় করা হয় তাহলে ওয়াজিব ছেড়ে দেয়ার গুনাহ্ হবে।
(১৩) না বালেগ ইমামের পিছনে শুধু না বালেগরাই তারাবী পড়তে পারবে।
(১৪) বালেগের তারাবীহ (বরং যেকোন নামায, এমনকি নফলও) না বালেগের পিছনে আদায় হবে না।
(১৫) তারাবীতে কমপক্ষে একবার কুরআন পাক পড়া ও শুনা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। (সংশোধিত ফতোয়ায়ে রযাবীয়া, ৭ম খন্ড, ৪৫৮ পৃষ্ঠা)
(১৬) যদি শর্তাবলী বিশিষ্ট হাফিয পাওয়া না যায় কিংবা অন্য কোন কারণে খতম করা সম্ভব না হয়, তবে তারাবীতে যেকোন সূরা পড়তে পারবে। তবে সূরা ফীল থেকে সূরা নাস পর্যন্ত দু’বার পড়ে নিন, এভাবে বিশ রাকাত স্মরণ রাখা সহজ হবে।
(১৭) একবার بسم الله الرحمن الرحيم উচ্চ আওয়াজে পড়া সুন্নাত।
প্রত্যেক সুরার শুরুতে আস্তে পড়া মুস্তাহাব। পরবর্তী যুগের ফকীহগণ رحمه الله عليه খতমে তারাবীতে তিনবার কুল হুয়াল্লাহু শরীফ পড়া মুস্তাহাব বলেছেন। তাছাড়া উত্তম হচ্ছে, খতম করার তারিখে সর্বশেষ রাকাতে আলিফ লাম মিম থেকে মুফলিহুন পর্যন্ত পড়া। (বাহারে শরীয়াত, ৪র্থ খন্ড, ৩৭ পৃষ্ঠা)
(১৮) যদি কোন কারণে তারাবীর নামায ভঙ্গ হয়ে যায়, তবে যেই পরিমাণ কুরআন মজীদ ওই রাকাতগুলোতে পড়েছিলো সে পরিমাণ পুনরায় পড়বে, যাতে খতম অসম্পূর্ণ থেকে না যায়। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
(১৯) ইমাম ভুলবশত: কোন আয়াত কিংবা সূরা ছেড়ে আগে বেড়ে গেলে, তখন মুস্তাহাব হচ্ছে সেটা প্রথমে পড়ে নিবে, তারপর সামনে বাড়বে। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
(২০) পৃথক পৃথক মসজিদে তারাবীহ পড়তে পারে, যদি খতমে কুরআনের ক্ষতি না হয়। উদাহরণ স্বরূপ, তিনটি মসজিদ এমন, সে গুলোতে প্রতিদিন সোয়া পারা পড়া হয়, সুতরাং তিনটিতেই পালা করা যেতে পারে।
(২১) দু রাকাতের পর বসতে ভুলে গেলে। তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত তৃতীয়
রাকাতের সিজদা করবে না, বরং বসে যাবে এবং শেষভাগে ‘সিজদায়ে সাহু’ আদায় করবে। আর যদি তৃতীয় রাকাতের সিজদা করে নেয় তবে চার রাকাত পূর্ণ করবে, কিন্তু এগুলো দু’রাকাত হিসেবে গণ্য হবে। অবশ্য যদি দু রাকাত পড়ে কাদাহ করতো, তবে চার রাকাত বলে গণ্য হতো। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
(২২) তিন রাকাত পড়ে সালাম ফেরালো। যদি দ্বিতীয় রাকাতে না বসে থাকে, তবে কিছুই হলো না। এগুলোর পরিবর্তে দু রাকাত পুনরায় পড়বে। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
(২৩) সালাম ফেরানোর পর কেউ বলছেন দু রাকাত হয়েছে। আবার আর কেউ বলছে তিন রাকাত হয়েছে।
এমতাবস্থায় ইমামের যা স্মরণ পড়বে, তাই গ্রহণযোগ্য হবে। আর যদি ইমামও সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, তবে তাদের মধ্যে যার কথার উপর নির্ভর করা যায় তার কথা মেনে নিবে। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৭ পৃষ্ঠা)
(২৪) যদি মুসল্লীদের সন্দেহ হয়। বিশ রাকাত হলো? না আঠার রাকাত। তাহলে দুরাকাত পৃথক পৃথকভাবে পড়ে নিবেন। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৭ পৃষ্ঠা)
(২৫) উত্তম হচ্ছে- প্রতি দু’রাকাত সমান হওয়া। এমন না হলেও কোন ক্ষতি নেই। অনুরূপভাবে প্রতি দুরাকাতে প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতের কিরাত সমান হবে। দ্বিতীয় রাকাতের কিরাত প্রথম রাকাত অপেক্ষা বেশী না হওয়া চাই। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৭ পৃষ্ঠা)
(২৬) ইমাম ও মুক্তাদী প্রতি দু রাকাআতের প্রথম রাকাতে সানা পড়বেন। (ইমাম اعوذ بالله এবং بسم الله ও পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতের পর দরূদে ইব্রাহিম আর দোয়াও পড়বেন।)
(২৭) যদি মুক্তাদীদের উপর ভারী অনুভুত হয় তাহলে তাশাহহুদের পর
 اللهم صلي على محمد وعلى اله এর উপর সংক্ষিপ্ত করবেন। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৯ পৃষ্ঠা)
(২৮) যদি ২৭ তারিখ (কিংবা এর পূর্বে) কুরআন পাক খতম হয়ে যায়, তবুও রমযানের শেষ দিন পর্যন্ত তারাবী পড়তে থাকবেন। এটা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা)
(২৯) প্রতি চার রাকাতের পর ততটুকু সময় পর্যন্ত বিশ্রামের জন্য বসা
মুস্তাহাব, যতক্ষণ সময় চার রাকাত পড়তে লেগেছে। এ বিরতিকে ‘তারভীহা’ বলে। (আলমগীরী, ১ম খন্ড, ১১৫ পৃষ্ঠা)
(৩০) তারভীহা এর মধ্যভাগে ইখতিয়ার রয়েছে- চাই নিশ্চুপ বসে থাকুক, কিংবা যিকর, দরূদ ও তিলাওয়াত করুক অথবা একাকী নফল পড়ুক। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৭ পৃষ্ঠা)
নিম্নলিখিত তাসবীহ পড়তে পারে:


(৩১) বিশ রাকাত শেষ হয়ে যাওয়ার পর পঞ্চম তারভীহাতেও (বসা) মুস্তাহাব। যদি লোকজন তা ভারী মনে করেন তবে পঞ্চমবার বসবেন না। (আলমগীরি, ১ম খন্ড, ১১৫ পৃষ্ঠা)
(৩২) কিছু সংখ্যক মুক্ততাদী বসে থাকে। যখন ইমাম রুকুতে যাবার নিকটে হন তখন দাঁড়িয়ে যায়। এটা মুনাফিকদের মতো কাজ। যেমন- আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেন:
কানযুল ঈমান থেকে অনুবাদ: এবং (মুনাফিক) যখন নামাযে দন্ডায়মান হয় তখন দাঁড়ায় অলসভাবে। (পারা-৫, সূরা-নিসা, আয়াত-১৪২)

ফরযের জামাআতেও যদি ইমাম রুকু থেকে উঠে যায়, তবে সিজদা ইত্যাদিতে তাৎক্ষণিকভাবে শরীক হয়ে যাবেন। অনুরূপভাবে, ইমাম যদি কাদায়ে উলা (প্রথম বা মধ্যবর্তী বৈঠক) এ থাকেন তবুও তাঁর দাঁড়ানোর অপেক্ষা করবেন না, বরং শামিল হয়ে যাবেন। যদি কাদায় শামিল হন, কিন্তু ইমাম দাঁড়িয়ে গেলেন, তাহলে ‘আত্তাহিয়্যাত’ পূর্ণ না করে দাঁড়াবেন না। (বাহারে শরীয়াত, ৪র্থ খন্ড, ৩৬ পৃষ্ঠা। গুনীয়াতুল মুতাম্মায়াল্লী, ৪১০ পৃষ্ঠা)
(৩৩) রমযান শরীফে বিতর জামাআত সহকারে পড়া উত্তম। কিন্তু যে ব্যক্তি ইশার ফরয জামা’আত ছাড়া পড়ে সে যেন বিতর ও একাকী পড়ে। (বাহারে শরীয়াত, ৪র্থ খন্ড, ৩৬ পৃষ্ঠা)

(৩৪) এক ইমামের পিছনে ইশার ফরয, দ্বিতীয় ইমামের পিছনে তারাবীহ এবং তৃতীয় ইমামের পিছনে বিতর পড়লে ক্ষতি নেই।
(৩৫) হযরত সায়্যিদুনা ওমর ফারুকে আযম
رضي الله تعالى عنه ফরয ও বিতরের জামাআত পড়াতেন আর হযরত উবাই ইবনে কাব رضي الله تعالى عنه
তারাবীহ পড়াতেন। (আলমগীরি, ১ম খন্ড ১১৬, পৃষ্ঠা) হে আমাদের প্রিয় আল্লাহ্ তাআলা! আমাদেরকে সৎকর্মপরায়ণ,
নিষ্ঠাবান ও বিশুদ্ধভাবে পড়েন এমন হাফেয সাহেবের পিছনে নিষ্ঠা ও দৃঢ়চিত্তে প্রতি বছর তারাবী আদায় করার সৌভাগ্য দান করুন এবং কবূল কর!


Tagged:

Comments

Sign In or Register to comment.
|Donate|Shifakhana|Urdu/Hindi|All Sunni Site|Technology|